বড় একটা অভ্যুত্থানের পর বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এ জন্য বাজেট নিয়ে প্রত্যাশা অনেক বড় ছিল। তবে এটাও বিবেচনায় রাখতে হবে যে একটা ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে বাজেট ঘোষণা করতে হয়েছে।

বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগের পাশাপাশি বড় চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে কর কমেছে। বিশেষ করে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কর কম হবে। পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদে করের পথনকশা ঘোষণা করা হয়েছে। এটা আমরা অনেক দিন ধরেই প্রত্যাশা করছিলাম। এতে ব্যবসায়ীরা নিজেরা প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাবেন। জানতে পারবেন পরের বছর কী পরিমাণ কর দিতে হবে।

নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে এই বরাদ্দ এক হাজার কোটি টাকা হতে পারত। বাংলাদেশের তরুণদের সংখ্যা অনেক। এই তরুণদের কাজে লাগাতে পারলে দেশের চেহারা বদলে যেতে পারে। আবার অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে কর বসানো হয়েছে। এটা উল্টো হলো, একদিকে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করার ঘোষণা দিলাম, অন্যদিকে অনলাইন ব্যবসায়ের ওপর কর বসালাম। যেহেতু তরুণেরা এখন অনলাইন দিয়েই ব্যবসা শুরু করেন, সেহেতু বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

এদিকে কেন্দ্রীয় বন্ডেড ওয়্যারহাউস গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে পোশাকের পাশাপাশি অন্যদেরও সুযোগ হবে। তবে আবার রপ্তানির নানা ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি ও আরোপ করা হয়েছে। এমন দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা দরকার। আমেরিকা যেভাবে কর আরোপ করছে, সে জন্য সরকারের উচিত এখন রপ্তানিকারকদের পাশে দাঁড়ানো। তাহলে তাঁরা সাহস পাবেন এবং ব্যবসা বাড়াবেন।

অগ্রিম কর নিয়ে আপত্তি নেই, তবে সমস্যা হলো বছরের শেষে যা কর হয়, তা সমন্বয় করা হচ্ছে না। এতে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ কর হলেও অনেক সময় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত দিতে হয়। অতিরিক্ত যে কর দেওয়া হয়, তা ফেরত আসে না। এ জন্যই অনেকে কর ফাঁকি দেন।

মূল্যস্ফীতি এখন বেশি, খরচ অনেকে বেড়ে গেছে। মুদ্রা ৩০ শতাংশের মতো মান হারিয়েছে। এই সময়ে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো দরকার ছিল। বাজেট বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজন মানুষের হাতে টাকা দেওয়া, যাতে তাঁরা খরচ করতে পারেন। তাহলে কর আদায়ের হারও বাড়বে। নিশ্চয়ই সরকার মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এই পথে যাচ্ছে না।

কর আহরণে বড় লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য এক লাখ কোটি টাকা বেশি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এই সময়ে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। খুচরা পণ্য বিক্রি ১৫ শতাংশ কমেছে। ফলে করদাতারা যাতে হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

— আবুল কাশেম খান, সাবেক সভাপতি, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।

রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’

‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। 

তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের  ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান। 

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ