বিক্ষোভকারীদের শহর ছাড়ার নির্দেশ পুলিশের, লুটপাটের অভিযোগ
Published: 9th, June 2025 GMT
অভিবাসনবিরোধী তল্লাশির জেরে তৃতীয় দিনেও উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের কেন্দ্রস্থল। এদিন যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের অবিলম্বে শহর থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারা।
বিবিসির লাইভ আপডেটে বলা হয়েছে, রাতভর অস্থিরতা অব্যাহত থাকায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লস অ্যাঞ্জেলেসের শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে বিক্ষোভ চলাকালে ওই এলাকার কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট হয়েছে বলে জানিয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ (এলএপিডি)।
এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এলএপিডি সেন্ট্রাল ডিভিশন লিখেছে, ‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অভিযোগ করছেন যে, ষষ্ঠ স্ট্রিট এবং ব্রডওয়ে এলাকায় দোকান লুট করা হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করতে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।’
বিক্ষোভ দমনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোতায়েন করা ন্যাশনাল গার্ড ইউনিটগুলো বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘লস অ্যাঞ্জেলেসে পরিস্থিতি সত্যিই খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রয়োজনে আরও সেনা মোতায়েন করা হবে।’
যদিও ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ট্রাম্পকে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এটিকে ‘অবৈধ’ কাজ বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকিও দিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লস অ য ঞ জ ল স য ক তর ষ ট র লস অ য ঞ জ ল স
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫