মাস্কের মাদককাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প
Published: 10th, June 2025 GMT
একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে ওঠা মাদক সেবনের অভিযোগ নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব পালনের সময় মাস্ক কি সত্যিই মাদক নিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না। আমার মনে হয় না। আশা করি, না।’
এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘তাঁর (মাস্কের) সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আমি তাঁর মঙ্গল কামনা করি।’ সম্প্রতি তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিলেও, মাস্কের মাদক গ্রহণ-সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে এটিই ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সবচেয়ে স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া।
মাস্কের বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব পালনকালে মাদক সেবনের অভিযোগ তোলে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তারা জানায়, ২০২৪ সালে ট্রাম্পের প্রচারাভিযানে অংশ নেওয়ার সময় কেটামিন, এক্সট্যাসি এবং সাইকেডেলিক মাশরুমের মতো মাদক গ্রহণ করেছেন মাস্ক। সূত্রের বরাতে বলা হয়, গত বছর মাদকের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন তিনি। এমনকি প্রতিদিন একটি মেডিসিন বক্স সঙ্গে নিয়ে যেতেন তিনি। যাতে প্রায় ২০টি ওষুধ থাকত। এর মধ্যে কিছু ছিল অ্যাডেরাল নামক উত্তেজক ওষুধের চিহ্নযুক্ত।
তবে মাস্ক এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, পরিষ্কার করে বলছি, আমি মাদক নিচ্ছি না! নিউইয়র্ক টাইমস পুরোপুরি মিথ্যা বলেছে। তিনি আরও বলেন, আমি কয়েক বছর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কেটামিন ব্যবহার করেছিলাম এবং সেটা আমি এক্সে জানিয়েছি। এটি কোনো নতুন খবর নয়। এটা আমাকে মানসিক অন্ধকার থেকে বের হতে সাহায্য করেছিল, তবে এর পর আমি আর তা নিইনি।
এর আগে মাস্ক নিজেই স্বীকার করেছিলেন তিনি ‘নেগেটিভ ফ্রেম অব মাইন্ড’ থেকে বের হওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে কেটামিন নিয়েছিলেন এবং এই মাদক সেবনের ফলে তাঁর কাজে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় তরুণকে কেন মেঝেতে ফেলে হাতকড়া পরানো হলো
যুক্তরাষ্ট্রের নিওয়ার্ক বিমানবন্দরে এক ভারতীয় তরুণকে মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবি দেখার পর নড়েচড়ে বসেছে নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেট। সেখানকার ভারতীয় কনস্যুলেট জানিয়েছে, এই বিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু যোগাযোগের পর কী জানা গেছে, এখনো তা অজানা।
গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের নিওয়ার্ক বিমানবন্দর থেকে কুনাল জৈন নামের এক অনাবাসী ভারতীয় ওই ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, পুলিশ এক তরুণকে মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরাচ্ছে।
কুনাল বলেন, সম্ভবত ওই তরুণকে নিওয়ার্ক থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। তরুণটির পরনে ছিল কালো পোশাক। তিনি কাঁদছিলেন। কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করছিল, যেন তিনি অপরাধী।
কুনাল জৈন পরপর একাধিক পোস্ট করেন। ভিডিও ও ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘তরুণটি স্বপ্ন ধাওয়া করে এসেছিলেন। কারও ক্ষতি করেননি। এক অনাবাসী হিসেবে নিজেকে অসহায় লাগছিল। আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল। এ এক মানবিক ট্র্যাজেডি।’
ভারতীয় দূতাবাস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগ করে অন্য এক পোস্টে কুনাল লেখেন, ‘অসহায় এই ছেলেটির মা–বাবা জানতেও পারবেন না, তাঁদের ছেলের কী দশা হয়েছে। আমার সঙ্গে একই ফ্লাইটে তাঁর ওঠার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে উড়োজাহাজে তোলা হয়নি। তাঁকে দেখে দিশাহারা মনে হচ্ছিল। নিউ জার্সি কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে কী করেছে, সেই খোঁজখবর করা উচিত।’
ভিডিওতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘পোর্ট অথরিটি পুলিশ’ লেখা জামা ও টুপি পরা অবস্থায় দেখা গেছে। পোর্ট অথরিটি পুলিশ বিভাগ নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে ট্রানজিট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তারা বিমান ও সমুদ্রবন্দর, বাস ও রেল টার্মিনাল, সেতু, টানেল ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা কাজ করে।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাব খুবই কঠোর। বহু দেশের বিরুদ্ধে সরকার ইতিমধ্যে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভারত থেকে অবৈধভাবে সে দেশে যাওয়া কিংবা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও থেকে যাওয়া অভিবাসীদের সে দেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেসব নাগরিককে উড়োজাহাজের অভ্যন্তরেও হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে দেশে প্রতিবাদ হলেও ভারত সরকার কঠোর কোনো মনোভাব গ্রহণ করেনি। সংসদে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সে দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের উল্লেখ করেছিলেন। পরে নারী ও শিশুদের বিমানযাত্রার সময় হাতকড়া না পরিয়ে নিয়ে আসার কথা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছিল।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নতুন করে ট্রাম্প প্রশাসন যে ব্যবস্থা নিয়েছে, মনে করা হচ্ছে, ওই তরুণের প্রত্যাবর্তন তারই অংশ। কিন্তু সেটা যে মানবিকভাবেও করা যায়, কুনাল তাঁর ভিডিওতে সেটাই বলতে চেয়েছেন। এই বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ভারতীয় দূতাবাস নতুন কোনো আলোকপাত করতে পারেনি। তরুণটির পরিচয়ও জানা যায়নি।