চাঁপাইনবাবগঞ্জের আড়তগুলোতে আমের মণ ৪০ কেজির বদলে ধরা হতো ৫৪ কেজিতে। এ নিয়ে ৫ জুন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আলোচনায় সর্বসম্মতিক্রমে কেজি দরে আম কেনাবেচার সিদ্ধান্ত হয়। এর তিন দিন পরই আড়তদাররা কেজিপ্রতি ৩ টাকা কমিশন দাবি করেন। এতে গত সোমবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে পুরো জেলায় আম কেনাবেচা। 

আমের ভরা মৌসুমে আড়তদারদের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। গাছে আম পেকে যাওয়ার পরও অনেকে পাড়ছেন না। যারা বাধ্য হয়ে বাজারে আম নিচ্ছেন, তাদের হয় আগের মতো ৫৪ কেজিতে মণ ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে অথবা কেজিতে দিতে হচ্ছে ৩ টাকা কমিশন। জেলার প্রধান আমবাজার শিবগঞ্জের কানসাট, গোমস্তাপুরের রহনপুর ও ভোলাহাট– সব স্থানেই দেখা গেছে একই চিত্র। দেশের সর্ববৃহৎ আমবাজার কানসাটে গতকাল দেখা যায়, অধিকাংশ আড়ত আম কেনাবেচা বন্ধ রেখেছে। গুটিকয়েক আড়তে কেনাবেচা চললেও কেউ নতুন নিয়ম মানছেন না। 

কানসাট বিশ্বনাথপুর গ্রামের আমচাষি রবিউল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আড়তদাররা কেজিতে তিন টাকা কমিশনের দাবিতে আম কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছেন। এটি অন্যায়। প্রশাসন এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

আরেক আমচাষি জাহাঙ্গীর বলেন, ‘গাছেই পেকে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে একটি আড়তে ১২ টাকা কেজি দরে লক্ষণা আম বিক্রি করেছি। ৩ টাকা কমিশন দিয়ে আমার থেকেছে ৯ টাকা। ভ্যান ভাড়া, শ্রমিকসহ অন্য খরচ ধরলে গাছে আম পচে যাওয়াই ভালো।’

আড়তদারদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম রহনপুর রেলস্টেশন বাজারে সোমবার থেকে আম কেনাবেচা বন্ধ রেখেছেন চাষিরা। গোমস্তাপুর উপজেলা আমচাষি সমিতির সভাপতি মাইনুল বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় প্রশাসন পদক্ষেপ না নিলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাব।
এদিকে কানসাটের আম আড়ৎদাররা অহেতুক ও অযৌক্তিক কমিশন আদায় করার প্রতিবাদে গতকাল কৃষক সমিতি গঠন করেছেন আমচাষিরা। গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির মুন্সি বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’ 

রাজশাহীতে আমের মণে কমেছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা

কোরবানির ঈদে টানা কয়েক দিন বাজার বন্ধ থাকায় বিক্রি করা যায়নি আম। এতে গাছেই পেকে ঝরতে শুরু করেছে হিমসাগর ও লক্ষ্মণভোগ। এ কারণে মঙ্গলবার রাজশাহীর অধিকাংশ চাষি আম নিয়ে ছোটেন বানেশ্বরহাটে। তবে পাইকার কম থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাননি তারা। 

ঈদের আগে যেই হিমসাগরের মণ ছিল ২ হাজার টাকা, মঙ্গলবার তা সর্বোচ্চ ১৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লক্ষ্মণভোগের মণ ছিল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। রাজশাহীর বাজারে নতুন আসা ল্যাংড়া আমের দামও ছিল কম। মণপ্রতি দাম ছিল ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ আম ক ন ব চ আমচ ষ

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মায় জেলের জালে ধরা পড়ল ১১ কেজির কাতল

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীতে ধরা পড়েছে ১১ কেজি ওজনের একটি কাতল মাছ। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে উপজেলার চালা ইউনিয়নের দিয়াপাড় এলাকার মৎস্য শিকারী রাজ্জাকের জালে মাছটি ধরা পড়ে। 

মাছ ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানান, আজ সোমবার ভোরে আন্ধারমানিক আড়তের সুবাশ রাজবংশীর আড়তে মাছটি তোলেন রাজ্জাক। নিলামে মাছটি ১২ হাজার ৬০০ টাকায় কিনে নেন ব্যবসায়ী ইয়েমেল। তিনি মাছটি বলড়া বাজারে নিয়ে যান। সেখানে বলড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের হাসান আলী ১৪ হাজার ৬০০ টাকায় মাছটি কিনে নেন। 

আরো পড়ুন:

জেলের জালে ২ কেজির ইলিশ, ৬ হাজার টাকায় বিক্রি

আরাকান আর্মির ধাওয়ায় নাফ নদীতে ট্রলার ডুবি

আড়তদার হৃদয় রাজবংশী বলেন, ‍“পদ্মা নদী থেকে সোমবার ভোরে কাতল মাছটি ধরেন রাজ্জাক। আজ সকালে আড়তে নিয়ে আসলে বলড়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ী ইয়েমেল মাছটি কিনে নেন।” 

ইয়েমেল বলেন, “আজ সাড়ে ১১ কেজির কাতল মাছটি ১২ হাজার ৬০০ টাকায় কিনে সুলতানপুরের হাসান কাকার কাছে ১৪ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি।”

হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নুরুল ইকরাম বলেন, “মানিকগঞ্জের পদ্মা নদীতে মাঝে মাঝে বড় বড় পাঙাশ, আইড়, কাতল, চিতল ও বোয়াল মাছ  ধরা পড়ে। আজ বড় একটি কাতল মাছ ধরা পড়েছে।” 

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদ্মায় জেলের জালে ধরা পড়ল ১১ কেজির কাতল