ঈদের পঞ্চম দিনে পর্যটকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি খ্যাত এ সৈকতের শুধু জিরো পয়েন্টই নয় গঙ্গামতি, ঝাউবাগান, শুটকি পল্লী ও লেম্বুর বনসহ সকল পর্যটন স্পটেই এখন পর্যটকে ভিড়।

এছাড়া ঐতিহ্যবাহী সীমা বৌদ্ধ বিহার, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার ও রাখাইন পাড়াগুলোতেও রয়েছে পর্যটকদের উচ্ছ্বসিত উপস্থিতি। পর্যটকরা পুরো সৈকত এলাকায় উচ্ছ্বাসে মেতে রয়েছেন। অনেকেই সৈকতের বালিয়াড়ীতে সাঁতার কেটে ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালীতে মেতেছেন। কেউবা প্রিয়জনের হাতে হাত রেখে সৈকতের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত ঘুরে দেখছেন। অনেকে বেঞ্চিতে বসে নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। 

এদিকে পর্যটকদের ভিড়ে বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার শতভাগ হোটেল মোটেল। বিক্রি বেড়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। আগতদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে প্রশাসনের সদস্যরাও।

নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি থেকে আসা পর্যটক সোহাগ হোসেন বলেন, “কুয়াকাটা সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সমুদ্রের ঢেউ বেশ ভালো লেগেছে। তবে এখানকার খাবারের দাম এবং হোটেল ভাড়া অনেক বেশি।”

যশোর থেকে আসা পর্যটক সুমাইয়া ইয়াসমিন বলেন, “এখানের সবকিছুই বেশ ভালো লেগেছে। তবে সৈকতের বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এগুলো প্রতিনিয়ত পরিচ্ছন্ন করা উচিত।”

কুয়াকাটা হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, “আজ কুয়াকাটায় ব্যাপক পর্যটকের সমাগম রয়েছে। আমাদের অধিকাংশ হোটেল বুকিং রয়েছে। তবে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া না রাখার জন্য সকল হোটেল মালিককো বলা হয়েছে।”

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তাপস চন্দ্র রায় বলেন, “আজ এবং গতকাল কুয়াকাটায় ব্যাপক সংখ্যা পর্যটকের আগমন ঘটেছে। আগতদের নিরাপত্তায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।”

ঢাকা/ইমরান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স কত র

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলছে শনিবার, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা