বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্ক চলছে। অন্তর্বর্তী সরকার এত দিন ২০২৫-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুন পর্যন্ত একটি লম্বা সময়ের যেকোনো সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমনটা বলে আসছিল। নির্দিষ্ট করে কোনো তারিখ না দেওয়ার কারণে অনেকের মধ্যে দ্বিধা ও সংশয় ছিলই নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কতটুকু আন্তরিক, তা নিয়ে।

জনপরিসরে এমন কথা আলোচিত হচ্ছিল যে কোনো না কোনোভাবে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটি সম্ভাবনা আছে। শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ঈদের আগের বক্তৃতায় এটি স্পষ্ট করেছেন যে ২০২৬-এর এপ্রিলের প্রথম ভাগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর এই সরকার যখন গঠিত হয়েছিল, তখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তির সমর্থন ছিলই। আওয়ামী লীগ বাদে প্রায় সব রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীর সমর্থনের কারণে গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সহিংসতা কম হয়েছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর অধ্যাপক ইউনূস বারবার বলেছেন যে নির্বাচনের তারিখ নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্তের ওপর।

রাজনৈতিক দলগুলো যখনই চাইবে, তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবেন, এমন কথাও তিনি বেশ কয়েকবারই বলেছেন। বিএনপিসহ প্রায় সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হয় ডিসেম্বর, না হয় শীত মৌসুমে; অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানায়। এর মধ্যে জামায়াত নির্বাচনের সময় নিয়ে বেশ কয়েকবার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে। বিভিন্ন সময় তারা জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানায়।

প্রধান উপদেষ্টা যখন বারবার রাজনৈতিক দলগুলো যখন চাইবে নির্বাচন হবে, এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন ও সংখ্যা বিবেচনায় শীত মৌসুমে নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই যৌক্তিক ছিল।

কিন্তু আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, কোনো কারণ ব্যাখ্যা না করেই এনসিপি ও জামায়াত বাদে সব রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্দিষ্ট করা হলো। বাংলাদেশে এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার অসুবিধা নানা ধরনের এবং তা কোনোভাবেই শুধু রাজনৈতিক নয়, বাংলাদেশের গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও রয়েছে। আমাদের স্বভাবগত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ব্যক্তিগত ও দলীয় ইগো ও তর্কে জেতার অদম্য ইচ্ছাকে সরিয়ে রেখে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা উচিত। 

অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, শীত মৌসুমে নির্বাচন ঘোষণা করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলা। সুসম্পর্ক তৈরি করলে গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে আলোচনা বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতেও অন্তর্বর্তী সরকারের সুবিধা হবে। এই সরকারেরও বেশির ভাগ অভিজ্ঞ অংশীদার ও কমিশনের বিশেষজ্ঞরাও তা-ই চান বলেই জানি।

জনসংখ্যা, আবহাওয়া, নির্বাচনপদ্ধতির দিক থেকে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের মিল রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রচণ্ড গরমে কাজ করতে গিয়ে ৫০০-এর বেশি মানুষ মারা যান। সেদিন দেশটিতে তাপমাত্রা ছিলই ৩০ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুরুতে ২৭০ জনের কথা বলা হলেও কয়েক দিনের মধ্যে এই সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। মৃত্যুর এ সংখ্যা শুধু নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ভোটারদের মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় হাজারো মানুষকে।

আরও পড়ুন নির্বাচন এপ্রিলে কি আসলেই হবে৪ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশে এপ্রিলে তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর যদি হিটওয়েভ থাকে, তাহলে তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ৪০ ডিগ্রি। চিকিৎসকেরা বলছেন, ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ালে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়। বিশেষ করে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি ভয়াবহ।

নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে ও ভোটের দিনে যদি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ হয় এবং জনগণের মৃত্যু হয়, সেই দায়ভার কে নেবেন? প্রধান উপদেষ্টার প্রচার বিভাগের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে আলাপ করে জেনেছেন যে এপ্রিলের প্রথম ভাগে নাকি তাপমাত্রা সহনীয় থাকবে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে অস্থিতিশীল আবহাওয়ার মাস এপ্রিল, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, বজ্রসহ বৃষ্টি, কালবৈশাখীর মতো প্রচণ্ড ঝড় হয় এই মাসে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়টি হয়েছিল ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে। সেই দুর্যোগে দেড় লাখ মানুষ মারা যান। কোনো আবহাওয়াবিদ আগামী বছরের এপ্রিল মাসকে সহনীয় ও নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত মনে করেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ জাগাটাই স্বাভাবিক।

এ ছাড়া এপ্রিলে বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে যায়। ভোটের দিন সাধারণ ছুটি থাকলেও গরমের কারণে সারা দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না। মফস্‌সল ও গ্রামাঞ্চলে দিনে যেমন লোডশেডিং হবে, তেমনি সন্ধ্যার পরও বিদ্যুৎ না থাকার শঙ্কা রয়েছে। এতে ভোট গণনা কার্যক্রম ভেঙে পড়তে পারে। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত চলবে রমজান মাস। এমন ধর্মীয় সময়সূচির মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জোরালো প্রচারণা চালানো মোটেও সম্ভব হবে না। এমনকি ভোটাররাও নির্বাচনের যে উৎসবের আমেজ, সেটাতে যুক্ত হতে পারবেন না।

ঈদুল ফিতরে বেশির ভাগ মানুষই বাড়ি যাবেন। সেখান থেকে কাজে ফিরে আবার অল্প কদিনের মধ্যেই ভোট দিতে বাড়ি ফিরতে হবে। যাঁরা নিম্নবিত্ত, অল্প বেতনের চাকরি করেন, তাঁরা অর্থ খরচ করে আবার গ্রামে ফিরে ভোট দিতে উৎসাহিত হবেন না। ভোটার উপস্থিতিও কমে যাবে।

নির্বাচনের ব্যাকআপ প্ল্যানও রাখতে হয়; অর্থাৎ প্রাকৃতিক কারণে বা অন্য কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে ভোট আয়োজন করা না গেলে, সেটি দ্রুততম সময়ে করার পরিকল্পনা করতে হয়। কিন্তু এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন ভেস্তে গেলে পরবর্তী সময়ে ভালো সময় নেই।

৯ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষা। এরপর ঈদুল আজহা। ১১ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা। এরপর শুরু হবে বর্ষা, বাড়বে বন্যার আশঙ্কা। শুধু তা-ই নয়, খরচের বিষয়ও রয়েছে। একটি নির্বাচন আয়োজন মানে হাজার কোটি টাকা খরচ। প্রচণ্ড হিটওয়েভ, ঘূর্ণিঝড় কিংবা কালবৈশাখীর কারণে নির্বাচন নতুন করে আয়োজন করতে হলে খরচ হবে দুবার। সেই বিলাসিতার সুযোগ নেই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। 

এসব যুক্তির বিপরীতে কেন শীত মৌসুমের বদলে গ্রীষ্মে নির্বাচন করতে হবে, তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে গ্রহণযোগ্য যুক্তির অভাব রয়েছে; বরং ‘৫ বছর চাই’-এর মতো বিরাজনীতিকরণ ও রাজনীতিবিমুখতার প্রচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে চালাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর প্রচার বিভাগ সংস্কার ও বিচারের কথা বলে সময় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

এই যুক্তির অসারতা দুটি। এক, এপ্রিলের সঙ্গে শীত মৌসুমের পার্থক্য মাত্র দুই মাসের। মাত্র দুই মাসে বড় ধরনের কোনো বিচারিক অগ্রগতি এবং সংস্কার করা সম্ভব নয়। দুই, সংস্কার নিয়ে সরকারের কাজ এত দিন পর্যন্ত কেবল ‘রেটরিক’ বা ‘কথায়’ সীমাবদ্ধ রয়েছে। তাই মাত্র কয়েক মাসে বড় ধরনের অগ্রগতি না হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। 

অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, শীত মৌসুমে নির্বাচন ঘোষণা করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলা। সুসম্পর্ক তৈরি করলে গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে আলোচনা বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতেও অন্তর্বর্তী সরকারের সুবিধা হবে। এই সরকারেরও বেশির ভাগ অভিজ্ঞ অংশীদার ও কমিশনের বিশেষজ্ঞরাও তা-ই চান বলেই জানি।

প্রধান উপদেষ্টার উচিত সরকারের মধ্যে ‘নৈরাজ্যপ্রিয়’ অংশকে গুরুত্ব না দিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনা করা। আর এই ঐকমত্যের পথে সফল যাত্রা ও গণতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্য ক্ষমতার পরিবর্তন করতে পারে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, যা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত শীত মৌসুমেই। 

ড.

সাইমুম পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষ সহকারী

* মতামত লেখকের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত সরক র র প রচণ ড সময় ন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচিত সংসদে সংস্কার নয়, সংস্কারের ভিত্তিতেই নতুন সংসদ দরকার

বিগত কয়েক সপ্তাহের জল্পনাকল্পনার শেষে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঈদুল আজহার আগের সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। দীর্ঘ ভাষণে তিনি নানা প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের বহুল কাঙ্ক্ষিত রোডম্যাপের পাশাপাশি তিনি তাঁর সরকারের গত ১০ মাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বন্দর ও করিডর নিয়ে যে অপরাজনীতি ঘটেছে, তার জবাবও তিনি দিয়েছেন।

সংগত কারণেই প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের দিকে সারা দেশের মানুষের নজর ছিল। বিএনপি ও বিএনপিমনা কিছু রাজনৈতিক দল অনেক দিন ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে তারা রোডম্যাপে নিশ্চয়তা প্রত্যাশা করেছে। যদিও ড. ইউনূস বারবার নিশ্চয়তা দিয়েছেন, কোনোভাবেই নির্বাচন আগামী বছরের জুন মাসকে অতিক্রম করবে না, তবু বিএনপির দাবি ছিল ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ’। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে—এই প্রতিশ্রুতি কেন রোডম্যাপ নয়, বিএনপির তরফে অবশ্য তার বিপক্ষে জোরালো যুক্তি মেলেনি।

অবশেষে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে জানালেন, আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুনির্দিষ্ট মাস ঘোষণার পরও অবশ্য বিএনপিকে সন্তুষ্ট করা যায়নি। তারা এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন দাবি করে এসেছে। একটা মাসের ব্যাপারে অনড় থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করার কী অর্থ, তা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি।

যা হোক, এত দিন বিএনপি নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে এলেও প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক নির্বাচনের মাস ঘোষণার পর তারা এখন বলছে, এপ্রিলে নির্বাচনের মাস ঘোষণা নাকি ‘জাতির প্রত্যাশা’ পূরণ করতে পারেনি।

নির্বাচন ডিসেম্বর নাকি এপ্রিলে হবে—এই ডামাডোলে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক রীতিমতো তলিয়ে গেছে। টক শোগুলোতে এত দিন আলোচনা হতো নির্বাচনকে ঘিরে ‘অনিশ্চয়তা’, ‘টানাপোড়েন’, ‘ষড়যন্ত্র’ ইত্যাদি বিষয়ে।

নির্বাচনের মাস ঘোষণার পর টক শোগুলোতে নির্বাচনের মাস হিসেবে এপ্রিলের সঠিকতা-বেঠিকতাই প্রাধান্য পাচ্ছে। অথচ প্রধান উপদেষ্টা যে তাঁর সরকারের গত ১০ মাসের কাজের ফিরিস্তি দিলেন, সে বিষয়ে মিডিয়ায় পিনপতন নীরবতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষত গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশে নেট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এই জরুরি অর্থনৈতিক তথ্যও মূলধারার মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারেনি। অথচ বারবার বলা হচ্ছিল, দেশে ‘অনির্বাচিত’ সরকার থাকলে কোনো বিনিয়োগ আসবে না।

বর্তমান নিবন্ধে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করব। সেটিও নির্বাচনের মাসকেন্দ্রিক অর্থহীন আলোচনার তলে চাপা পড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যের দিক বিবেচনায় বিষয়টি অতিগুরুত্বপূর্ণ।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যের একপর্যায়ে বলেছেন, ‘আমি দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাই, আপনারা সকল রাজনৈতিক দল এবং আপনাদের এলাকার প্রার্থীদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার আদায় করে নেবেন, যেন আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনেই যেসব সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে, তা কোনো প্রকার কাটাছেঁড়া ছাড়াই যেন তাঁরা অনুমোদন করেন।’

প্রধান উপদেষ্টার এ বক্তব্য উদ্বেগজনক। তিনি আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদের হাতে সংস্কার অনুমোদনের গুরুদায়িত্ব সোপর্দ করতে যাচ্ছেন, তাঁর বক্তব্যে এমন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এতে পুরো সংস্কার উদ্যোগই একধরনের অনিশ্চয়তার ঝুঁকিতে পড়েছে।

অন্তত দুটি কারণে আগামী নির্বাচিত সংসদের হাতে সংস্কার বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া যায় না। প্রথম কারণটি ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতাজনিত। দ্বিতীয় কারণটি পদ্ধতিগত। এ ছাড়া যেসব জনগুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে না, সেসব সংস্কারের পরিণতি কী হবে, সেই প্রশ্নও থেকে যায়। ‘যেসব সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে’—কেবল সেগুলোই যদি আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনে ওঠানো হয়, তাহলে ঐকমত্য হয়নি, অথচ জনগুরুত্বপূর্ণ সংস্কার জনগণের মতামত ছাড়াই খরচের খাতায় চলে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনসংস্কার সংস্কার শুনছি শুধু, সংস্কার কোথায়০৩ জুন ২০২৫

জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোট দেয় ঠিকই, কিন্তু জনগণ ও রাজনৈতিক দলের পার্থক্য ভুলে যাওয়া উচিত নয়। ভোট দিয়ে জনগণ প্রতিনিধি পাঠানোর মানে এই নয় যে ‘জনগণ’ ওই সংসদে বিলীন হয়ে গেছে। বরং জনগণ সর্বদাই বিরাজ করে। কারণ, ওই সংসদ যখন স্বৈরাচারী বা একনায়কতান্ত্রিক আচরণ করে, তখন ‘জনগণ’ ধারণার বলেই আবার বিদ্রোহ বা আন্দোলন সংঘটিত হয়। জনগণ সংসদে বিলীন হয়ে গেলে তা আর সম্ভব নয়। দার্শনিক জুডিথ বাটলারের মতে ‘জনগণ’ একটি আইনাতিরিক্ত (এক্সট্রা পার্লামেন্টারি) শক্তি, যাকে ছাড়া আবার সংসদীয় রাজনীতি কল্পনা করা যায় না। কাজেই জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে জনগণের প্রতিনিধিত্বে সংকুচিত করা উচিত হবে না।

ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা বলছে, সংসদের হাতে সংস্কার বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিলে তা মূলত সরকারি দলের সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আশির দশকে সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ভিন্ন ভিন্ন তিনটি রাজনৈতিক জোট রাজপথে একই দিনে একই ঘোষণা পাঠ করেছিল। তারা তিন জোটের রূপরেখা হিসেবে পরিচিত ওই ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ১৯৯১ সালে সরকারে এসে বিএনপি তিন জোটের রূপরেখা বাস্তবায়ন করেনি।

ওই রূপরেখায় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, মিডিয়া ক্যু ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করা হয়। ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ব্যক্ত করা হয় দৃঢ় সংকল্প। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, নব্বই-পরবর্তী নির্বাচনী অভিযাত্রার প্রথম ধাপে তৎকালীন বিএনপি সরকার নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীন নির্বাচনের অঙ্গীকার থেকে সরে আসে।

সরকার এ বছরের জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ প্রণয়ন করতে চায়। সেখানে কী কী সংস্কার হবে, তা লিপিবদ্ধ থাকবে। গণপরিষদ গঠন অথবা গণভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদ ও সম্মত সংবিধান সংস্কারের খসড়া বিল সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সাধারণ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোটের মাধ্যমে জনসম্মতি আদায় করে নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কারবাদী সিভিল সোসাইটির সদস্যদের নাগরিক কোয়ালিশন। এ পদ্ধতিও গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করা উচিত।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দলীয় সরকারের অধীন একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসে। কিন্তু আন্দোলনের চাপে দেড় মাসের কম সময়ের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনে বাধ্য হয় তারা। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনে জেতে আওয়ামী লীগ।

তিন জোটের রূপরেখায় দেশে ‘স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা’ ও ‘প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার’ অঙ্গীকারও করা হয়েছিল। কোনো দল বা গোষ্ঠী কর্তৃক অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের অবসান ঘটিয়ে সাংবিধানিক পন্থায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদল ও হস্তান্তর নিশ্চিত করাও আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল। মৌলিক অধিকারবিরোধী কোনো আইন করা যাবে না, এমন অঙ্গীকারও ছিল। গত প্রায় তিন যুগের অভিজ্ঞতা বলছে, ক্ষমতায় গিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের করা অঙ্গীকার নিজেরাই ভঙ্গ করেছে।

শুধু তা-ই নয়, অন্যের প্রস্তুত করে দেওয়া সুপারিশও কি রাজনৈতিক দলগুলো বাস্তবায়ন করে? প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার (ডিসেম্বর ১৯৯০—মার্চ ১৯৯১) প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে ২৯টি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল। টাস্কফোর্সগুলোর উদ্দেশ্য ছিল অর্থনীতি ও প্রশাসন প্রক্রিয়ার নানা রকম সমস্যার সমাধান করা।

বিগত সামরিক স্বৈরাচার আমলে ঘনীভূত হওয়া সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে দেশের আড়াই শতাধিক সেরা পেশাদার প্রতিভাবান ব্যক্তি ২৯টি টাস্কফোর্সের মাধ্যমে নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব রেখেছিলেন। সাহাবুদ্দীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং টাস্কফোর্স গঠন প্রক্রিয়ার সংগঠক অধ্যাপক রেহমান সোবহান জানাচ্ছেন, ‘টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনগুলো এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল, যেন ১৯৯১ সালের মার্চের নির্বাচনে নির্বাচিত সরকার ও সংসদে বিরোধী দল উভয়কেই পেশ করা যায়। দুঃখজনকভাবে নির্বাচিত বিএনপি সরকার প্রতিবেদনগুলো সামান্যই কাজে লাগিয়েছিল।’

আরও উল্লেখ্য, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় নীতি ও সংস্কারের প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় ১৬০ জন পেশাদার ব্যক্তিকে নিয়ে ১৬টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোকেও তৎকালীন নির্বাচিত সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। (রেহমান সোবহান, ১২ নভেম্বর ২০২৪, প্রথম আলো)

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যেসব সংস্কার সুপারিশ পরবর্তী সংসদের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে, তারা যে সেই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

দ্বিতীয় কারণটি পদ্ধতিগত। এ কথা সবাই মানেন, বর্তমান বাহাত্তরের সংবিধানের একব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতাকাঠামোর মধ্যেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিকতার বীজ নিহিত। সংগত কারণেই সংবিধান সংস্কার কমিশন আনীত সংস্কার সুপারিশগুলোর মূল লক্ষ্য এই স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতাকাঠামোর নির্মূল এবং স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পত্তন। তথা বিদ্যমান সংবিধানকেই চ্যালেঞ্জ করা বর্তমান সংস্কারের প্রধান এজেন্ডা।

বিদ্যমান সংবিধানের অধীন গঠিত সংসদ দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যদের সমর্থনে ঠিক সেই সংশোধনীগুলোই আনতে পারে, যা বিদ্যমান সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। বিদ্যমান সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ‘অসাংবিধানিক’ মনে করে এমন যেকোনো সংশোধনী আদালত বাতিল করে দিতে পারে কিংবা পরবর্তী সংসদ একই ধরনের দুই-তৃতীয়াংশের জোরে বাতিল করার সক্ষমতা ধারণ করে। অর্থাৎ সংসদে আনীত সংশোধনী স্থায়ী ও টেকসই নয়।

সংসদে ততটুকুই সংশোধনী আনা যায়, যতটুকু সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। অন্যদিকে জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা তথা গাঠনিক ক্ষমতার দ্বারা সমর্থিত ও বৈধতাপ্রাপ্ত মৌলিক সংস্কার চাইলেই সংসদ বা বিচার বিভাগ চ্যালেঞ্জ করতে পারেন না। মৌলিক সংস্কারই বরং রাষ্ট্রের উল্লিখিত দুই বিভাগের বৈধতা ও ক্রিয়াশীলতার ভিত্তি হয়।

একদিকে যদি ৭০ অনুচ্ছেদ কার্যকর থাকে, অন্যদিকে সরকারি দলের হাতে যদি দুই-তৃতীয়াংশ আসন থাকে (যা আবার মোট প্রদত্ত ভোটের ৪০-৪৫ শতাংশের বেশি নয়); সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনীগুলো মূলত দলীয় প্রধানের ইচ্ছা-অনিচ্ছাতেই ঘটে। কারণ, ৭০ অনুচ্ছেদ মোতাবেক দলীয় সংসদ সদস্যরা দলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারেন না।

দুই-তৃতীয়াংশ আপনাকে সংবিধানের যেমন খুশি তেমন পরিবর্তনের ক্ষমতা দেয়, ৭০ অনুচ্ছেদ আপনাকে দলের সংসদ সদস্যদের মুখ বন্ধ রাখার ক্ষমতা দেয়। এই দুই ক্ষমতা মিলে এক প্রকাণ্ড সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়। এ কারণে সংবিধান সংশোধনীর ক্ষেত্রে ৭০ অনুচ্ছেদ যেন কার্যকর না হয় তথা দলীয় সংসদ সদস্যরা যেন দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারেন—বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য সব দল ও সুশীল সমাজ এমন মত রেখেছে।

সরকার এ বছরের জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ প্রণয়ন করতে চায়। সেখানে কী কী সংস্কার হবে, তা লিপিবদ্ধ থাকবে। গণপরিষদ গঠন অথবা গণভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদ ও সম্মত সংবিধান সংস্কারের খসড়া বিল সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সাধারণ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোটের মাধ্যমে জনসম্মতি আদায় করে নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কারবাদী সিভিল সোসাইটির সদস্যদের নাগরিক কোয়ালিশন। এ পদ্ধতিও গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করা উচিত।

তিন জোটের রূপরেখার পরিণতি এড়াতে পুনর্লিখিত/সংস্কারকৃত সংবিধানের পরিশিষ্ট হিসেবে এটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিএনপি সংবিধান সংশোধনীর ক্ষেত্রে দলীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যদি তারা সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, তাহলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়ে পরিণত হবে।

একই ভুল বারবার করলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। এক দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ঝুলে থাকতে পারে না। তাই প্রধান উপদেষ্টা বর্ণিত সময়কালের মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে ধরে নিয়ে এর আগেই সংস্কার বাস্তবায়ন করে পরবর্তী সংসদ যেন তা মান্য করার আইনি বাধ্যবাধকতা অনুভব করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আগামী সংসদ সংস্কারের বৈধতা দেবে, তা নয়। বরং সংস্কারই হবে আগামী সংসদের বৈধতার ভিত্তি।

সারোয়ার তুষার যুগ্ম আহ্বায়ক ও কো-অর্ডিনেটর সংস্কার সমন্বয় কমিটি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)

*মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানবে না জনগণ’
  • ডিসেম্বরে নির্বাচন করে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান করা সম্ভব: রুহিন হোসেন
  • ঐক্য-অনৈক্যের বিভ্রান্তিতে লন্ডন বৈঠকের তাৎপর্য
  • আ.লীগকে সমর্থন দেওয়া ব্যক্তি ও দলের বিচার করতে হবে: আখতার হোসেন
  • প্রতিষ্ঠা করতে হবে জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা: আখতার হোসেন
  • চারটি রোডম্যাপ: বিএনপির কাছে জনগণের প্রত্যাশা
  • বরগুনায় ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
  • সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য বিভ্রান্তিকর: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন
  • নির্বাচিত সংসদে সংস্কার নয়, সংস্কারের ভিত্তিতেই নতুন সংসদ দরকার