ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ইরানে নিজেদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। একইসঙ্গে সব অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেখান থেকে সরে আসার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার ইরানের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তেহরানে তাদের দূতাবাসের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে এবং সব অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেখান থেকে সরে আসার নির্দেশ দিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত এখনই ইরান ছাড়লেও, তিনি ওই অঞ্চলে থাকবেন যাতে সংকট পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইরান ছাড়তে আগ্রহী অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের সহযোগিতা করার পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি।
চলমান সংঘর্ষের মধ্যে ইরানে বিদেশি কূটনীতিক ও নাগরিকদের ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে। এর আগেও বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের ইরান ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণবার্ষিকী আজ
বর্ষা ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় ঋতু। বর্ষাতেই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরলোকে যাত্রা করেছিলেন বাঙালি মনন–সৃজনের এই অসাধারণ প্রতিভা। আজ ২২ শ্রাবণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণবার্ষিকী। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর পৈতৃক বাড়িতে তাঁর জীবনাবসান হয়েছিল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখালেখি শুরু করেছিলেন মাত্র আট বছর বয়সে। বিচিত্র তার বিষয়, বিপুল তার পরিমাণ। তাঁর সৃজনপ্রতিভা বাংলা কাব্য, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ, চিঠিপত্র, শিশুসাহিত্যসহ বাংলা সাহিত্যকে স্বর্ণময় উজ্জ্বলতা দান করেছে। গীত রচনা ও সুরস্রষ্টা হিসেবে তিনি নিজেই নিজের তুলনা। চিত্রকলা নতুন মাত্রা লাভ করেছে তাঁর প্রতিভায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষাবিস্তার, সাংগঠনিক কর্ম ও সমাজকল্যাণমূলক কাজেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি কৃষক ও পল্লি উন্নয়নের জন্য চালু করেছিলেন কৃষিঋণব্যবস্থা। নতুন ধরনের শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠান। জালিয়ানওয়ালাবাগে দেশবাসীর ওপর ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সেনাদের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে তিনি ত্যাগ করেছিলেন নাইটহুড খেতাব।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা সুন্দরী দেবী দম্পতির ১৫ সন্তানের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ১৪তম। কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের জোড়াসাঁকোর বাড়িতে তাঁর জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ। ঠাকুর পরিবার তখন ছিল মর্যাদা ও সংস্কৃতিচর্চায় বিশেষ খ্যাতির অধিকারী। সেই পরিবেশ শৈশবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনকে মুক্ত করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে বিশেষত বাংলার পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় নৌকায় ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তিনি নিসর্গ ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন, যার প্রভাব তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে পড়েছে।
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও কবির গান সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছে। তাঁর গান আমাদের জাতীয় সংগীত। সব মিলিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বাঙালির হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছেন।
বিশ্বকবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে রয়েছে ছায়ানটের অনুষ্ঠান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আয়োজনে হবে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে বিকেল চারটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে।