সঞ্জয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে কাঁদলেন কারিশমা, প্রশ্ন তুললেন তসলিমা
Published: 21st, June 2025 GMT
বলিউডের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা কারিশমা কাপুরকে বিয়ে করে শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর আলোচনায় আসতে চেয়েছিলেন। হয়েছিলোও তাই। সঞ্জয় কাপুর মরে গিয়েও অনেক বেশি আলোচনায় ছিলেন কারিশমাকে কেন্দ্র করেই। এদিকে সঞ্জয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে কারিশমার উপস্থিতি, তার কান্না নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘কারিশমা কাপুর কেঁদে বুক ভাসালেন সঞ্জয় কাপুর মারা যাওয়ার পর। সঞ্জয় কাপুরের অন্তেষ্টিক্রিয়ায় সাদা পোশাক পরে গেলেন, সেখানেও কেঁদে বুক ভাসালেন। আগ বাড়িয়ে সৎকারের সবই করলেন তিনি, আর কেঁদে বুক ভাসালেন। কার জন্য কাঁদলেন, যে লোকটা তাকে পেটাতো, অপমান করতো, অ্যাবিউজ করতো! লোকটা বিবাহিত ছিল, তারপরও কারিশমাকে বিয়ে করেছিল। প্রথম স্ত্রী নন্দিতাকে ডিভোর্স দিয়েছিল অবশ্য। কিন্তু নন্দিতার সঙ্গে সুযোগ পেলেই শুতে যেত। বিয়ের পর থেকেই কারিশমাকে নির্যাতন করতো সঞ্জয়। তাকে পেটাতো, অপমান করতো, অ্যাবিউজ করতো! কারিশমা জানিয়েছেন হানিমুনের দিন সঞ্জয় নিলামে উঠিয়েছিল কারিশমাকে। তার এক বন্ধু কিনে নিয়েছিল কারিশমাকে। এমন জঘন্য নারীবিদ্বেষী একটা লোক, যে নিজের স্ত্রীকেও ভোগের বস্তু ছাড়া আর কিছু মনে করে না, তার জন্য কারিশমাকে কাঁদতে হয় কেন? কারিশ্মার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পরই সঞ্জয় আরেকটি বিয়ে করেছে। আরেক মহিলার স্বামীর জন্য কারিশমাকে এত আকুল হয়ে কাঁদতে হয় কেন?’’
তসলিমা নাসরিন আরও লিখেছেন, ‘‘লোকে বলছে, আহা কারিশমা কত ভালো, কত ভালবাসতেন তার স্বামীকে! স্বামী তাকে পেটাতো, অপমান করতো, অ্যাবিউজ করতো, নিলামে ওঠাতো, বেচে দিত, তারপরও কারিশমা কত ভালবাসতেন তাকে! কারিশমার বুক ভেসে যাওয়া কান্না দেখে সবাই মুগ্ধ। তার ত্যাগ দেখে সবাই তৃপ্ত। কত লক্ষ্মী মেয়ে কারিশমা! কত নরম মেয়ে কারিশমা! কত দুর্বল মেয়ে কারিশমা! কত পতিব্রতা মেয়ে কারিশমা! কত প্রাক্তনপতিব্রতা মেয়ে কারিশমা! কেউ কি কারিশমা বলেছে, তোকে যে এত নির্যাতন করেছে, তার জন্য কান্না কেন, চোখের জল মুছে ফেল? না, কেউ বলেনি।’’
আরো পড়ুন:
মৃত্যুর সময় কাউকে পাশে পাননি পাকিস্তানী অভিনেত্রী আয়েশা খান
শুভ বিয়ের প্রস্তাব দিলে কী করবেন মন্দিরা, জানালেন নায়িকা
তসলিমা নাসরিন তার পোস্টে স্পষ্ট করেছেন, কেন তিনি কারিশমার এভাবে কান্না করার বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারছেন না।
তসলিমা নাসরীন তার দীর্ঘ পোস্টের শেষের দিকে আরও লিখেছেন, ‘‘আমি বলছি না, মেয়েদের নিষ্ঠুর হতে হবে, অনুদার হতে হবে। না তা নয়, মেয়েরা উদার হোক, মানবিক হোক, সৎ হোক, সহমর্মী হোক, সহানুভূতিশীল হোক, কিন্তু যেন অযোগ্য লোকদের জন্য, যেন নারী-নির্যাতকদের জন্য মায়া মমতা, প্রেম ভালবাসা, সহানুভূতি সহমর্মিতা ইত্যাদি বর্ষিত না হয়।’’
উল্লেখ্য, ১২ জুন যুক্তরাজ্যে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এই শিল্পপতির মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। ভারতে তার মরদেহ নিয়ে আসার পর শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন কারিশমা। সেখানে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। নায়িকার সঙ্গে ২০১৬ সালে বিচ্ছেদ হয় সঞ্জয়ের। তবে দুই ছেলে–মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তার। কারিশমার দুই সন্তানের জন্য ১৪ কোটি টাকার বন্ড কিনে দিয়েছিলেন সঞ্জয়। কারিশমার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে বিস্তর কাদা ছোড়াছুড়ি হলেও বিচ্ছেদের পর দুইজনের সৌজন্য সম্পর্ক বজায় ছিল বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ক তসল ম ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিদেশে সম্পদের নথি খুঁজতে দুদকের অভিযান, ২৩ বস্তা কাগজপত্র জব্দ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুখমিলা জামানের গাড়িচালকের বাড়ি থেকে ২৩ বস্তা নথিপত্র জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাইফুজ্জামানের বিদেশে সম্পদ অর্জন ও ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে অভিযান চালিয়ে দুদক এসব নথিপত্র জব্দ করে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে আজ রোববার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ফকিরা মসজিদ এলাকার তালুকদারবাড়িতে দুদকের এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও বিদেশে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। এরই অংশ হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক ছয়টি মামলা করেছে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ঘুষ লেনদেন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে গত বুধবারও সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। মামলার সূত্র ধরে বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে উৎপল পাল ও আবদুল আজিজ নামের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে দুদক। তাঁরা পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুখমিলা জামানের গাড়িচালক মো. ইলিয়াস তালুকদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নথিপত্রগুলো জব্দ করা হয়।
অভিযানে থাকা দুদকের কর্মকর্তারা জানান, এর আগে শুক্রবার রাতেও ইলিয়াসের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে অভিযানের আগে তিনি এসব নথিপত্র নিজ ঘর থেকে সরিয়ে পাশের একটি ঘরে রাখেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে বিষয়টি ধরা পড়ার পর আবারও বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে আসা দুদকের একটি দল জব্দ করা কাগজপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করছে। এরপর বিস্তারিত জানা যাবে কাগজপত্র গুলো কিসের।
দুদক ঢাকার উপপরিচালক মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা রুখমিলা জামান চৌধুরীর গাড়ির চালক মো. ইলিয়াস তালুকদারের বাড়ি থেকে ২৩ বস্তা নথিপত্র উদ্ধার করেছি। এগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।’
মশিউর আরও বলেন, ‘আগে আমরা চারটি দেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ি থাকার বিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছিলাম। এখন আরও পাঁচটি দেশে তাঁর বাড়ি থাকার বিষয়ে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো তথ্য জব্দ হওয়া কাগজপত্রগুলোতে রয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখা হবে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারসহ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদক জানায়, সাইফুজ্জামান বিদেশে অর্থ পাচার করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৫০টি বাড়ি কিনেছেন। এর বাইরে অবৈধভাবে দেশেও তিনি সম্পদ অর্জন করেছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাইফুজ্জামান। তিনি ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য দুদক বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতে আবেদন করে। আবেদনটি আজ আদেশের জন্য রেখেছেন আদালত।