জকসু রোডম্যাপসহ তিন দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
Published: 29th, June 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ক্যাফেটেরিয়ার মানোন্নয়ন ও ‘ফুড কার্ড’ কার্যক্রম দ্রুত চালুর দাবিতে তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিগুলো তুলে ধরেন সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আহাদ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা ও শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালের জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি ছিল নিয়মিত ও অংশগ্রহণমূলক ছাত্র সংসদ নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম না থাকায় তারা প্রতিনিধিত্ববিহীন অবস্থায় রয়েছে। এটি প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার উপেক্ষার স্পষ্ট উদাহরণ।’
সংগঠনটি অভিযোগ করে জানায়, ক্যাম্পাসে থাকা একমাত্র ক্যাফেটেরিয়ার পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। সেখানে নেই মানসম্মত খাবার, নেই পর্যাপ্ত পানি ফিল্টার বা বসার জায়গা। দীর্ঘদিন আগে ঘোষিত ‘ফুড কার্ড’ কার্যক্রম এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, বরং তা কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।
এ অবস্থায় ছাত্র অধিকার পরিষদ তাদের তিন দফা দাবিতে জোর দিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; ক্যাফেটেরিয়ার পরিবেশ ও সেবার মানোন্নয়ন করে শিক্ষার্থীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করতে হবে; ‘ফুড কার্ড’ কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন করে শিক্ষার্থীদের স্বল্পমূল্যে মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনটি প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, ‘এই দাবিগুলো শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকারসংক্রান্ত। প্রশাসন যদি অবিলম্বে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরা বৃহত্তর ছাত্রস্বার্থে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রব্বিসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জকস
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: আসক
রংপুরে তারাগঞ্জ উপজেলা এলাকায় ভ্যান চুরির সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, ঘটনাটি প্রচলিত আইন, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের দৃষ্টিতে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও অগ্রহণযোগ্য।
আজ সোমবার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।
৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় ভ্যানচোর সন্দেহে পিটিয়ে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে হত্যা করা আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের আইনগত সুরক্ষা ও জীবন রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এই ঘটনায় গুরুতরভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।
গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনা দেশের নাগরিকের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ ও ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়ে আসক বলেছে, যেকোনো সংঘবদ্ধ প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবিশেষকে দায়মুক্তি না দিয়ে তাদের শনাক্ত করে কঠোরভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। কেননা এ ধরনের নির্মম ঘটনা মানবাধিকারের ভিত্তিকে সরাসরি আঘাত করে।
আসক–এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত অন্তত ১১১ জন নাগরিক ‘মব–সন্ত্রাসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন।