বিজয় সরণিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মারকসংবলিত দেয়াল ভাঙায় বাম জোটের নিন্দা
Published: 30th, June 2025 GMT
রাজধানীর বিজয় সরণি মোড়ে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’–এর ম্যুরাল–সংবলিত সাতটি দেয়াল ভেঙে ফেলার নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। মুক্তিযুদ্ধের স্মারক রক্ষা করে অন্য কোনো স্থানে ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের স্মারক নির্মাণের দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সোমবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান। জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।
বাম জোটের নেতারা বিবৃতিতে বলেন, ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের স্মৃতিস্মারক নির্মাণ করতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া ও রাজধানীতে উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। কিন্তু রাজধানীর বিজয় সরণিতে ‘মৃত্যঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’–এ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে তৈরি ৭টি স্মারক দেয়াল ভেঙে ফেলে ওই স্থানে ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের স্মারক নির্মাণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অন্যতম ভিত্তি। এটা এক দিনে সংঘটিত হয়নি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম থেকে শুরু করে ৫২–এর ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় অসংখ্য সংগ্রামের শেষ পর্বে ১৯৭১–এর মুক্তিযুদ্ধ। জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান ১৯৭১ সালের চেতনারই ধারাবাহিকতা। মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এই ধারাকে অগ্রসর করা যাবে না।’
আরও পড়ুনবিজয় সরণিতে হবে জুলাই শহীদদের ভাস্কর্য২৮ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স ম রক
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।