ফিক্সিং, বিদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্রে ভরা ড্রেসিংরুম: পাকিস্তান ক্রিকেটের অস্থির অধ্যায়
Published: 27th, July 2025 GMT
আকরামের লেখা ‘ডার্টি মানি’ অধ্যায়টির আগের পর্ব পড়ুন এখানেশেষ পর্ব: ওয়াসিম আকরাম যা লিখেছেন
জোহানেসবার্গে পৌঁছালাম ম্যান্ডেলা ট্রফির সেরা-তিন ফাইনাল সিরিজের ঠিক আগে। অস্ত্রোপচারের পর আমি তখনো পুরোপুরি ফিট হইনি। কিন্তু তার চেয়েও বড় চিন্তার বিষয় ছিল, দলটা যেন আবার সেই পুরোনো অবস্থায় ফিরে গেছে। মনে হচ্ছিল, আমি এই দলে একেবারেই বাইরের একজন। একটা সুখী দলের যে বৈশিষ্ট্য, তার কিছুই ছিল না। কোনো আড্ডা নেই, হাসাহাসি নেই। সবাই যেন কারও না কারও ভয়ে আছে, কেউ ঘরে ঢুকলেই কথা থেমে যাচ্ছে।
আমিও শেষমেশ নিঃশব্দে এটাই মেনে নিলাম। হুমা (আকরামের স্ত্রী) তখন পাশে ছিল না, ফলে কারও সঙ্গে মন খুলে কথা বলার সুযোগও ছিল না। ভাবলাম, ঠিক আছে, নিজের মতো থাকব, একা ঘুরে বেড়াব, সময়টাকে উপভোগ করার চেষ্টা করব। তখনকার দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল পার্টির দেশ, রাতজাগা রঙিন জীবনের ঠিকানা। কিন্তু কিছু ঘটনা ছিল, যেগুলো উপেক্ষা করা যাচ্ছিল না।
আগের গ্রীষ্মের অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা জানতাম, দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডেতে স্কোরবোর্ডে রান তুলে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। হ্যান্সি ক্রনিয়েদের দল প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে ভালোবাসত। তারা অসাধারণ ডিফেন্সিভ দল—বল হাতে আঁটসাঁট, ফিল্ডিংয়ে ক্ষিপ্র। তবে লক্ষ্য তাড়া করার মতো ব্যাটিং শক্তি তাদের ছিল না। তার ওপর ওদের মাঝারি মানের ফ্লাডলাইটে বলও বেশ সুইং করত। কিন্তু ওয়ান্ডারার্সে টস জিতে আমরা ব্যাটিং না করে তাড়া করার সিদ্ধান্ত নিলাম—আর সেই সিদ্ধান্ত ছিল একেবারে ভয়ানক। ইজাজ (আহমেদ) আর বাসিত (আলী) ক্যাচ দিয়ে আউট; সেলিম (মালিক), রশিদ লতিফ, আমির সোহেল রানআউট—২২ রানে ৬ উইকেট পড়ে গেল!
আরও পড়ুনকোকেন, কান্না আর হুমার হারিয়ে যাওয়া: ওয়াসিম আকরামের জীবনের অন্ধকার অধ্যায়০৪ মে ২০২৫দ্বিতীয় ফাইনালের আগে নিউল্যান্ডসে দল যখন একত্র হলো, তখন সবাই একে অন্যকে দোষ দিচ্ছিল। ইনতিখাব (পাকিস্তান দলের ম্যানেজার) প্রস্তাব দিলেন, সবাই যেন একটা পবিত্র তাবিজ ছুঁয়ে সততার শপথ নেয়। কিন্তু সেলিম কীভাবে যেন সেই আনুষ্ঠানিকতায় থাকতে পারলেন না, এলেন টসে জেতার পর। এবার ব্যাটিং করার যুক্তি ছিল আরও শক্তিশালী—বৃষ্টি হতে পারে আর বিশ্বকাপের পর দক্ষিণ আফ্রিকা যে বৃষ্টি-ফর্মুলা চালু করেছিল, তা ছিল প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের পক্ষে একতরফা। টস হারার পর ক্রনিয়ের তাই মাথায় হাত দেওয়ার অবস্থা, কিন্তু তারপর সে রীতিমতো চমকে গেল, যখন সেলিম বলল—আমরা আগে ফিল্ডিং করব।
সেলিম মালিকের সঙ্গে ওয়াসিম আকরাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আকর ম
এছাড়াও পড়ুন:
কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।
লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।