প্রেমিক বিয়ে করতে না চাইলে কি তাঁকে ছেড়ে যাবেন?
Published: 28th, July 2025 GMT
মধ্যবয়সী একজন নারী, যাঁর জীবনসঙ্গী নেই, সংসার নেই, সন্তান নেই—এমন একটা জীবন কেউ চায় না। আমার প্রেমিক আমার চেয়ে বয়সে ছোট ছিল। তাই প্রথম কয়েক বছর ওর সঙ্গে বিয়ের প্রসঙ্গে কোনো কথাই তুলিনি। ভেবেছি, ও সময় নিক। নিজে বিয়ে, সন্তান নেওয়া বা সংসার পাতার গুরুত্ব অনুভব করুক।
এভাবে চার বছর পেরিয়ে গেল। আমরা এক ছাদের নিচে থাকতাম। আমি ভালো একটা চাকরি করতাম। ও পেশাজীবনে খুব একটা থিতু ছিল না। চাকরি করত, আবার করত না। ঘরে শুয়েবসে সময় কাটাত। আবার আমার অনেক জোরাজুরিতে নতুন একটা চাকরিতে ঢুকত।
আমি টাকা জমিয়ে প্রতিবছর একটি বা দুটি দেশে ঘুরতে যেতাম। ভালো-মন্দ মিলিয়ে কেটে যাচ্ছিল। সম্পর্কের সাড়ে চার বছর পর প্রথম ওকে একদিন জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কেন আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দাও না?’
এর কিছুদিন আগে আমার মায়ের দ্বিতীয়বারের মতো বিচ্ছেদ হয়েছিল। ও সেই প্রসঙ্গ তুলে বলল, ‘তোমার মায়ের বিচ্ছেদের কথা ভেবে ভয় লাগে। দুবার বিচ্ছেদ হলো। আমরা এভাবেই ভালো আছি। বিয়ে করলে যদি সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়? যদি বিচ্ছেদ হয়ে যায়?’
এটা কোনো কথা! আমি বেশ আহতই হলাম। তবে কিছুই বললাম না। আমি খুব করে মা হতে চাইছিলাম। তবে আমার সন্তানকে আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিলাম একটা সুখী পরিবারে। একা মা (সিঙ্গেল মাদার) হতে চাইনি বা এমন কাউকে আমার সন্তানের বাবা হিসেবে চাইনি, যে সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।
একটা মানুষ সম্পর্কে সবই করবে, যদি সে আদতে সেখানে থাকে, যদি সে সত্যিকার অর্থেই আপনার জন্য সেটি অনুভব করে। না হলে সে আমার বিষাক্ত প্রাক্তন প্রেমিকের মতো নানান অজুহাত দেখাবে। আর ভালোবাসায় ডুবে থাকা আপনার কাছে সেসব ‘যথেষ্ট যৌক্তিক’ বলে ভ্রম হবে!পাঁচ বছরের মাথায় সম্পর্ক প্রায় ভেঙেই ফেলেছিলাম। তবে প্যারিসে ঘুরতে গিয়ে (বলতে দ্বিধা নেই, আমার অর্থে, কেননা এই সম্পর্কটাকে আরেকটা সুযোগ দিতে চাইছিলাম) আবার সেটা জোড়া লেগে গেল। ফিরে এসে ওকে প্রায়ই বিয়ের কথা বলতাম। কেননা ওর বয়স তখন ৩০, আমার ৩৫। ও নানান যুক্তি দেখিয়ে এড়িয়ে যেত। একেক সময় একেক কারণ দেখাত। এককথায়, আমাকে ঝুলিয়ে রাখত।
কখনো সে বলেনি যে বিয়ে করবে না বা সন্তান নেবে না। ‘আজ না কাল, কাল না পরশু, ওখান থেকে ঘুরে এসে, আরেকটা ভালো চাকরি পেয়ে…’—এসবই ছিল টোপ। যার সবই আমি গিলেছি। মানসিক চাপ, হীনম্মন্যতা, আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগেছি। ভেবেছি, গলদটা হয়তো আমারই। তাই নিজেকে আরও বেশি করে সম্পর্কে ঢেলে দিয়েছি।
মনে রাখবেন, একটা সুস্থ, সুষম সম্পর্কে আপনি কখনোই মানসিক চাপ বা হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না। কখনোই আপনার মনে হবে না যে আপনার ভেতরে কোনো কমতি আছে। যদি মনে হয়ও, বুঝবেন, আপনার সঙ্গী ‘ম্যানিপুলেটিভ’। আপনাকে কেবল ব্যবহার করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে চায়।
আরও পড়ুনমাছ ধরার জাহাজের প্রধান বাবুর্চি এখন কনটেন্ট ক্রিয়েটর, তাঁর ভিডিও হয়তো আপনিও দেখেছেন২৬ জুলাই ২০২৫সময়ের সঙ্গে দেখেছি, তার কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেকোনো মূল্যে থিতু হতে চাইছিলাম। সম্পর্কটা ভালোভাবে টেকাতে নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি। নিজের জীবনের সেরা সময়, নিজের আয় করা অর্থ, শ্রম, মনোযোগ, ভালোবাসা, বিশ্বাস—সবকিছু। সম্পর্কের ৭ বছর পর টের পেলাম, সে ২০ বছর বয়সী একটা মেয়ের সঙ্গে লুকিয়ে প্রেম করছে। এরপর আদতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না!
এখন বুঝি যে একটা অসম, অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কে আপনি যতই অপর পক্ষকে মরিয়া হয়ে ভালোবাসবেন, সম্পর্ক জোড়া লাগাতে চাইবেন, অপর পক্ষ সেটিকে ততটাই ‘ফর গ্রান্টেড’ হিসেবে নেবে। অপর পক্ষ থেকে সম্পর্কের বাঁধন ততটাই আলগা হয়ে যাবে। একসময় সম্পর্কটা কেবল আপনার পক্ষ থেকেই থাকবে। কিন্তু ততক্ষণে আপনি ওই সম্পর্কে এতটাই ডুবে গেছেন যে সেটা বুঝতেও পারবেন না।
একটা ভালো সম্পর্কে থাকলে মনে হবে না যে আপনার ভেতরে কোনো কমতি আছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক-রাজ, টেস্টে অদম্য রুট
বিরাট কোহলি আর সূর্যকুমার যাদবের পর ভারতের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠলেন অভিষেক শর্মা। আজ প্রকাশিত আইসিসির সাপ্তাহিক র্যাঙ্কিংয়ে এ স্বীকৃতি পেলেন ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার।
মাত্র এক বছর আগে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। এখন পর্যন্ত শুধুই টি-টোয়েন্টি খেলেছেন অভিষেক। ওয়াংখেড়েতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফেব্রুয়ারিতে ১৩৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন। অবশেষে সে পারফরম্যান্সই এনে দিল র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান।
আরও পড়ুন৫ বল করতে গিয়ে ওয়াইড দিলেন ১২টি, ওভার আর শেষ হলো না৩ ঘণ্টা আগেটি-টোয়েন্টিতে গত বিশ্বকাপের পর থেকে শীর্ষে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড। কিন্তু সাম্প্রতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে না খেলায় এক ধাপ পিছিয়ে দুইয়ে নেমে গেছেন হেড। তাঁর জায়গাটা দখল করেছেন সেই আইপিএলের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ সতীর্থ অভিষেকই।
এর আগে এই সংস্করণে ভারতীয়দের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন কেবল সূর্যকুমার যাদব ও বিরাট কোহলি। ২০১৪ থেকে ২০১৭—টানা কয়েক বছর শীর্ষস্থান ছিল কোহলির দখলে।
টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে আরও কিছু পরিবর্তন এসেছে। ছয় ধাপ এগিয়ে শীর্ষ দশে ঢুকে পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার জশ ইংলিস, অবস্থান এখন নবম। বাংলাদেশের ওপেনার তানজিদ হাসান নেমে গেছেন পাঁচ ধাপ পিছিয়ে ৪৩তম স্থানে, জাকের আলী ছয় ধাপ পিছিয়ে এখন ৫৯তম। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের সেরা খেলোয়াড় ক্যামেরন গ্রিন একলাফে ৬৪ ধাপ এগিয়ে পৌঁছেছেন ২৪ নম্বরে।