বামপন্থিদের চাপে নিজামী-সাঈদী-সাকা চৌধুরীদের ছবি সরালো ঢাবি প্রশাসন
Published: 5th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শাখা ছাত্রশিবির তিন দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) টিএসসিতে ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদ, মীর কাশেম আলী, কামরুজ্জামান চৌধুরী ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ছবি প্রদর্শন করে। তবে বামপন্থি সংগঠনের নেতাকর্মীদের চাপে এসব ছবি সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় ঢাবি প্রশাসন।
জানা গেছে, বিকেলে টিএসসিতে শিবিরের প্রদর্শনীর স্থানে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাবির সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম। পরে বামপন্থিদের চাপের মুখে ছবিগুলো সরিয়ে ফেলে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা।
আরো পড়ুন:
আব্দুল কাদের শিবিরের সাথী ছিলেন, দাবি ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতির
ঐতিহাসিক জুলাইয়ের কারণে আমরা একটি ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী: ঢাবি উপাচার্য
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রশিবিরকে জানিয়ে এবং তাদের সম্মতিতেই ছবি সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাবি শাখা শিবিরের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে শিবির সম্মতিক্রমেই ছবিগুলো সরানো হচ্ছে। কোনো ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি আমরা চাই না।”
এর আগে, ওই চিত্র প্রদর্শনী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয় এবং বামপন্থি নেতাকর্মীরা ব্যাপক আপত্তি জানাতে থাকে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বেশ কিছু নেতাকর্মীও ছবিগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য শিবিরের কাছে অনুরোধ করে।
ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়েছিল, তাদের তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লব’ এর তাৎপর্য তুলে ধরা, শহীদ ও আহত পরিবারের অভিজ্ঞতা সরাসরি শোনা এবং প্রতিরোধ চেতনা পুনর্জাগরণের প্রয়াস থাকবে। পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে গণআলোচনাও হবে কর্মসূচির অন্যতম অনুষঙ্গ।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন মঙ্গলবার ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, বিপ্লবী গান ও কবিতা, শহীদ পরিবার ও আহতদের স্মৃতিচারণ, বিকেলে মাইম পরিবেশনা ও নাটক এবং রাতে ব্যতিক্রমধর্মী ‘প্ল্যানচেট বিতর্ক’ অংশ ছিল দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত। অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ‘৩৬ জুলাই এক্সপ্রেস’ নামক একটি চলমান ট্রেনের আদলে নির্মিত ডকুমেন্টারিতে দেখানো হয় কিভাবে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার হয় সাধারণ মানুষ এবং কিভাবে একেকজন শহীদ হয়ে উঠেন প্রতিরোধের প্রতীক।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর ম ব মপন থ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর
দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সেনাসদরে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।
আরো পড়ুন:
‘নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
তিনি বলেন, “দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আারো স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।”
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান আরো বলেন, “সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে তার মধ্যে নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয় সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।”
তিনি আরো বলেন, “প্রশিক্ষণের সঙ্গে একটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলে থাকি ‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট'।”
গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বাইরে আছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, “নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয় তাহলে আরো কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে।”
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, “এর পাশাপাশি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ১৫ মাস যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী, এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এজন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।”
গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তায় নিয়জিত আছে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এই ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে,” বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ