সাংবাদিক তুহিন হত্যায় জড়িতদের শাস্তি দাবি
Published: 8th, August 2025 GMT
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের গৌরাঙ্গবাজার মোড়ে এই কর্মসূচির আয়োজন করে কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাব।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: প্রত্যক্ষদর্শী সহকর্মীর বর্ণনায় যা উঠে এল
গাজীপুরে প্রকাশ্যে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা
তুহিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, শুধু সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা নয়, গাজীপুরে আরেক সাংবাদিককে নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তুহিন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক মানবজমিনের জেলা প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক নয়াদিগন্তের জেলা প্রতিনিধি মো.
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিউ নেশনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আলম সারোয়ার টিটু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কালের কণ্ঠ ও এটিএন নিউজের শফিক আদনান, প্রথম আলোর তাফসিলুল আজিজ, মাছরাঙা টেলিভিশনের বিজয় রায় খোকা, সংবাদের আবু তাহের, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির শাহজাহান সাজু, ডেসটিনির শামসুল আলম শাহীন, ইনকিলাবের মো. জাহাঙ্গীর শাহ্ বাদশাহ্, কালের নতুন সংবাদের খায়রুল ইসলাম, আজকের পত্রিকার সাজন আহম্মেদ পাপন, আজকের বিজনেস বাংলাদেশের আতা মোহাম্মদ উবায়েদ, আজকের দর্পণের আসাদুজ্জামান খান লিপন, ডিবিসি ও দৈনিক বাংলার রাকিবুল হাসান রোকেল, এখন টিভির মশিউর রহমান কায়েস, দেশ টিভির তোফায়েল আহমেদ তুষার, খবরের কাগজের তাসলিমা আক্তার মিতু, নতুন দিনের মোহাম্মদ আবু সাঈদ, দেশের কণ্ঠের মো. আনোয়ার হোসাইন।
ঢাকা/রুমন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ম নববন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রামের নারীদের মানববন্ধন, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক মাসের বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম প্রায় ‘পুরুষশূন্য’ বলে দাবি করেছেন নারীরা। আজ মঙ্গলবার কড়ইবাড়ি গ্রামের শতাধিক নারী এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষ এলাকাছাড়া। দীর্ঘ সময় তাঁরা এলাকাছাড়া থাকায় তাঁদের সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কড়ইবাড়ি স্ট্যান্ড এলাকায় কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।
গত ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে, ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।
মামলায় ইতিমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আলোচিত তিন খুনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ এখনো গ্রেপ্তার হননি।
আজ দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা জামিলা আক্তার বলেন, তিন খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী ছাড়াও নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কে গত এক মাসের বেশি ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো কড়ইবাড়ি গ্রাম। এ ছাড়া ঘটনাটি নিয়ে একটি পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। যার কারণে গ্রামের পুরুষেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকায় ফিরে আসছেন না।
জায়েদা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি বিনা অপরাধে বাড়িছাড়া। এতে পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা চাই যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদের বিচার হোক। কিন্তু গ্রামের সবাইকে যেন হয়রানি না করা হয়।’
সালমা বেগম বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্রাম পুরুষশূন্য থাকায় চুরি-ডাকাতিরও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রামের সবার মধ্যে। সব মিলিয়ে গ্রামের নারীরা আতঙ্কে আছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিরীহ একজন মানুষকেও হয়রানি করা হয়নি। তাঁরা শুরু থেকেই মামলাটি নিয়ে সতর্ক। গ্রামবাসীর আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের গ্রামে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া প্রসঙ্গে নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করছি না।’