উড়োজাহাজে ব‍্যবহৃত জ্বালানি তেলের (জেট ফুয়েল) দাম আবার বাড়ল। অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতি লিটার ৯৮ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৬২ পয়সা করা হয়েছে। আর আন্তর্জাতিক রুটে ৬৪ মার্কিন সেন্ট থেকে বাড়িয়ে ৬৫ সেন্ট নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

আজ বুধবার বিইআরসি থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন দর ঘোষণা করা হয়। নতুন দর আজ রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হবে। এর আগে গত মাসেও এক দফা বাড়ানো হয় জেট ফুয়েলের দাম।

আগে জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করত বিপিসি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের ধারা বাতিল করে দিয়েছে। এরপর গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফার্নেস অয়েল, জেট এ-১-এর দাম নির্ধারণের এখতিয়ার বিইআরসির ওপর ন্যস্ত করা হয়। প্রজ্ঞাপনের পর গত ২৩ মার্চ প্রথমবারের মতো জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণের গণশুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি। এর পর থেকে প্রতি মাসে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।

বিপিসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেট ফুয়েল বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৫ মেট্রিক টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৩ মেট্রিক টনে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ইআরস

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ

দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এবার ১২ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এ অনুমতির মেয়াদ রয়েছে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এর আগে গত সোমবার পর্যন্ত ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বছর ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার পর্যন্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ ২১টি প্রতিষ্ঠান কোনো ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। ইলিশ রপ্তানি হয়েছে বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। এ দুটি স্থলবন্দর দিয়ে শেষ মুহূর্তে আর ইলিশ রপ্তানি হওয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই।

এনবিআরের হিসাবে, সব মিলিয়ে এবার ইলিশ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা।

এনবিআরের হিসাবে, সব মিলিয়ে এবার ইলিশ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা।সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি প্রথম শুরু হয় ২০১৯–২০ অর্থবছরে। গত সাত বছরে সবচেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ২০২০–২১ অর্থবছরে। ওই সময় ১৭ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। এর আগে সবচেয়ে কম রপ্তানি হয় ২০১৯–২০ অর্থবছরে। সেবার ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবারই সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।

এ বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পাওয়া ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের একটি চট্টগ্রামের কালুরঘাটের প্যাসিফিক সি ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি ৪০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে। তবে সিংহভাগই রপ্তানি করতে পারেনি।

জানতে চাইলে প্যাসিফিক সি ফুডসের পরিচালক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমতে পারে, এমন আশায় ছিলাম আমরা। তবে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমেনি। ফলে মাত্র দেড় হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছি আমরা। তাতেও লোকসান হয়েছে। দাম বেশি থাকায় আর রপ্তানি করছি না।’

আবদুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমারের ইলিশের রপ্তানি মূল্য কম। ফলে ভারতের বাজারে মিয়ানমারের ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে বেশি।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে দেশটি ইলিশ আমদানি করে ভারত। দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পরিমাণে কম দামে ইলিশ আমদানি করে মিয়ানমার থেকে।

যেমন ২৪–২৫ অর্থবছরে (এপ্রিল–মার্চ) দেশটি মিয়ানমার থেকে সাড়ে ছয় লাখ কেজি ইলিশ আমদানি করেছে। গড়ে ভারতের আমদানি মূল্য ছিল ৬ ডলার ২৩ সেন্ট। অন্যদিকে একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেছে ৫ লাখ ৪২ হাজার কেজি ইলিশ। গড় আমদানি মূল্য ছিল ১০ ডলার ৯৩ সেন্ট।

এর আগে সবচেয়ে কম রপ্তানি হয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে। সেবার ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবারই সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যেই ইলিশ গেল

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার সাড়ে ১২ ডলার বা ১ হাজার ৫৩২ টাকা দরে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য বেঁধে দিয়েছে। এর মানে হলো, এর চেয়ে কমে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না। তবে চাইলেই বেশি দামে রপ্তানি করা যাবে।

এনবিআরের তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯–২০ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ন্যূনতম মূল্যে ইলিশ রপ্তানি হয়ে আসছে। ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ইলিশ রপ্তানির নজির খুব কম।

এ বছর রপ্তানি হওয়া ৪৫টি চালানের মধ্যে ৪৪টি চালানের ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য অর্থাৎ সাড়ে ১২ ডলারে। শুধু একটি চালান ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে রপ্তানি হয়েছে। এই চালান রপ্তানি করেছে ভোলার চরফ্যাশনের রাফিদ এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটি ৪২০ কেজি ইলিশ কেজিপ্রতি ১৩ ডলার ৬০ সেন্টে রপ্তানি করেছে।

স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমতে পারে, এমন আশায় ছিলাম আমরা। তবে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমেনি। ফলে মাত্র দেড় হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছি আমরা। তাতেও লোকসান হয়েছে। দাম বেশি থাকায় আর রপ্তানি করছি না।আবদুল মান্নান, পরিচালক, প্যাসিফিক সি ফুডসপ্রতিবারই অনুমতির চেয়ে কম রপ্তানি

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি এবং এনবিআরের রপ্তানির হিসাব তুলনা করে দেখা গেছে, প্রতিবারই যে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়, বাস্তবে রপ্তানি হয় খুব কম। যেমন গত বছর ২৪ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলেও বাস্তবে রপ্তানি হয়েছে ৪ লাখ ৪৪ হাজার কেজি ইলিশ। অর্থাৎ অনুমতির ২৩ শতাংশ ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এবারও এখন পর্যন্ত অনুমতির ১১ শতাংশ ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে ১৪ দিনে ২০ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানি
  • ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৪৮%
  • কংগ্রেসে অর্থ বিল নাকচ, সংকটে ট্রাম্প প্রশাসন
  • দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ
  • বাজারে এখনো কদর ইনস্ট্যান্ট কফির
  • শুল্কছাড়েও দেশি বিনিয়োগ নেই কনটেইনার পরিবহন খাতে
  • বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছে