সোনারগাঁয়ে হত্যা মামলার আসামি জামিনে এসে বাদির বিরুদ্ধে চুরির মামলা
Published: 17th, August 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে স্ত্রীর হত্যার দায়ে প্রধান আসামী মো. কামাল হোসেন জামিনে বেরিয়ে এসে বাদি মো.ইউসুফকে প্রধান আসামী করে দুটি মামলা দায়ের করেন।
নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ও এক্সিকিউটিভ আদালতে পৃথক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি ও আসবাবপত্র লুটের অভিযোগ তুলে এ মামলা দায়ের করা হয়।
এ মামলায় হত্যা মামলার বাদিকে স্বাক্ষীদেরও আসামী করা হয়। স্ত্রী হত্যার দায় এড়ানোর কৌশল হিসেবে এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাদি ও এলাকাবাসী।
এছাড়াও চুরির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাক্ষী না নিয়ে তদন্ত শেষ করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় উপজেলার মহজমপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা গণ স্বাক্ষর নিয়ে শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপারের কাছে শনিবার ১৬ আগস্ট সকালে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাধুরচর গ্রামে পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর গ্রামের মো.
২০২৪ সালের ২রা সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী কামাল হোসেন যৌতুক ও জমি লিখে দেওয়ার জন্য অজ্ঞাতনামা সহযোগিতায় কাঠের ডাসা দিয়ে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
৪ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে আসলে ৬ সেপ্টেম্বর রাতে ফারজানা আক্তার মারা যান। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করে।
পরে ১৭ নভেম্বর ময়না তদন্ত রিপোর্টে ফারজানা আক্তারকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ প্রমাণ পায়। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো.ইউসুফ বাদি হয়ে ফারজানার স্বামী মো.কামাল হোসেনসহ ৪জনকে আসামী করে ২৮ নভেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলা দায়েরের পর পুলিশ নিহতের স্বামী কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ ৫মাস জেল হাজতে থাকার পর চলতি বছরের ২২এপ্রিল জামিনে বের হয়। জামিনে বের হওয়ার পরই হত্যা মামলার বাদি নিহত ফারজানার বড় ভাই মো. ইউসুফকে প্রধান আসামী করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি ও আসবাবপত্র লুটের অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় হত্যা মামলার স্বাক্ষীদেরও আসামী করেন কামাল হোসেন। সেই মামলায় উপজেলার জামপুরের মহজমপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের স্বাক্ষী করা হয়। মামলা তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশকে দায়িত্ব দেয় আদালত।
পরে শিল্প পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম কবিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলের স্বাক্ষীদের কোন প্রকার সাক্ষ্য না নিয়েই তদন্ত শেষ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
হত্যা মামলার বাদি মো. ইউসুফ জানান, যৌতুক ও জমি লিখে না দেওয়ায় তার বোনকে পিটিয়ে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তার ছোট বোনকে হত্যার দায় এড়ানোর জন্য তাকে ও হত্যা মামলার স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া চুরির মামলার স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম কবির বলেন, অভিযোগটি সত্য না। উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
হত্যা মামলার আসামী ও চুরির মামলার বাদি মো. কামাল হোসেন জানান, হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে তিনি চুরির মিথ্যা মামলা দেননি।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ দ য় র কর ন র জন য ইউস ফ ব যবস তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আমীর হোসেন (৫০) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক হুমায়রা তাসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আমীর হোসেন জামালপুর জেলার ইসলামপুরের মহলগিরী এলাকার শাহ জামালের ছেলে। রায় ঘোষণার সময়ে তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানান, রূপগঞ্জের পশ্চিমগাঁও এলাকার মো. আবু তালেবের মেয়ে বিলকিছ বেগমের সঙ্গে আমীর হোসেনের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
২০০৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আমীর হোসেন বিলকিছ বেগমকে তাদের বাড়ির পাশে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় বিলকিছের বাবা আবু তালেব রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত এই রায় দেন।