বাংলাদেশ যাতে মৌলবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত না হয়
Published: 17th, August 2025 GMT
বাংলাদেশ যেন চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হতে না পারে, সেটিই বিএনপির লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব শহীদের রক্তের দায় পরিশোধের সময় এসেছে। এই দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি অবিচল আস্থা প্রকাশের জায়গায় সবাইকে এক থাকতে হবে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। এই সভায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান। ‘গণতন্ত্র উত্তরণে কবি-সাহিত্যিকের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে বিএনপি মিডিয়া সেল।
সভায় উপস্থিত কবি ও সাহিত্যিকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি আপনাদের দৃঢ় অবস্থানের সঙ্গে কিন্তু আমাদের বিন্দুমাত্র পার্থক্য নেই।’
স্বৈরাচারের পুনর্জাগরণ প্রতিহত করতে কবি-সাহিত্যিকদের মতো বিএনপিও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘এই দেশ কোনো চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্যে যেন কোনো দিন পরিণত হতে না পারে, সেটিও কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা। সেটি আমাদের লক্ষ্য। এই দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি আমাদের অবিচল আস্থা প্রকাশের জায়গায় কিন্তু আমরা সকলে এক।’
মানুষের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, বাক্স্বাধীনতা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, দেশে একটি জবাবদিহিমূলক অবস্থা তৈরি করা একান্তই প্রয়োজন।
‘এখনো আগুনের কথা বলেন কেন’মতবিনিময় সভায় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা নুরুল ইসলাম কবি-সাহিত্যিকদের ‘আগ্নেয়গিরির’ সঙ্গে তুলনা করে সারা দেশে ‘লাভা’ ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
নুরুল ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করে পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কেন আপনাদের চিন্তাটা এখন আগুন নিয়ে হবে? আপনারা পুষ্প নিয়ে এখন চিন্তা করতে পারেন না? পাথরের বাগানে পুষ্প ফোটানোর চিন্তা করতে পারেন না?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা এখনো আগুনের কথা বলেন কেন? আগুনের চ্যাপটার (অধ্যায়) তো শেষ ফিফথ অব অগাস্ট। এখন আপনারা বয়ান দিবেন ফুলের সৌরভ, গণতন্ত্রের সৌরভ, মানুষের অধিকারের সৌরভ, যেন আমরা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারি, সেই বয়ান নিয়ে আসবেন।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় একশ্রেণির কলমজীবীর কলম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যে সমস্ত কলমজীবী শেখ হাসিনাকে সার্ভিস দিয়েছে, স্বৈরাচারকে সার্ভিস দিয়েছে, তারা গণহত্যার সময় তাদের কলম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কালি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারা যখন মানুষের ওপরে গুম, হত্যা—এই সমস্ত হয়েছে, তখন তাদের কবিতা আর বের হয়নি। সেই রকম একটি শ্রেণি বাংলাদেশে পয়দা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে আপনারা ওই আগ্নেয়গিরির লার্ভাটা পয়দা করবেন আর জনগণের উদ্দেশ্যে ফুলের সৌরভ দেবেন গণতন্ত্রের জন্য।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনেক কবিকে মূল্যায়ন করা হয়নি, অনেকেরই জীবন হুমকির মুখে ছিল।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে লেখক, কবি ও বুদ্ধিজীবীদের চিন্তার ফারাক আছে বলেও মন্তব্য করেন মোহন রায়হান।
মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্যে কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, যারা পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলে, তারা এ দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শত্রু। তাদের প্রতিহত করতে হবে। দেশের বাইরে যেসব অপশক্তি নির্বাচনকে ব্যাহত করতে চায়, তাদেরও মোকাবিলা করা হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর, আমাদের সময় পত্রিকার সম্পাদক আবু সাঈদ খান, জাতীয় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মতিন বৈরাগী, সহসভাপতি অনামিকা হক ও এ বি এম সোহেল রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল জাকারিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুন্নবী সোহেল প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ত র ক রহম ন গণতন ত র ব এনপ র আম দ র আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে প্রতারণা করেছে: কম. সাঈদ
নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনে শক্তির জানান দিলেন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কমরেড সাঈদ আহমেদ। সদর-বন্দরবাসী কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করে নগরীতে শোডাউনের মাধ্যমে ধানের শীষের প্রচারণা করলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ এই নেতা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে শহরের আমলাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের প্রধান এই নেতা।
মিছিল ও ধানের শীষের প্রচারণা শেষে কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহু দুঃখজনক ও বিতর্কিত ঘটনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার ও দমন পীড়নের অভিযোগ যেভাবে উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর স্মৃতি আজও জাতির মনে গভীর ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে।
১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আমাদের দলের ৪৪ জন নেতাকে হত্যার অভিযোগ, কিংবা ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে আটক করে পরে হত্যার ঘটনাকে ঘিরে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি এসবই ইতিহাসে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে, তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহিন আলীর মৃত্যুকেও অনেকেই রাজনৈতিক নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমরা ইতিহাসের দাবি হিসেবে তুলে ধরি জবাবদিহির প্রয়োজন থেকে, সত্য উন্মোচনের প্রয়োজন থেকে। কারণ যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অতীত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, তবে তা একদিনে শেষ করা যাবে না।
দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেভাবে দমন-পীড়ন হয়েছে অনেকে মনে করেন, তার নজির পৃথিবীর ইতিহাসেই খুব কম রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই আমরা, দেশ ও জনগণের স্বার্থে, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছেন এ অভিযোগ জনগণের মুখেই শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের গাড়ি থামিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ঘটনায় তিনি নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলেও, সেদিন ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
তিন জানান, নারায়ণগঞ্জকে জেলা করা এবং তুলারাম কলেজকে সরকারি করার দাবিতে সেই স্মারকলিপি তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রদান করেছিলেন সেই সময় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিল না।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ যেভাবে প্রতারণার জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও ঠিক সে ভাবেই দেবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, তালবাহানা, কিংবা অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা কোনোটাই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এবং জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে যেভাবে অরজগতা সৃষ্টি করেছিল (১১ ডিসেম্বরে) আমাদের পার্টির ৪৪ জন নেতাকে রাজশাহীতে হত্যা করেছিল রক্ষী বাহিনীর মঞ্জুরের নেতৃত্বে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, ১৯৭৫ সালের (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে ধরে এনে ঢাকা সাভারে নিয়ে শেখ মুজিবের রকিবাহিনী হত্যা করেছিল, আরো হত্যা করেছিল পার্লামেন্টে শাহিন আলিকে শেখ মুজিব নিজ হাতে,
তিনি আরও বলেন, যদি আমরা শেখ হাসিনার ইতিহাস বলতে চাই, বলে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নৃশংস গণহত্যা পৃথিবীর বুকে আর কোন স্বৈরাচার করে নাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে সারা পৃথিবীর বুকে নজির হয়ে থাকবে, আমরা চাই দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের আপোসিন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছে, প্রেসিডেন্টের গাড়ি সে থামিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল, শামীম ওসমান মিথ্যা কথা বলেছে, সেই দিন শামীম ওসমান কোনভাবেই এর সাথে জড়িত ছিল নাভ
ঐদিন আমি নিজে জিয়াউর রহমান কে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জ কে জেলা করার জন্য, তোলারাম কলেজকে সরকারি করার জন্য, সেই সময় শামীম ওসমানের অস্তিত্ব ছিল না, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ঠিক ওইভাবেই তাকে এর জবাব দিয়ে দিয়েছি, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণকে নিয়ে কোন তালবাহানা কোন অগ্নিসংযোগ যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে চায় তাহলে আমরা কোন ছাড় দিব না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল এর) পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মেহেবুব, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড নওশাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কমরেড নুরুলদীন ঢালী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড সুমন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড জাকির শিকদার, আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমরেড গোলজার প্রধান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড শাকিল ও সভাপতি বন্দর থানা ইরফান খন্দকার ।