বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় বৃহত্তর বলয় গড়ে তোলার ডাক দি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দে‌শের ক‌মিউ‌নিস্ট পা‌র্টি (সি‌পিবি)। শ‌নিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে ত্রয়োদশ কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনের কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপন ক‌রে এই ডাক দেন দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

রিপোর্ট তু‌লে ধ‌রে রুহিন হোসেন প্রিন্স ব‌লেন, “শোষণ-বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তে বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের প্রধান কাজ। বাম প্রগতিশীল অবস্থান সুনির্দিষ্ট করে, ব্যবস্থা বদলের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে বিকল্প শক্তি-সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য বাম গণতান্ত্রিক জোটের বাইরে অপরাপর বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে বৃহত্তর শক্তি-সমাবেশ গড়ে তুলতে পার্টি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। মানুষ বামপন্থি বিকল্প শক্তি-সমাবেশের প্রতি যাতে আরো আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারে, সেজন্য আমাদের দৃশ্যমান কার্যক্রম, আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।”

‘সমাজ বদলের লক্ষ্যে শোষণ-বৈষম্যবিরোধী বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা কর’ এই স্লোগানকে ধারণ করে সিপিবির কংগ্রেস গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির রিপোর্টের ওপর আলোচনা ক‌রেন বিভিন্ন জেলার অন্তত ৪৪ জন প্রতিনিধি। আলোচনায় জেলার সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে করণীয় বিষয় তাদের অভিমত তুলে ধরেন। সংযোজন বিয়োজনসহ এই রিপোর্ট অনুমোদন করা হবে।

দ্বিতীয় দি‌নে উপস্থা‌পিত রিপোর্টে বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ৫৪ বছর পেরিয়ে গেছে। এ সময়কালে ১৯৯০ ও ২০২৪-এ অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হলেও দেশের মানুষের মুক্তি আসেনি। গণতন্ত্র ও বৈষম্যমুক্তি মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার বিপরীতমুখী অবস্থানে দেশ চলছে। দীর্ঘদিন ধরে দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি আর মুক্তবাজারের নামে পুঁজিবাদী অর্থনীতির লুটপাটের ধারায় দেশ চলছে। এর মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংকট। এ সংকট উত্তরণে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সংগ্রামের মধ্যে মানুষের দিন পার হলেও মুক্তি আসেনি। 

রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনে সংকট নানাভাবে তীব্র হয়ে উঠছে। মানুষের হতাশা বাড়ছে। শ্রমিক, ক্ষেতমজুর, কৃষক, মেহনতি খেটেখাওয়া মানুষ, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের জীবন চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে। দিন দিন এই সংকট নানা মাত্রায় গভীর হয়ে উঠছে।’

এ‌তে বলা হয়, ‘পুরো ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া মুক্তি সম্ভব না এবং এজন্য প্রয়োজন বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির উত্থান। দেশ ও বিশ্ব পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়ন মানুষকে-মুক্তি দিতে পারে না। সমাজতন্ত্রই মুক্তির পথ। এজন্য গণভিত্তিসম্পন্ন পার্টি গড়ে তোলা, শ্রেণি সংগ্রাম, বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল ঐক্য, শ্রেণি-পেশার মেহনতি মানুষের ঐক্য গড়ে তোলার কর্তব্যকে সামনে রেখে চলমান সংগ্রাম, গণতন্ত্রের সংগ্রামে আমরা শামিল হতে হবে।’

রিপোর্টে বলা হয়, ‘বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এক বহুমাত্রিক এবং জটিল সমীকরণের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েছে। বিশ্ব রাজনীতির ক্ষমতাকেন্দ্রের গতিমুখ এবং ভারকেন্দ্রের পরিবর্তন, বিশ্ব পুঁজিবাদের অন্তর্নিহিত সংকট, পারমানবিক যুদ্ধের হুমকি, চলমান সামরিক সংঘাত, তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সংকট গোটা বিশ্বকে এক বিরাট চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়েছে। পুঁজিবাদী বিশ্বায়নের এ কালপর্বে সারা দুনিয়ায় অনেক আমলযোগ্য ঘটনাবলি দুনিয়ার শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রামের সামনে এসে হাজির হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলন তথা সর্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে’।

প‌রে এ বিষ‌য়ে ব্রিফিং করেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রুহিন হোসেন প্রিন্স, মিহির ঘোষ এবং মিডিয়া উপপরিষদের আহ্বায়ক লাকী আক্তার।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

টিউলিপ বাংলাদেশের করদাতাও ছিলেন

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিকের কেবল বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্টই ছিল না, তিনি এ দেশের একজন নিয়মিত করদাতাও ছিলেন। প্রথম আলোর অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, তিনি অন্তত এক দশক ধরে বাংলাদেশে নিয়মিত আয়কর বিবরণী জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি আয়ের খাত হিসেবে ‘ব্যবসা/পেশার আয়’ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কী ব্যবসা বা পেশা, সেটার উল্লেখ নেই। কেবল একটি অর্থবছরে মাছের ব্যবসার কথা উল্লেখ রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ