টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তিতাস গ্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইনের পাইপ ফেটে যাওয়ার পর তা মেরামতের কাজ চলছে। ফলে কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ প্রায় দুই হাজার আবাসিক গ্রাহক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। রান্না ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। সংযোগ না থাকায় গোড়াই শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১০টি কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। 

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইল তিতাস জোনাল বিক্রয় অফিসের ব্যবস্থাপক মো.

জুয়েল রানা বলেন, “লাইন মেরামতের কাজ চলামান রয়েছে। এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।”

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে মির্জাপুর সদর উপজেলার বাইমহাটি এলাকায় মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছিল। পাইলিং করার সময় খনন যন্ত্রের আঘাত লাগে গ্যাসের পাইপের সঙ্গে। এসময় বিকট আওয়াজ হয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। তিতাস কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাত ৮টার দিকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি লাইন মেরামতের জন্য ঘটনাস্থলে যান তিতাসের লোকজন। রবিবার সকাল পর্যন্ত লাইন মেরামতের কাজ করছিল কর্তৃপক্ষ।

গ্যাস-সংযোগ বন্ধ থাকায় মির্জাপুরের সোহাগপুর থেকে নাটিয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকার প্রায় দুই হাজার আবাসিক গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা মাটি ও সিলিন্ডারের চুলায় রান্না করছেন। এ ছাড়া মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বাইমহাটী পশ্চিমপাড়া এলাকার আফজার হোসেন বলেন, “পাইলিং কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল। তাদের বলা হয়েছিল,  রাস্তার পাশ দিয়ে গ্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইন আছে। তারপরও তারা ভেকু মেশিন দিয়ে লাইনটি লিকেজ করেছেন। তারা খামখেয়ালিপনা করে এমনটি করেছেন। তাদের কারণে সহস্রাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”

কুমুদিনী হাসপাতালের উপ-পরিচালক অনিমেষ ভৌমিক বলেন, ‘গ্যাস না থাকায় কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকলে গ্যাস জেনারেটরের মাধ্যমে হাসপাতালের রোগীদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। গ্যাস সংযোগ বন্ধের পর থেকে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় দুর্ভোগ আরো বাড়ছে।”

তিতাস টাঙ্গাইলের সহকারী প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, ফেটে যাওয়া লোহার পাইপটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। পাইপটি অন্তত ৩০ ফুট মাটির নিচে অবস্থিত। মসজিদের পাইলিং করার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন পাইপটি ফাটিয়ে ফেলেন। ওই স্থানে গ্যাস লাইনের পাইপ রয়েছে বিষয়টি সবাই জানা স্বত্বেও তিতাস অফিসে কাজের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিকভাবে জানানো হয়নি। পাইপ ফেটে যাওয়ার পর আমাদের অন্তত দুই হাজার আবাসিক ও ১০টি কারখানার গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

তিতাস গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকার ব্যবস্থাপক কাউছারুল ইসলাম জানান, পাইপ ফেটে যাওয়াতে ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। 

গণপূর্ত বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল মোবাইলে জানান, মডেল মসজিদ নির্মাণের স্থানে গ্যাসের পাইপ লাইন আছে তা তাদের জানা ছিল না। বিষয়টি ভুল হয়ে গেছে। দ্রুত যাতে পাইপ মেরামত করা যায় এজন্য তিনি তিতাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, তিতাস অফিসের লোকজনের সঙ্গে গত শুক্রবার রাতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তারা ফোন রিসিভ করেননি। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে তিতাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাইন মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ওপেনএআই আনছে পকেট আকারের এআই যন্ত্র

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কোম্পানি ওপেনএআই নতুন এক যন্ত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপলের শীর্ষ সরবরাহকারী লাক্সশেয়ারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনফরমেশনের বরাতে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। যন্ত্রটি এখনো নমুনা পর্যায়ে রয়েছে। পকেট আকারের এ গ্যাজেট ব্যবহারকারীর প্রেক্ষাপট বুঝে কাজ করতে পারবে এবং সরাসরি ওপেনএআইয়ের নিজস্ব এআই মডেলের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। আইফোন ও এয়ারপড তৈরির জন্য পরিচিত লাক্সশেয়ার এ প্রকল্পে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের সুবিধা দেবে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ স্মার্টফোন ও প্রচলিত যন্ত্রের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। ব্যবহারকারীরা এ যন্ত্রের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা পাবেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওপেনএআইয়ের এই পণ্য বাজারে এলে সরাসরি প্রতিযোগিতা তৈরি হবে অ্যাপল, স্যামসাং ও গুগলের মতো শীর্ষ প্রযুক্তি নির্মাতাদের সঙ্গে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে ওপেনএআই চীনা প্রতিষ্ঠান গোরটেকের সঙ্গেও আলোচনা করছে। এয়ারপড, হোমপড ও অ্যাপল ওয়াচ তৈরিতে অভিজ্ঞ এই প্রতিষ্ঠান থেকে স্পিকার মডিউলসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সরবরাহ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদক্ষেপ এআইভিত্তিক কোম্পানিগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি ও সম্ভাবনার মধ্যে একটি। কারণ, এখানে বিদ্যমান প্ল্যাটফর্ম স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের ওপর নির্ভর না করে সম্পূর্ণ নতুন ডিভাইস তৈরির চেষ্টা করছে ওপেনএআই।

এর আগে ওপেনএআই ৬৫০ কোটি ডলারে (৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন) অ্যাপলের সাবেক প্রধান ডিজাইনার জনি আইভ প্রতিষ্ঠিত হার্ডওয়্যার কোম্পানি ‘আইও প্রোডাক্টস’ অধিগ্রহণ করে। এ চুক্তির মাধ্যমে জনি আইভ ও তার সাবেক অ্যাপল ডিজাইন দলকে নিজেদের দলে টেনে নেয় ওপেনএআই। বর্তমানে ওপেনএআইয়ের নতুন যন্ত্রের নকশার নেতৃত্ব দিচ্ছেন জনি আইভ। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নতুন প্রজন্মের কনজ্যুমার ডিভাইস তৈরির কাজে নিয়োজিত আছেন। প্রথম পণ্যটি ২০২৬ সালে বাজারে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান আশাবাদী, প্রতিষ্ঠানটি অন্তত ১০ কোটি (১০০ মিলিয়ন) এআই ডিভাইস বিক্রি করতে পারবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওপেনএআই আনছে পকেট আকারের এআই যন্ত্র
  • মির্জাপুরে গ্যাসের লাইনের পাইপ ফেটে সরবরাহ বন্ধ, ৩৯ ঘণ্টা পরও হয়নি মেরামত
  • ১২টি পাম্পের ৬টি অচল, পানি সরবরাহ কমায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ
  • সাইবার হামলায় ইউরোপের প্রধান বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত
  • সাতক্ষীরায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন, পৌনে দুই ঘণ্টা পর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক
  • সাতক্ষীরায় পাওয়ার গ্রিড লাইনে আগুন, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
  • বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
  • বেনাপোল দিয়ে দুই দিনে ভারতে গেল ৫৬.২৫ মেট্রিকটন ইলিশ
  • যেসব এলাকায় শুক্রবার রাতে ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না