১৯৭৩ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হই। অর্থনীতি বিভাগে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে জানলাম যে সালাহ উদ্দিন আহমেদ নামের একজন তরুণ প্রভাষক আছেন। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ব্যক্তি। তিনি দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষের ক্লাস নিতেন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে অর্থনীতি বিভাগ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতাম, যাতে কোনো শিক্ষকের পাল্লায় না পড়তে হয়। কয়েক মাসের মধ্যে মস্কোয় পাড়ি জমিয়েছিলাম, তাই সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে সরাসরি পরিচয় হয়নি। 

যত দূর মনে পড়ে, আশির দশকের প্রথম দিকে সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের ওয়ারীর বাসায় গিয়েছিলাম। ঘরভর্তি ভারী কাঠের বিরাট বিরাট ফার্নিচার। এ রকম জিনিস তার আগে আর দেখিনি। তিনি জানালেন, ‘বাবা পাকিস্তান আমলে কিছুদিন বার্মায় রাষ্ট্রদূত ছিলেন। বার্মার দায়িত্ব শেষে ঢাকায় ফিরে আসার সময় এসব গাবদা গাবদা ফার্নিচার নিয়ে এসেছিলেন।’

সালাহ উদ্দিন ভাই ১৯৭০ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ঢাকায় ইউএনডিপিতে যোগদান করেন। এরপর সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা কামাল স্যারের (ড.

কামাল হোসেন) চেম্বারে। আমি তখন এক যুগ বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরেছি। কামাল স্যারের নেতৃত্বাধীন ব্লাস্টে কাজ করি। একদিন দেখি, সালাহ উদ্দিন ভাই একটি রুম থেকে বেরোচ্ছেন। ‘তুমি এখানে?’ আমারও পাল্টা প্রশ্ন, ‘আপনি এখানে কী করছেন?’ কারণ, আমি তো তাঁকে জানতাম অর্থনীতিবিদ হিসেবে। অঙ্গুলি ইশারায় তাঁর রুমে আসতে বললেন। রুমে ঢুকেই সিগারেটের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কামাল স্যারের চেম্বার ‘স্ট্রিক্টলি নো স্মোকিং জোন’। শুধু সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের রুম ছাড়া।  

সিগারেটের কেচ্ছা আরেকটু বলি। বছর পাঁচেক আগের কথা, আমি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে একটি সাবজেক্ট পড়াই। একদিন আইন বিভাগের চেয়ারম্যানের রুম থেকে হুংকার ‘রুমে আসো’। বিশ্ববিদ্যালয় বিল্ডিংটিও ‘নো স্মোকিং জোন’। তবে এখানেও সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের রুম ব্যতিক্রম, তাঁর রুমে সিগারেট চলে! পরে জেনেছিলাম আশির দশকের পরের দিকে তিনি ঢাকায় এলএলবি পাস করেন। এরপর ১৯৮৪ সালে নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম ডিগ্রি লাভ করেন। আমার জানামতে, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দুই শিক্ষাপীঠ থেকে দুটি ভিন্ন বিষয়ে (অর্থনীতি ও আইন) উচ্চতর ডিগ্রিধারী একমাত্র ব্যক্তি সালাহ উদ্দিন আহমেদ। 

ফার্স্ট ফরওয়ার্ড, ২০১২ সালের ঘটনা। আগারগাঁওয়ের এডিবি ভবনে ইউএনডিপি অফিসে গিয়েছি। ইউএনডিপিকে টাকার বিনিময়ে আইনি পরামর্শ দিতাম। লিফটে সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা। ফরমান জারি করলেন, ‘১২ তলায় আমার অফিস ঘুরে যেয়ো।’ ইউএনডিপি অফিস থেকে জানলাম, ১২ তলায় কাফকোর অফিস। ১৯ তলায় ইউএনডিপির বড় সাহেবের অফিসে মিটিং করে ১২ তলায় নেমেছিলাম। সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের অফিস ইউএনডিপির বড় সাহেবের অফিস থেকেও বড়। বুঝলাম, তিনি কাফকোর বড় সাহেব। 

চা খেতে খেতে সালাহ উদ্দিন ভাই যা বলেছিলেন, তার সারমর্ম ছিল অনেকটা এ রকম, ‘ওকালতি না করেই অ্যাটর্নি জেনারেল তো বনে গিয়েছিলাম, অতএব এই পেশা থেকে আমার আর পাওয়ার কিছুই নেই।’ একটু স্মৃতিচারণা করে বলেছিলেন, তাঁর বাবার কাছের এক আইনজীবী বন্ধুর সঙ্গে কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের আদালতে দেখা হয়েছিল। সেই চাচা এককালে চট্টগ্রামের সবচেয়ে ডাকসাইটে একজন আইনজীবী; কিন্তু এখন বৃদ্ধ বা অতিবৃদ্ধ। আদালতে আইনজীবীদের হলরুমের এক কোনায় একলা একলা জড়সড় হয়ে বসে ছিলেন। আগের প্রভাব–প্রতিপত্তি, জৌলুশ ও দাপটের একবিন্দুও ছিল না। সালাহ উদ্দিন ভাই বলেছিলেন, আমারও যাতে সেই বৃদ্ধ চাচার অবস্থা না হয়, সে জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ ছাড়ার পর আইন পেশায় আর ফিরে যাননি। 

পাঁচ-ছয় বছর আগের কথা। আমার বাসার চেম্বার থেকে সালাহ উদ্দিন ভাইয়ের বাসা ২০০ থেকে ৩০০ গজ দূরে। একদিন চেম্বারে এসে ঘোষণা দিলেন যে আবার ওকালতি শুরু করবেন। তার জন্য একটি বসার জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবস্থা করে তাঁকে খবর দিতে। পরে দু–তিন দিন তিনি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। যত দূর মনে পড়ে, আবার ওকালতি করার বিরাট সংকল্পের স্থায়িত্ব ছিল সম্ভবত এক সপ্তাহের কম। 

ওয়ারীর বাড়ির পরে বোধ হয় বছর বিশেক আগে তাঁর সেগুনবাগিচার বাড়িতে গিয়েছিলাম। চোখের আন্দাজে বলছি, দেড় বিঘার প্লটের ওপর অর্ধবৃত্তাকার দোতলা বিশাল বাড়ি। সম্ভবত বাড়িটির এক–তৃতীয়াংশ ব্যবহৃত হতো আর দুই-তৃতীয়াংশ থাকত তালাবদ্ধ। পরে এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে থাকাকালে একবার সেগুনবাগিচার সে বাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘কী জানি, ছেলেরা নাকি ওই বাড়িতে একটি কমিউনিটি সেন্টার খুলেছে’—এই ছিল তাঁর উত্তর। 

এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে মাঝেমধে৵ দু-চারটা মামলা নিয়ে আলোচনা হতো। মামলার মূল যুক্তি আর আইন বুঝতে তাঁর দুই-তিন মিনিটের বেশি সময় কখনো লাগত না। 

পদপদবি, অর্থবিত্ত, বাড়ি-গাড়ি কোনো কিছুরই কোনো মোহ ছিল না। কোনো পেশাই তাঁকে বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি। পারেনি, কারণ সম্ভবত অল্প কয়েক বছরেই সে পেশা তাঁর কাছে বিদ্যাবুদ্ধির মাপকাঠিতে আর আকর্ষণীয় মনে হতো না। সালাহ উদ্দিন ভাই ছিলেন নিভৃতচারী। নিজেকে নিয়ে ঘুণাক্ষরেও ঢাকঢোল পেটাননি। এ জন্যই হয়তো এই গুণী মানুষটি অনেকের কাছেই রয়ে গেলেন অজানা। কমবেশি হলেও তাঁর কিছু সান্নিধ্য পেয়েছিলাম—এটি আমার পরম সৌভাগ্য। 

ড. শাহদীন মালিক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ল হ উদ দ ন ভ ই ইউএনড প আইনজ ব র অফ স

এছাড়াও পড়ুন:

গণ–অভ্যুত্থানে বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল না: নাহিদ ইসলাম

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বিদেশি ‘শক্তির’ ইন্ধন থাকার যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা অসত্য বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্র নিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী আমির হোসেন জেরা করেন তাঁকে।

জেরার এক পর্যায়ে নাহিদকে আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ‘দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল বিধায় আপনারা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।’

জবাবে নাহিদ বলেন, এ কথা সত্য নয়।

এরপর নাহিদকে আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ‘৩ আগস্ট (২০২৪ সাল) সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি ছিল আপনাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফলশ্রুতি।’

জবাবে নাহিদ বলেন, এ কথাও সত্য নয়।

তখন আইনজীবী বলেন, জুলাই আন্দোলনের পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির হাত ছিল।

নাহিদের জবাব ছিল আগের মতোই—এ কথাও সত্য নয়।

এ সময় প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, এখানে সরকার পরিবর্তনের বিচার হচ্ছে না। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। সরকার পরিবর্তনের বিষয়টিকে কোনো চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, এর সঙ্গে এটা প্রাসঙ্গিক।

এরপর নাহিদের উদ্দেশে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি। তখন নাহিদ বলেন, এ কথা সত্য নয়।

পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবার বলেন, পালিয়ে নয়, বাধ্য হয়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। তখন নাহিদ বলেন, এটাও সত্য নয়। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন।

যে মামলায় নাহিদকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জেরা করেছেন, সেই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি। এর মধ্যে মামুন দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ষড়যন্ত্রের কিছু নেই

জেরার মাধ্যমে নাহিদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। জেরা শেষে গতকাল দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সে সময় নাহিদকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। কিন্তু পতনের আগে ৪ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সরকারপ্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এ জায়গাটা ধরেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তাহলে ষড়যন্ত্র বা পরিকল্পনা আগে থেকেই হয়েছে কি না?

জবাবে নাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সে সময় জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। ১৬ বছর ধরে ভোটাধিকার হরণ করে, নাগরিক অধিকার হরণ করে তারা ক্ষমতায় ছিল। শান্তিপূর্ণ জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে গুলি চালিয়েছে, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে এক দফা ঘোষণা করা, সরকার উৎখাত করার প্রস্তুতি নেওয়াটা বৈধ। এখানে ষড়যন্ত্রের কিছু নেই। এটা জনগণের পক্ষ থেকে বৈধ ছিল। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছিল, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করে এই সফলতা নিয়ে এসেছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার এ মামলার জবানবন্দিতে নাহিদ বলেছেন, পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে তাঁরা নতুন সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগেই তাঁকে নতুন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নিতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

‘আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা উচিত’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে নাহিদ ইসলাম বলেন, ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনাকে আসামি করে এই মামলা চলমান। তাঁরা মনে করেন, এটা শুধু ব্যক্তিগত সংঘটিত অপরাধ নয়; বরং এটা রাজনৈতিক অপরাধ। ফলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। ট্রাইব্যুনালের সে সুযোগ আছে। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এসেছে।

নাহিদ বলেন, শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান এবং রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে জনগণকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জনগণ প্রতিরোধ করে তাঁকে উৎখাত করেছে। ফলে এটা আওয়ামী লীগের সংঘটিত অপরাধ। আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আনা উচিত।

পরে এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং ১৪–দলীয় জোটের সম্পৃক্ততার অকাট্য প্রমাণ ট্রাইব্যুনালে আসছে। সুতরাং এই সিদ্ধান্ত (দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার) নেওয়ার সুযোগ আছে। প্রসিকিউশন এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এটা নিয়ে প্রসিকিউশন ভাববে।

‘মার্চ টু ঢাকা’

নাহিদ ইসলামের পর এই মামলার ৪৮তম সাক্ষী হিসেবে গতকাল ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময়ে প্রায় ১৩৪ জনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।

গত বছরের ৩০ জুলাই সরকার পক্ষ থেকে ‘শোক দিবস’ ঘোষণা করা হলে আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন—এ বিষয়টি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন আলী আহসান। তিনি বলেন, শোক দিবস পালন কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা চোখেমুখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেন এবং ফেসবুক প্রোফাইল লাল করার আহ্বান জানানো হয়। এই কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়ে এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ফেসবুক প্রোফাইল লাল হয়ে যায়।

জবানবন্দিতে আলী আহসান উল্লেখ করেন, ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি এক দিন এগিয়ে আনার পরামর্শ সমন্বয়ক আসিফ (স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া) ও সাদিক কায়েমকে (এখন ডাকসুর ভিপি) তিনি দিয়েছিলেন। পরে ৪ আগস্ট রাতে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি এক দিন এগিয়ে এনে ৫ আগস্ট করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে যান আবু সাঈদ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ষষ্ঠ সাক্ষী হিসেবে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ জবানবন্দি দেন শিক্ষার্থী মো. সিয়াম আহসান। তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের প্রতিবাদে আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে যান। পুলিশ তাঁকে গুলি করে। আহত আবু সাঈদকে উদ্ধার করে আনতে গিয়ে নিজেও গুলিবিদ্ধ হন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন সিয়াম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউজিল্যান্ডে সন্তানদের হত্যা করে স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় মা দোষী সাব্যস্ত
  • আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার ‘বডি ক্যামেরা’ কিনছে সরকার
  • মা-মেয়ে হত্যার বিচার দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মোমবাতি প্রজ্বালন
  • খুলনায় কারাগার থেকে সেই প্রসূতি ও নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি, জামিন নামঞ্জুর
  • আমিনুলের চিঠি হাইকোর্টে স্থগিত, দেড় ঘণ্টা পর আবার বহাল
  • আইনজীবীর জেরায় জুনায়েদ বললেন, জুলাই আন্দোলনে ষড়যন্ত্রকারী ছিলাম, সত্য নয়
  • গণ–অভ্যুত্থানে বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল না: নাহিদ ইসলাম
  • ৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন, পুরোনো নেতৃত্বেই আস্থা কাউন্সিলরদের
  • ঝালকাঠিতে আইনজীবীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, মিলল চিরকুট