ছবি: এআই/প্রথম আলো

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে দাঁড়াল ওয়ালটন

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি এবং বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে একটি সচেতনতা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় রক্তের যোগান নিশ্চিত করা।

গত ২২ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে ওয়ালটনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল এই কার্যক্রমে সহায়তা করেছে। 

কর্মসূচির প্রধান কার্যক্রমগুলোতে থ্যালাসেমিয়া কী, এর কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে একটি বিশদ আলোচনা সেশন আয়োজন করা হয়।
কর্মিসূচির প্রথম দিনে প্রতিষ্ঠানের এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ আলী আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন- “আজকের এই মহৎ ও মানবিক উদ্যোগে উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদেরও আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযোগিতার কারণেই আজকের এই কর্মসূচি সফল হয়েছে। ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির সভাপতি ড. এম এ মতিন বলেন, “থ্যালাসেমিয়া একটি মারাত্মক বংশগত রোগ, যার সঙ্গে আমাদের দেশের হাজার হাজার পরিবার প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছে। এই রোগের প্রধান চিকিৎসা হলো নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে অনেক সময় প্রয়োজনীয় রক্তের অভাবে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা ভীষণ সংকটে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।”

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতালের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ডা. এ কে এম একরামুল হোসেন স্বপন তার বক্তব্যে বলেন, “এই ধরনের কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম। থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ, যার চিকিৎসায় নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে এই রোগীদের জন্য রক্তের যোগান নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ওয়ালটনের মতো বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের উদ্যোগ সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও এমন জনহিতকর কাজে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করে। এটি কেবল একটি রক্তদান কর্মসূচিই না, বরং একটি সামাজিক দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে।”

“আসুন, আমরা সকলে মিলে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াই। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে এই রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে আরও সোচ্চার হই। আমাদের সামান্য সচেতনতা হাজারো জীবন বাঁচাতে পারে,” বলেন তিনি।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির এনভায়রনমেন্ট হেলথ অ্যান্ড সেইফটি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, “ওয়ালটন সবসময়ই দেশের প্রতি এবং সমাজের প্রতি তার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট। আজকের এই কর্মসূচি শুধু একটি রক্তদান বা সচেতনতা শিবির নয়, এটি আমাদের মানবিক মূল্যবোধের একটি প্রতিফলন। আমরা বিশ্বাস করি, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়, বরং সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মানবিকতার বন্ধনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, ওয়ালটনের কর্মীরা স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে এসেছেন। আপনারা শুধু রক্তদান করেননি, বরং একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য আশার আলো জ্বালিয়েছেন। আপনাদের এই মহৎ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। ওয়ালটনের এই ধরনের মানবিক উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।”

এরপর ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সের বিভিন্ন এলাকায় দুই দিনব্যাপী স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রম চলমান থাকে। এই ধরনের কর্মসূচি ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখতে ওয়ালটন এবং বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতাল উভয়ই তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। 

কর্মসূচির সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন এনভায়রনমেন্ট হেলথ এন্ড সেইফটি (ইএইচএস) বিভাগ।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ