চট্টগ্রামের হালিশহরে নিজ বাড়ির সামনে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
Published: 8th, November 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে ছুরিকাঘাতে মো. আকবর (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হালিশহরের মাইজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আকবর ওই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। সেখানকার একটি স্ক্র্যাপের দোকানে কাজ করতেন তিনি।
আকবরের স্বজনদের বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম বলেন, দৃর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই আকবরের মৃত্যু হয়েছে। রাত ১১টার দিকে তাঁকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতে বোন সায়মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়ির সামনে দুপক্ষের মধ্যে মারামরি চলছিল। তখন আমার ভাই বাড়ির ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ আমার ভাইকে ছুরিকাঘাত করা হয়। কয়েকজনকে আমরা চিনি। তাঁরা হালিশহর বি ব্লক এলাকার লোকজন।’
বক্তব্য জানতে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেনের মুঠোফোনে কয়েক দফায় চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
থানা থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশের একজন কর্মকর্তা গিয়েছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ওই জায়গায় নিহতের পরিবার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। ভুক্তভোগী সেখানে এমনিই দাঁড়িয়ে ছিলেন নাকি তিনি বিবদমান কোনো পক্ষের—সেটা স্পষ্ট নয়। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ল শহর
এছাড়াও পড়ুন:
এক সময় ছিলেন এক গুরুর শিষ্য, দ্বন্দ্বে জড়িয়ে খুন দুজনই
বিদেশে বসে চট্টগ্রামের অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করেন সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ। চাঁদাবাজি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে তাঁর ডানহাত হিসেবে কাজ করতেন ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন বাবলা ও আকবর আলী ওরফে ঢাইকাইয়া আকবর। ১০ বছর আগে সাজ্জাদের দল থেকে বেরিয়ে নিজেরাই পৃথক দল গড়ে তুলেছিলেন তাঁরা। প্রায় ছয় মাসের ব্যবধানে দুজনই খুন হলেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠায় নিজের এক সময়কার দুই শিষ্যকে সরিয়ে দিয়েছেন সাজ্জাদ আলী।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নগরের পাঁচলাইশ চালিতাতলী এলাকায় বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগের সময় ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন বাবলার ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর আগে ২৩ মে আরেক শিষ্য আকবর আলী ওরফে ঢাকাইয়া আকবরকেও গুলিতে খুন হন।
পুলিশ জানায়, চাঁদা না পেলেই গুলি ছোড়েন সাজ্জাদের অনুসারীরা। নগরের চান্দগাঁও, বায়েজিদ বোস্তামী ও পাঁচলাইশ এবং জেলার হাটহাজারী, রাউজানসহ পাঁচ থানার পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে সাজ্জাদের বাহিনীর কারণে আতঙ্কে থাকতে হয়। ৫ আগস্টের পর থেকে নগর এ জেলায় জোড়া খুনসহ ১০টি খুনে সাজ্জাদের অনুসারীদের নাম উঠে এসেছে। তাঁরা কখনো আধিপত্য বজায় রাখতে নিজেদের প্রতিপক্ষকে খুন করছেন, আবার কখনো ভাড়াটে খুনি হিসেবেও ব্যবহার হয়েছেন। তবে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যেভাবে উত্থান বড় সাজ্জাদের
নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার আবদুল গণি কন্ট্রাক্টরের ছেলে সাজ্জাদ আলী। ১৯৯৯ সালের ২ জুন পাঁচলাইশ ওয়ার্ড তৎকালীন কাউন্সিলর লিয়াকত আলী খান বাড়ির সামনে খুন হন। লিয়াকত হত্যায় সাজ্জাদ জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ থাকলেও কেউ আদালতে সাক্ষ্য না দেওয়ায় ওই হত্যা মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়ে যান। লিয়াকত হত্যার পর অপরাধজগতে সাজ্জাদের নাম ছড়িয়ে পড়ে।
২০০০ সালের ১২ জুলাই। মাইক্রোবাসে করে একটি দলীয় সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মী। পথে বহদ্দারহাটে ওই মাইক্রোবাস থামিয়ে ব্রাশফায়ার করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাস্থলেই ওই ছয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ আটজন মারা যারা যান। ‘এইট মার্ডার’ নামে পরিচিত আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডে সাজ্জাদ নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০০০ সালের ১ অক্টোবর একে-৪৭ রাইফেলসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বড় সাজ্জাদ। ২০০৪ সালে জামিনে বেরিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান।
বড় সাজ্জাদের সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ