আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন—এমন প্রশ্নে দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে ছয়টি বিভাগের উত্তরদাতারা বিএনপিকে এগিয়ে রেখেছেন। জামায়াত এগিয়ে রয়েছে রংপুর বিভাগে। আর বরিশাল বিভাগে এগিয়ে রয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ।

আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে ‘জনগণের নির্বাচন–ভাবনা’ শীর্ষক জরিপের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। জরিপটি পরিচালনা করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভিশন কনসাল্টিং। সহযোগিতা করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্ম ও বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (বিআরএআইএন)। জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াৎ সারওয়ার।

জরিপে অংশ নেওয়া ১০ হাজার ৪১৩ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৭২১ জন ভোটে নিজেদের পছন্দের দলের কথা জানিয়েছেন। জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে এগিয়ে রয়েছে বিএনপি। এসব বিভাগে বিএনপিকে সমর্থন করেছেন যথাক্রমে ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ, ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ, ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার।

অন্যদিকে ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতার সমর্থন নিয়ে রংপুর বিভাগে এগিয়ে আছে জামায়াতে ইসলামী। আর ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতার সমর্থনে বরিশাল বিভাগে এগিয়ে রয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ।

জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভোটারের ক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির পক্ষে সমর্থন বেড়েছে, উল্টো ঘটেছে জামায়াতের ক্ষেত্রে। আর শিক্ষা বাড়ার সঙ্গে ভোটাররা মত দিয়েছেন জামায়াতের পক্ষে, উল্টো ঘটেছে বিএনপির বেলায়। জেন-জি ও নারীদের মধ্যে জামায়াতের সমর্থন বেশি।

জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, আগামী সরকার গঠনের জন্য সবচেয়ে যোগ্য দল বিএনপি। জামায়াতকে যোগ্য মনে করেন ২৮ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা। ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা যোগ্য দল মনে করেন আওয়ামী লীগকে। আর এনসিপিকে যোগ্য মনে করেন ৪ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতা।

স্থানীয় পর্যায়ে জামায়াতের কার্যক্রমে সন্তুষ্টি

জরিপে স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় রাজনীতি নিয়ে সন্তুষ্টির বিষয়ে ভোটারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। এতে এগিয়ে জামায়াত। জামায়াতের কার্যক্রমে শতভাগ, অনেক ও মোটামুটি সন্তুষ্ট ৪৭ দশমিক ৪ শতাংশ। আর দলটির কার্যক্রমে একেবারেই সন্তুষ্ট নন ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা। এরপরই রয়েছে এনসিপি। এনসিপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা। আর একেবারেই সন্তুষ্ট নন ১৭ শতাংশ।

অন্যদিকে বিএনপির কার্যক্রমে শতভাগ, অনেক ও মোটামুটি সন্তুষ্ট ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা। আর দলটির কার্যক্রমে একেবারেই সন্তুষ্ট নন ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা। কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও উত্তরদাতারা সবচেয়ে বেশি অসন্তুষ্ট আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমে। দলটির কার্যক্রমে একেবারেই সন্তুষ্ট নন ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা। তবে দলটির কার্যক্রমে শতভাগ, অনেক ও মোটামুটি সন্তুষ্ট ২৬ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা।

নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

জরিপে ভোটারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁরা যদি ভোট না দেন, তাহলে কেন দেবেন না। উত্তরে সবচেয়ে বেশি ৩২ দশমিক ৬৫ শতাংশ উত্তরদাতা নিরাপত্তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আস্থার অভাবের কথা বলেছেন ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ উত্তরদাতা। আর পছন্দের দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলেছেন ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ উত্তরদাতা।

আরও পড়ুন‘জনগণের নির্বাচন–ভাবনা’ জরিপ: কোন দলের প্রতি কত সমর্থন২ ঘণ্টা আগে

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক

জরিপে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক হবে, সে প্রশ্নের উত্তরে অধিকাংশ উত্তরদাতাই দুই দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চেয়েছেন। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চান ৭২ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা। আর পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক চান ৬৯ শতাংশ উত্তরদাতা।

জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ এম শাহান, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর, বিআরএআইএনের নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাইমা ইসলাম।

আরও পড়ুনপিআর সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬ শতাংশের২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশের মাটিতে হামলা দেশকে কলঙ্কিত করছে: সেলিমা

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, “বিদেশের মাটিতে প্রধান উপদেষ্টার সফর সঙ্গীদের ওপর যারা চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে তারা দেশকে কলঙ্কিত করছে।”

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন:

নির্দিষ্ট সময়ে ভোট হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

এ্যানিকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি, ধৃষ্টতা বলছে যুবদল-ছাত্রদল

তিনি বলেন, “সংবিধান সংরক্ষণের জন্য লড়াই চলছে। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পরেও তা বানচাল করার অপচেষ্টা করছে ৭১ এর পরাজিতরা। তারা অতীত আদর্শ ভুলতে পারছে না, তাই নির্বাচন বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি তা হতে দেবে না। দেশে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পরও বিএনপি এখনও দেশের মানুষদের ভোটাধিকারের জন্য, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে।”

সেলিমা রহমান বলেন, “পিআর সিস্টেম কি আমিই বুঝি না, দেশের জনগণ কীভাবে বুঝবে? পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের জনগণের ভোটাধিকার নষ্ট হবে।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে কেউ আটকাতে পারবে না
  • জনগণের নির্বাচন–ভাবনা জরিপ: কোন দলের প্রতি কত সমর্থন
  • পিআর পদ্ধতি নিয়ে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব জাকসু ভিপি জিতুর
  • বাংলাদেশের জন্য পিআর পদ্ধতির নির্বাচন কতটা যৌক্তিক
  • জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহারের নির্দেশ দেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর
  • গালির জবাবে দোয়া হবে আমাদের কর্মসূচি: জামায়াত আমির
  • বিদেশের মাটিতে হামলা দেশকে কলঙ্কিত করছে: সেলিমা
  • বিএনপির উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি অর্থনৈতিক পরিবেশ অর্জনে সহায়ক
  • সবার আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা