জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আগামীতে আমাদের একজনও যদি এমপি নির্বাচিত হন, তাঁদের কেউ সরকারি প্লট নেবেন না ও বিনা ট্যাক্সের গাড়িতে চলবেন না। জনগণের ওপর ট্যাক্স বসানোর জন্য আমাদের ভোট দেবেন না। জনগণের পাহারাদারি করার জন্য আমাদের ভোট দেবেন। না হলে আমাদের ভোট দেবেন না।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট নগরের একটি কনভেনশন হলে মহানগর জামায়াত আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানগরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সিলেট মহানগরের নায়েবে আমির নূরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সিলেট-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট-১ আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাবিবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট-১ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল হাই হারুন।

সুধী সমাবেশে শফিকুর রহমান বলেন, ‘যদি কোনো কারণে আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের বিরোধী দলে বসতে হয়, আমরা তাদের (সরকারি দল) আশ্বস্ত করছি, প্রতিটি মানবিক ও ভালো কাজে আমরা অবশ্যই তাদের কর্মী হয়ে কাজ করব। তারা সরকারে যাওয়ার পর আবার যদি পুরোনো কায়দায় ওলট-পালট কিছু করে, প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে বলব, এগুলো ছেড়ে দেন। যদি তারা সংশোধন হয়ে যান, অভিনন্দন জানাব। যদি না করেন, তবে আগেও যেমন জীবন বাজি রেখে আন্দোলন–সংগ্রাম আমরা করেছি, আগামীতেও ছাড় দেব না।’

ভবিষ্যতে নির্বাচিত হলে দুর্নীতি দূর করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশ আমরা পাল্টে দিতে চাই। এ জন্য জনগণের কথা—এবার আমরা পরিবর্তন চাই। সে পরিবর্তনটা কী হবে তাহলে? একটি জ্যান্ত মাছ কড়াইয়ের মধ্যে ভাজা হচ্ছে, বাঁচার জন্য লাফ দিল, পড়ে গেল চুলার মধ্যে। সে পরিবর্তন কি আমরা চাই? না, নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা চাই। এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামী ওয়াদাবদ্ধ জাতির কাছে। আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আমরা আমাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাব। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। সামাজিক ন্যায়বিচার যদি কায়েম হয়, তাহলে দুর্নীতির জট কেটে যাবে। দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতি করার সাহস করবে না, লুটেরা আর লুটতোরাজ করবে না। ব্যাংক লুটপাট করবে না। সেই রকম সমাজ আমরা বিল্ডআপ করতে চাই।’

বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে পুনর্বিন্যাস করতে চান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘সব জায়গায় ইঁদুর বসে আছে সমাজের রশি কেটে দেওয়ার জন্য। এই ইঁদুরগুলোকে তাড়াতে হবে। না হলে তারা আমাদের খেতের সব ফসল নষ্ট করবে। যেভাবে অতীতে করেছে। এটা কি একা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্ব? এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র আম দ র র জন য সদস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতে দেওয়া হবে না: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা একমত। সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট হতে দেওয়া হবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা জনগণ মেনে নেবে না। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি ফ্যাসিস্টের হাত থেকে। একটা সুযোগ পেয়েছি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার। কোনো মহলের চক্রান্তে আমরা এই সুযোগ বিনষ্ট হতে দিতে পারি না।’

রাজনৈতিক দলগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অনেক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছি। আমরা এখনো কোনো বিষয়ে রাস্তায় নামিনি। আপনারা মনে রাখবেন, বিএনপি কোনো ভেসে আসা দল নয়। বিএনপি এ দেশের জনগণের গড়া একটি দল।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাতে চাই, দয়া করে পানি ঘোলা করবেন না। আপনারা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবেন না। দয়া করে দেশের মানুষকে অশান্তিতে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন না। আমরা বহু সংগ্রাম করেছি, বহু লড়াই করেছি। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ২০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। আপনারা নতুন করে শুরু করছেন। আপনারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন। সেটা এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।’

অবিলম্বে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আর টালবাহানা না করে অবিলম্বে নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার ব্যবস্থা করুন এবং অক্টোবরে সংস্কারের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যান। অন্যথায় আপনারা ব্যর্থ সরকারে পরিণত হবেন। এর সব দায়ভার আপনাদের বহন করতে হবে।’

ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা এখন বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাহলে আপনারা এত দিন কী করলেন। আপনারা কাজটা ঠিক করেননি। আমরা সব সময়ই কমিশনে গিয়েছি, মতামত দিয়েছি।’

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক। সভায় যশোরের পাঁচটি আসনে বিএনপির প্রার্থীরা বক্তব্য দেন। তাঁরা হলেন মফিকুল হাসান, সাবিরা সুলতানা, অনিন্দ্য ইসলাম, টি এস আইয়ুব, কাজী রওনকুল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যশোরের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে তাঁদের পক্ষে নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঐকমত্য না হলে দেশে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হবে
  • চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাজনীতি করতে চাই: নাসীরুদ্দীন
  • ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনে অবিস্মরণীয় দিন: ফখরুল
  • সংবিধান সংস্কার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে হওয়া উচিত: ড. কামাল হোসেন
  • উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট  হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল
  • সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতে দেওয়া হবে না: ফখরুল
  • এনসিপির প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
  • প্রয়োজনে প্রথম আলোর সম্পাদককে মনোনয়ন দেবে এনসিপি: নাসীরুদ্দীন
  • নির্বাচন দেরি হলে বিভিন্ন ধরনের আশঙ্কা–বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা আছে: জামায়াতের আমির