দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য বছরের সেরা ব্যবসায় উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের সম্মাননা পেল বাংলাদেশের সুপারব্র্যান্ড ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠানটি অর্জন করেছে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডের ‘বেস্ট এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার ২০২৪’ সম্মাননা। এই নিয়ে দুইবার দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কারে ভূষিত হলো ওয়ালটন। এর আগে ২০১৪ সালে এ সম্মাননা পেয়েছিল পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত শীর্ষ এই ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠানটি। 

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড এর ২৩তম আসরে ওয়ালটনকে এ সম্মাননা প্রদান করে বহুজাতিক কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।

আরো পড়ুন:

টানা তৃতীয়বার আন্তর্জাতিক সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড পেল ওয়ালটন

ওয়ালটন মাদারবোর্ডে (পিসিবিএ) হচ্ছে আমেরিকার সিকিউরিটি ডিভাইস

প্রধান অতিথির কাছ থেকে ‘বেস্ট এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার ২০২৪’ পুরস্কার গ্রহণ করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম।

অনুষ্ঠানে আয়োজকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএইচএল ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. মিয়ারুল হক এবং দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম।

দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ এ ‘বেস্ট এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননা প্রদান করায় ডিএইচএল, ডেইলি স্টারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান ওয়ালটন হাই-টেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম।

তিনি বলেন, “ওয়ালটন ব্র্যান্ডের প্রতি অগণিত ক্রেতা, শুভাকাঙ্খী এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা, ভালোবাসা ও সমর্থনের ফলে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এ সম্মাননা অর্জিত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য-বৈশ্বিক বাজারে ওয়ালটনকে অন্যতম সেরা গ্লোবাল কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশেকে এআই, আইওটি সমৃদ্ধ বিশ্বের সর্বাধুনিক, উদ্ভাবনী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব স্মার্ট প্রযুক্তিপণ্যের উৎপাদন হাবে পরিণত করা। ইতোমধ্যে ফ্রিজ, এসি ইত্যাদি পণ্যে এআই, আইওটি বেজড উদ্ভাবনী ও সর্বাধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি এবং ফিচার সংযোজনের মাধ্যমে হাই-টেক পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছে ওয়ালটন। পাশাপাশি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের স্মার্ট পণ্য বৈশ্বিক ক্রেতাদের আস্থা ও মন জয় করে নিচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার ৫০টিরও বেশি দেশে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণ হয়েছে।”

ডিএইচএল-ডেইলি স্টার বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অর্জনের মাধ্যমে ওয়ালটনের এই অগ্রযাত্রা আরো ত্বরান্বিত হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০০ সাল থেকে ডিএইচএল এক্সপ্রেস ও দেশের শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার যৌথভাবে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে আসছে। এবারের ২৩তম আসরে ২০২৪ সালে নিজ নিজ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অসামান্য প্রচেষ্টা ও অবদানের জন্য ওয়ালটনসহ দেশের মোট ৫ ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

সম্প্রতি ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্পে সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ডসহ চলতি বছর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার এবং স্বীকৃতি অর্জন করেছে ওয়ালটন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ইএসজি (এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল অ্যান্ড গভর্ন্যান্স) ক্যাটাগরিতে ‘এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’, ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’, ‘এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল কর্তৃক পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি হিসেবে লিড প্লাটিনাম সনদ। 

ঢাকা/সাহেল/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এইচএল প রস ক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%

এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের

থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।

থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।

সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এফএওর সূচক কমেছে

প্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।

চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের

অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নীরবতা ভেঙে হঠাৎ রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী
  • পাড়ার মঞ্চ থেকে বড় পর্দায় 
  • বিকল্প শক্তির উত্থানে নভেম্বরের শেষে ‘জাতীয় কনভেনশন’ করবে বাম ঘরানার দলগুলো
  • থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%