নোয়াখালী বিভাগের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
Published: 5th, October 2025 GMT
নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার দাবিতে আজও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। নোয়াখালীর সেনবাগ ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন বিক্ষোভকারীরা। জেলা শহর মাইজদী ও সুবর্ণচর উপজেলায় সড়ক অবরোধ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার সেনবাগ উপজেলায় নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে থানার মোড়ে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সাইফুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের, সাংবাদিক এম এ আউয়াল, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মফিজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
দুপুর পৌনে ১২টায় জেলা শহর মাইজদীতে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সেখান থেকে প্রধান সড়ক ঘুরে মাইজদীর মোহাম্মদীয় মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসানসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন। কর্মসূচির কারণে শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। সোয়া ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল দেশের প্রাচীনতম জেলা নোয়াখালীকে কুমিল্লার সঙ্গে যুক্ত করে কুমিল্লা বিভাগ করার ষড়যন্ত্র করছে। নোয়াখালীর মানুষ এই ষড়যন্ত্র কখনো মেনে নেবে না। নতুন বিভাগ করতে হলে নোয়াখালীকেই বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সুবর্ণচর উপজেলার খাসেরহাট রাস্তার মাথা এলাকায় সকাল ১০টার দিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় তাঁরা চর জব্বার-চেয়ারম্যানঘাট সড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিভাগ ঘোষণার দাবি জানিয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া একই দাবিতে আজ সকালে বেগমগঞ্জ উপজেলার জমিদারহাট বাজারেও মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। কর্মসূচিতে নোয়াখালী বিভাগ চেয়ে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাউলশিল্পী আবুল সরকারের মুক্তি দাবিতে সংসদের সামনে মানববন্ধন
বাউলশিল্পী আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘সম্প্রীতি যাত্রা’। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে এই মানববন্ধন হয়। এতে বিভিন্ন বাউল–সুফি সংগঠন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন, সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল— ‘আবুল সরকারের মুক্তি চাই’, ‘গান, জ্ঞান ও ভক্তির নিরাপত্তা চাই’, ‘মাজার দরবার রক্ষা করো’, ‘পৃথিবীটা একদিন বাউলের হবে’—এমন বক্তব্য–সংবলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড
মানববন্ধনে বাংলাদেশ সুফি জাগরণ পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই দেশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সুফি–বাউলরা সব সময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। পরিকল্পিতভাবে শিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি না দিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার বলেন, ‘একদিন পৃথিবীটা বাউলের হবে। শিল্পীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তার মানবাধিকার লঙ্ঘন—এটি মেনে নেওয়া হবে না।’
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘সরকার একদিকে লালনের অনুষ্ঠান করে, অন্যদিকে বাউল-ফকিরদের ওপর নির্যাতন চালায়। ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’মানববন্ধনে আহলে সুন্নত জামায়াতের সভাপতি মাওলানা নূরে আলম সাঈদ সরকারকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, আবুল সরকারকে মুক্তি না দিলে দেশের সব বাউল–ফকির রাস্তায় নামবে। বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিক সরকার বলেন, ‘আবুল সরকার মুক্তি না পেলে ২০ লাখ বাউল–ফকির রাস্তায় নামবেন।’
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সংসদের দক্ষিণ প্লাজার সামনে থেকে শুরু হয়ে খেজুরবাগান মোড় ঘুরে আবার দক্ষিণ প্লাজায় এসে শেষ হয়। পুরো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে শিল্পীর মুক্তি এবং সব ধরনের বৈষম্য ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।