কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আর আউটসোর্সিং দ্রুত বদলে দিচ্ছে বিশ্বের কর্মক্ষেত্রের চেহারা। ফলে নিয়োগকর্তা আর কর্মীরা এখন এক বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে—কোন চাকরি টিকে থাকবে, আর কোন চাকরি মেশিনের হাতে হারিয়ে যাবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সব চাকরির ওপর সমান প্রভাব পড়বে না। কিছু কাজ নিরাপদ থাকবে, কারণ সেখানে মানুষের প্রতি আস্থা, আইনগত বাধ্যবাধকতা বা শারীরিক দক্ষতার প্রয়োজন হয়, যেখানে এআই এখনো দুর্বল। আবার কিছু চাকরি, বিশেষ করে যেগুলো বারবার একই জ্ঞানভিত্তিক কাজের পুনরাবৃত্তি করে, সেগুলো দ্রুত এআই দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।

আরও পড়ুনঢাকা ওয়াসায় বড় নিয়োগ, পদ ৮৩টি২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫যেসব চাকরি নিরাপদ—

আস্থা, নীতি এবং কায়িক শ্রম

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ল্যাডার্স ইনক–এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক সেনেদেলা বলেন, যেসব কাজ মানুষের ‘বিচারবোধ বা রুচি’ দিয়ে পরিচালিত হয়, সেগুলো এআইয়ের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। এগুলোতে দরকার সহানুভূতি, সূক্ষ্ম সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং শারীরিক দক্ষতা—যেখানে মানুষের বিকল্প নেই।

ফায়ার সার্ভিস বা উদ্ধারকাজের মতো পেশা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। অ্যাসপেন অ্যানালিটিকস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এআইভিত্তিক কর্মসংস্থান বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু গ্যাডোমস্কি বলেন, ‘আমি আমার মেয়েকে সব সময় বলি, তুমি সব সময় কোস্টগার্ড উদ্ধার সাঁতারু হতে পারবে, তুমি সব সময় ফায়ারফাইটার হতে পারবে।’

এই কাজগুলোতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া, শারীরিক শক্তি এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়—যেখানে রোবট এখনো অনেক সীমাবদ্ধ।

সেনেদেলা যোগ করেন, ‘সিঙ্ক মেরামত করা, নিখুঁত অমলেট তৈরি করা কিংবা বাসস্ট্যান্ড তৈরি করার মতো কাজগুলোতে এখনো মানুষের প্রয়োজন।’

ডেনমার্কে কড়াকড়ি : আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজ ও পরিবার নেওয়ার অধিকার সীমিতআগামী ৫ বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের চাকরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দখল করে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র পদ

এছাড়াও পড়ুন:

কোনো সরকার শিক্ষা নিয়ে তেমন কিছু করেনি, বর্তমান সরকারও না

বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ভালোভাবে হয় না। সমস্যাটি নতুন নয়, অনেক আগে থেকেই এমন হয়ে আসছে। এটা কাঠামোগত সমস্যা। খণ্ডিতভাবে দেখে, খণ্ডিত উদ্যোগ নিয়ে সমস্যাটির সমাধান হবে না। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বৈষম্য কমানো দরকার।

ধনী ও সচ্ছল পরিবারের সন্তানেরা ভালো শিক্ষা পাবে, নিম্নবিত্তের সন্তানেরা পাবে না, সেটা হতে পারে না। শিক্ষার জন্য সম্পদের সংস্থান কোথা থেকে হবে, সেটার পথ খোঁজা দরকার। সব মিলিয়ে খাত ধরে একটি বড় ধরনের পর্যালোচনা হতে হবে। সেটা কয়েক দিন বা মাসের বিষয় নয়। পর্যালোচনাটি দরকার গভীর ও বিস্তৃত।

আরও পড়ুনবিদ্যালয়ে যেনতেন পড়াশোনা, ভরসা কোচিং ও গৃহশিক্ষক২ ঘণ্টা আগে

বর্তমান সরকার ১১টি বিষয়ে সংস্কার কমিশন করেছে। শিক্ষা খাত নিয়ে কোনো সংস্কার কমিশন করা হয়নি। প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছিল। সেই কমিটির প্রধান ছিলাম আমি। আমরা প্রতিবেদন সরকারের কাছে দিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন সুপারিশ রয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ে তেমন কোনো কাজ হয়নি। খণ্ডিতভাবে দু-একটি সুপারিশ হয়তো বাস্তবায়ন হয়ে থাকতে পারে।

২০১০ সালে শিক্ষানীতি হয়েছে। তবে তা অনেকাংশে বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ, সরকারগুলো কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চায়। বিগত ৫৪ বছরে কোনো সরকারই শিক্ষা নিয়ে তেমন কিছু করেনি। বর্তমান সরকার অন্তত একটা সূচনা করতে পারত। সেটাও করেনি।

শিক্ষা খাত আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ। এ খাতের বড় ধরনের সংস্কার দরকার। অতীতের সরকারগুলো যেমন এ খাত নিয়ে কাজ করেনি, তেমনি ভবিষ্যতের সরকার সংস্কার করবে, সে আশাও করতে পারছি না। তবু আশা নিয়ে থাকতে হবে।

মনজুর আহমদ: শিক্ষাবিদ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক।

[মতামত লেখকের নিজস্ব]

সম্পর্কিত নিবন্ধ