জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) ও কাস্টমস বিভাগের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.

আক্তার হোসেন।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলাল চৌধুরী তাঁর দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ১১ হাজার ১৬৬ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। তবে যাচাইয়ে তাঁর নামে ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৭৯ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি ৪ কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার ৭১৩ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দায়দেনা বাদে বেলাল চৌধুরীর নিট সম্পদের পরিমাণ ৭ কোটি ৫২ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৩ টাকা। আর পারিবারিক ব্যয়সহ মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি ৫০ লাখ ৯ হাজার ৪২৬ টাকা। এর বিপরীতে তাঁর বৈধ আয়ের উৎস হিসেবে পাওয়া গেছে ১১ কোটি ৫২ লাখ ৫৮ হাজার ৩০ টাকা।

দুদকের ভাষ্যমতে, হিসাব অনুযায়ী বেলাল চৌধুরী জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেলাল চৌধুরী বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার এবং শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যার্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি: আবরারের বাবা

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আপিল বিভাগে এখনো মামলা বিচারাধীন। সরকারের কাছে আবেদন, বিচারের কাজটি যেন দ্রুত শেষ করা হয়।’’

আজ মঙ্গলবার (৭ আক্টোবর) ছিল আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি ঘিরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে স্মৃতিচারণসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। ছেলেকে স্মরণ করে এ কথা বলেন আবরার ফাহাদের বাবা। 

আরো পড়ুন:

আবরারের রক্ত বৃথা যায়নি, জাতিকে জাগিয়ে তুলেছে

কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘ছেলেটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিষ্ঠুরতম এ অপরাধ করার পরও নিহতের পরিবার এখনো এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানাই।’’ 

আবরার বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট।

ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা। সেই মামলার রায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ এ বছর ১৬ মার্চ সেই সাজাই বহাল রাখে।

আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন। আশা করছি আপিল বিভাগেও হাই কোর্টের রায় বহাল থাকবে। এই সরকার রায় কার্যকর করবে।”

এ মামলায় দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন এখনো পলাতক। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বরকত উল্লাহ।

দিনটি উপলক্ষে রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরারের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির নেতারা। দুপুর ২টায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক নয়ন আহমেদের নেতৃত্বে দলটির নেতারা কবর জিয়ারতে অংশ নেন। এ সময় তারা আবরার ফাহাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

এসময় এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি, যুগ্ম সমন্বয়কারী কে এম আর শাহীনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে শহীদ আবরার ফাহাদের হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করে শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্র-জনতা। 

সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ আবরার ফাহাদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ