মাউশির মহাপরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন মুহাম্মদ আজাদ খান
Published: 7th, October 2025 GMT
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগের পর তিনি নিজ থেকেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে অব্যাহতির আবেদন করেছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার আলোচনা শুরু হয় মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে। কারণ, গতকালই এ পদে নিয়োগ দিতে আবেদন আহ্বান করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মাউশির মহাপরিচালকের পদটি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শীর্ষ পদ। এভাবে আবেদন আহ্বান করে এ পদে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগকে নজিরবিহীন বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গতকালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, মাউশির মহাপরিচালক পদে কাজ করতে আগ্রহী বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের ১৬তম এবং তদূর্ধ্ব ব্যাচের কর্মকর্তারা আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্তসহ অফলাইনে (সশরীর) আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আগ্রহী প্রার্থীকে সৎ, দায়িত্বপরায়ণ ও প্রশাসনিক কাজে দক্ষ হতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর থাকা আবশ্যক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান মহাপরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকেরা সন্তুষ্ট নন। এ জন্য তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এ অবস্থায় এ পদে তদবির করে যেনতেন ও অভিযুক্ত কেউ যাতে নিয়োগ পেতে না পারেন, সে জন্য সাক্ষাৎকার ও যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দিতেই এই আবেদন আহ্বান করা হয়েছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খান অব্যাহতি চেয়েছেন। আবেদনে তিনি লিখেছেন, স্বাস্থ্যগত কারণে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই তিনি মহাপরিচালকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান।
গত বছরের ডিসেম্বরে মাউশি মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম। তিনি অবসরে যাওয়ার পর গত ৩০ জানুয়ারি এ পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন রসায়নের অধ্যাপক এহতেসাম উল হক। তার আগে তিনি পটুয়াখালী সরকারি কলেজে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু নিয়োগের পর তাঁকে প্রত্যাহার করার দাবিতে শিক্ষা ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট নামের একটি সংগঠন। পরে দাবির মুখে নিয়োগ দেওয়ার মাত্র ২০ দিনের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। তখন তাঁকে ওএসডি করা হয়। এরপর জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে মাউশির নতুন মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) করা হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুনমাউশির ডিজিকে সরানো হতে পারে, এ পদে আবেদন আহ্বান২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লিও তলস্তয়ের গ্রামে
আমি এখন যে গ্রামে এসেছি, সেই গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নাম গ্রামটির। এটি আসলে তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তিনি জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’ এবং অসংখ্য গল্প।
তলস্তয়কে আইন পড়তে কাজান শহরে পাঠানো হয়েছিল কিন্তু পড়তে তাঁর ভালো লাগেনি। জমিদারি ছিল, তাই রোজগারের চিন্তাও করতে হয়নি। মাঝখানে সন্তানদের পড়ালেখার জন্য আট বছর মস্কোতে একটি বাড়ি কিনে বসবাস করেছিলেন।
লিও তলস্তয় শেষ জীবনে আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকেছিলেন এবং খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। একসময় গৃহত্যাগ করেছিলেন। ১৯১০ সালে ৮২ বছর বয়সে আস্তাপোভো রেলস্টেশনে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে একাকী, আত্মীয়, বন্ধু থেকে দূরে, নীরবে তিনি দেহত্যাগ করেন। এরপর তাঁকে ইয়াস্নায়া পলিয়ানায় এনে সমাহিত করা হয়।
ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে আমি যখন পৌঁছালাম, তখন রোদ ঝলমল করছে। গত কয়েক দিন খুব বৃষ্টি পড়েছে মস্কো শহরে। মস্কো থেকে আমাকে পাড়ি দিতে হয়েছে ২২০ কিলোমিটার। সরাসরি মস্কো থেকে তলস্তয়ের গ্রামে আসার কোনো ট্রেন বা বাস নেই। আমাকে ট্রেনে করে আসতে হয়েছে প্রথমে তুলা শহরে৷
ট্রেনে করে আসার পথে রাশিয়ার সবুজ গ্রামের যে রূপ আমি দেখেছি, তার তুলনা হয় না। পথের পাশে ফুটে আছে হলুদ বুনো ফুল আর হঠাৎ হঠাৎ করে একটা বা দুটো দোচালা বাড়ি। মাঝে পড়ে গেল একটা নদী, আবার এসে গেল ঘন সবুজ জঙ্গল। এমন অসামান্য প্রকৃতি যে দেশের আছে, সে দেশের প্রতি এমনিতেই মায়া জন্মে যায়।
রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটি তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তলস্তয় জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’।মাঝখানে ধূসর লম্বা পথ আর দুপাশে ঘন বনানী