Prothomalo:
2025-10-07@18:38:04 GMT

কে এই ‘এসআই মাহফুজ আলম’

Published: 7th, October 2025 GMT

হোয়াটসঅ্যাপে ফোন। মুঠোফোনের স্ক্রিনে পুলিশের ছবি ভেসে উঠল। গম্ভীর ও স্পষ্ট শুদ্ধ উচ্চারণে বললেন, তিনি মিরপুর মডেল থানা থেকে এসআই মাহফুজ আলম বলছেন। ফোন করার কারণ জানতে চাইলে কণ্ঠ আরও গম্ভীর করে বললেন, এই নম্বরটা আপনার? বললাম, আপনি তো এই নম্বরেই ফোন করেছেন, তো নম্বরটা আমারই।

এসআই বললেন, আপনার বাচ্চা মোবাইল টিপাটিপি করে? বললাম, আমার বাচ্চারা বিশ্ববিদ্যালয় আর কলেজে পড়ে। তাদের মোবাইল নিয়ে খেলার বয়স বা সময় কোনোটাই নেই। এবার তাঁর কণ্ঠে একটু বিরক্তির ভাব। বললেন, আপনার নম্বর পুলিশের সার্ভারে অ্যাড (যুক্ত) হলো কীভাবে? আমিও শীতল কণ্ঠে বললাম, আমার নম্বর যদি আপনাদের সার্ভারে অ্যাড হয়, সে দায় তো আমার না, আপনাদের সার্ভার দুর্বল।

জানতে চাইলাম, এখন আমাকে কী করতে হবে? তিনি বললেন, আমার নম্বরে একটি লিংক পাঠাচ্ছেন, তাতে ক্লিক করে ‘ও কে’ করলেই হবে। আর ধৈর্য রাখা গেল না। বললাম, আপনাকে এ দায়িত্ব কে দিয়েছে? বললেন, তাঁর থানায় এ নিয়ে আলাদা বিভাগই আছে, তিনি সেই বিভাগ থেকে বলছেন। আমি বললাম, ঠিক আছে আমি থানায় ফোন করে খোঁজ নিয়ে আবার আপনাকে ফোন দিচ্ছি। এবার সরাসরিই হুমকি দিলেন। আপনি কি চাচ্ছেন আপনার ফোনটি বন্ধ করে দিই? আমিও বললাম, আপনার ক্ষমতা থাকলে বন্ধ করে দেন। রাগে ফোনটা কেটে দিলেন তিনি।

হোয়াটসঅ্যাপে গত সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আমার কাছে ফোনটি আসে। তার আগে ওই দিন সকালেই দিল আফরোজ নামের একজন এ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। সেই পোস্ট নিয়ে অফিসে কথাও বলেছিলাম। সে অর্থে এই ‘এসআই মাহফুজ আলম’ আমার পূর্বপরিচিত। তাই কথা বলতে সুবিধা হয়েছে।

রাজধানীর সরকারি সংগীত কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দিল আফরোজের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলো। অবশ্য দিল আফরোজকে অন্য একটি নম্বর থেকে এসআই মাহফুজ আলম পরিচয় দিয়ে ফোন দিয়েছিলেন এই প্রতারক। তাঁর কাছেও জানতে চেয়েছেন, তাঁর নম্বর কীভাবে থানার সার্ভারে অ্যাড হলো? বাচ্চাদের হাতে ফোন দেন কি না? বাচ্চারা ফোন টেপাটেপি করে কি না, এখন তো এ নিয়ে বিপদে পড়বেন।

দিল আফরোজ অবশ্য ফেসবুক পোস্টে মজা করে লিখেছেন, তিনি বিপদে থাকতে ভালোবাসেন। তাই প্রসেস বলা বা ওটিপি চাওয়ার আগেই বলে দিয়েছেন তিনি কোনো ওটিপি দেবেন না। তারপর অপর প্রান্ত থেকে অশ্রাব্য গালি দেওয়া হয় দিল আফরোজকে। সে কথাও তিনি পোস্টে লিখেছেন। পুলিশ বন্ধুদের জন্য এসআই পরিচয় দেওয়া ওই প্রতারকের ফোন নম্বরটি পোস্টে তুলে দিয়েছেন, যাতে তাকে ধরতে পারে।

এসআই মাহফুজ আলম পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি প্রতারণা করছেন, এটা চট করে বুঝলেন কীভাবে—এ প্রশ্নের জবাবে দিল আফরোজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কথা বলার ভঙ্গি পেশাদার মনে হয়নি। আর আমার নম্বর থানার সার্ভারে এমনি এমনি অ্যাড হয়ে যাবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। আমার বাচ্চার হাতে ফোন যাবে, এটাও হাস্যকর। বাচ্চা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। কিছুদিন আগেই ভাইস প্রিন্সিপাল ম্যাডামের ফোন হ্যাক করা হয়েছিল, সেটাও মাথায় ছিল হয়তো।’

দিল আফরোজ বললেন, কাউকে ওটিপি, পিন নম্বর অথবা ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয় না। এ বিষয়ে সবাই সচেতন হবেন, সে জন্যই ফেসবুকে পোস্টটি দিয়েছেন।

এসআই মাহফুজ আলম নামে আসলেই কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আছেন কি না, তা জানতে যোগাযোগ করা হয় মিরপুর মডেল থানার ওসি মো.

সাজ্জাদ রোমনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার থানায় এসআই মাহফুজ আলম নামের কোনো কর্মকর্তা নেই। তা ছাড়া থানায় বা পুলিশের এমন কোনো সার্ভার নেই, যেখানে অন্য কারও নম্বর এমনি এমনি অ্যাড হয়ে যাবে।’

এর আগেও সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা ফোন করে এ ধরনের একটি অভিযোগ করেছেন বলে জানান ওসি রোমন। তবে তিনি বা থানার পক্ষ থেকে তখন কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

এবার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অনেকেই হয়তো বুঝতেও পারবে না যে এভাবে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফোন করে প্রতারণা করা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ল আফর জ কর মকর ত আম র ন ফ ন কর বলল ন বলল ম আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

নিখোঁজ তরুণের লাশ ধানমন্ডি লেকে

রাজধানীর ধানমন্ডি লেক থেকে মো. ওমর ফারুক মোল্লা (১৮) নামের এক তরুণের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

আজ রোববার সকালে ধানমন্ডি লেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পরে ধানমন্ডি থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মো. ওমর ফারুক ৩ অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগের বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। পরে তিনি আর বাসায় ফেরেননি।

মো. ওমর ফারুকের বাবা আবদুল কুদ্দুস মোল্লা। তিনি মাছের ব্যবসা করেন। হাজারীবাগে তিনি পরিবারসহ থাকেন।

পরিবারের বরাত দিয়ে এসআই মো. খলিলুর রহমান বলেন, ওমর ফারুক কোনো কাজ করতেন না। তবে মাঝেমধ্যে বাবার ব্যবসায় সাহায্য করতেন। এ নিয়ে কিছুদিন ধরে পরিবারে মান–অভিমান চলছিল। ৩ অক্টোবর বিকেলে খাওয়াদাওয়া শেষে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপর আর ফেরেননি। পরিবার ধারণা করেছিল, ওমর ফারুক হয়তো কোনো বন্ধুর বাসায় আছেন। তাই তাঁর নিখোঁজের বিষয়ে থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেনি।

লাশ উদ্ধারের পর পকেটে একটি মানিব্যাগ পাওয়া যায় জানিয়ে পুলিশ বলে, সেখানে থাকা মুঠোফোন নম্বরে কল দিয়ে তাঁর নাম–পরিচয় জানা যায়। এরপর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করে। পরিবারের ধারণা, ওমর ফারুক অসাবধানতাবশত পানিতে পড়ে মারা গেছেন। তিনি সাঁতার জানতেন না।

মো. ওমর ফারুকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এসআই প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন
  • বন্দরে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা 
  • হাতকড়াসহ আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার ২১
  • ধানমন্ডি লেক থেকে তরুণের লাশ উদ্ধার
  • গেন্ডারিয়ায় তরুণীর মরদেহ উদ্ধার, পুলিশের সন্দেহ, ধর্ষণের পর হত্যা
  • নিখোঁজ তরুণের লাশ ধানমন্ডি লেকে
  • বগুড়ায় পুলিশের ওপর হামলা করে ছিনিয়ে নিল আওয়ামী লীগ নেতাকে