কিডনি রোগীদের হার্টে রিং প্রতিস্থাপনের নতুন পদ্ধতি তুলে ধরলেন বাংলাদেশি চিকিৎসক
Published: 9th, November 2025 GMT
হৃদ্রোগের ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসাবিষয়ক বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ট্রান্স-ক্যাথেটার কার্ডিওভাস্কুলার থেরাপিউটিকস (টিসিটি)-২০২৫ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৫ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশের ইন্টারভেনশনাল হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ও গবেষক অধ্যাপক ডা.
সম্মেলনে আফজালুর রহমান তুলে ধরেন বাংলাদেশের একাধিক জটিল হৃদ্রোগীর চিকিৎসার অভিজ্ঞতা, বিশেষত কিডনি রোগে আক্রান্ত এমন রোগীদের ক্ষেত্রে, যাঁদের অ্যানজিওগ্রাম বা স্টেন্ট বসানো সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক হৃদ্রোগী আছেন, যাঁদের হার্টে রিং বা স্টেন্ট প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের কারণে এ পদ্ধতিতে জটিলতা ও ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এমন রোগীর ক্ষেত্রে আফজালুর রহমান উদ্ভাবন করেছেন ‘জিরো কনট্রাস্ট’ পদ্ধতি, যেখানে অতি স্বল্প বা প্রায় শূন্য পরিমাণ ডাই ব্যবহার করেই রিং প্রতিস্থাপন সম্ভব। তিনি এই পদ্ধতি বাংলাদেশি রোগীদের ওপর সফলভাবে প্রয়োগ করে এর ফলাফল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থাপন করেন, যা ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
আফজালুর রহমান বলেন, ‘এই জিরো কনট্রাস্ট পদ্ধতিতে আমি ব্যবহার করি বিশেষ ক্যামেরা, রক্তনালির আলট্রাসাউন্ড সিস্টেম বা আইভাস এবং মার্কার ওয়্যার টেকনিক।’ তিনি বলেন, এতে রক্তনালির ভেতরে সূক্ষ্ম তার রেখে নালির গতিপথ নির্ধারণ করা হয় এবং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে রিং বা স্টেন্ট প্রতিস্থাপন করা হয়।
বিশ্বের শীর্ষ কার্ডিওলজিস্টদের উপস্থিতিতে আফজালুর রহমানের এই উপস্থাপনা বাংলাদেশের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিয়াক চিকিৎসার এক নতুন অধ্যায় হিসেবে প্রশংসিত হয়।
আফজালুর রহমান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্টারভেনশনাল হৃদ্রোগ চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের হৃদ্রোগ চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি প্রয়োগে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফজ ল র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা ধসিয়ে দিয়েছে রাশিয়া, অন্ধকারে বিভিন্ন অঞ্চল
ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে রাশিয়া ব্যাপক হামলা চালানোর পর দেশটিতে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন অঞ্চল। আজ রোববার ৮ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎবিভ্রাটের সতকর্তা জারি করেছে দেশটির বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ইউক্রেনেরর্গো। হামলার জেরে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ‘শূন্যের’ কোঠায় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গত কয়েক মাসে ইউক্রেনের বিভিন্ন অবকাঠামোয় হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে রাশিয়া। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কয়েক শ ড্রোন হামলা চালিয়েছে মস্কো। ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের্গো জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ অবকাঠামো মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বিকল্প উৎস থেকে সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত শনিবার ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী ভিতলানা গ্রিনচুক জানিয়েছেন, কিয়েভ, নিপ্রোপেত্রাভস্ক, দোনেৎস্ক, খারকিভ, পলতাভা, চেরনিহিভ ও সুমিতে সরবরাহ কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। তবে সেখানে নিয়মিত বিদ্যুৎবিভ্রাট থাকবে।
স্থানীয় টেলিভিশন ইউনাইটেড নিউজকে ভিতলানা গ্রিনচুক বলেছেন, শত্রুরা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এটি প্রতিহত করা খুব কঠিন। আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর এমন হামলা হয়নি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিয়া জানিয়েছেন, রুশ ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্দ্রি সিবিয়া তাঁর টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন, ‘রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। এই অগ্রহণযোগ্য ঝুঁকির জবাব দিতে আমরা আইএইএর গভর্নর বোর্ডের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানাচ্ছি।’
হামলা বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চীন ও ভারতের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশ দুটি রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে পরিচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলার কারণে শীতের আগে ইউক্রেনের তাপ সরবরাহ ব্যবস্থা ঝুঁকিতে পড়েছে। দেশটির শীর্ষ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ওলেকজান্দ্রা খারচেঙ্কো সতর্ক করে বলেছেন, তাপমাত্রা যখন হিমাঙ্কের ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসবে, তখন কিয়েভের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও তাপকেন্দ্র তিন দিনের বেশি বন্ধ থাকলে রাজধানীতে ‘প্রযুক্তিগত বিপর্যয়’ তৈরি হবে।