ক্লিনটনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা সহকর্মীকে বলে সর্বনাশ ডেকে আনলেন মনিকা
Published: 8th, October 2025 GMT
শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৫ সালের জুন মাসে। ওয়াশিংটনে পা রাখেন ২১ বছরের সুন্দরী তরুণী মনিকা লিউনস্কি। ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দেন হোয়াইট হাউসে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। দেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা তাঁর। সে সময় কেউ কি ভেবেছিলেন, মনিকাকে ঘিরেই জীবনের সবচেয়ে বড় সংকটের মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন?
সংকটের মূলে ছিল বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক। তা–ও আবার ২৮ বছরের ছোট মনিকার সঙ্গে। দুজনের শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল। সবকিছু ঘটেছিল হোয়াইট হাউসেই—গোপনে। তবে সত্য তো চাপা থাকে না। একান-ওকান ঘুরে শেষ পর্যন্ত প্রকাশ পেয়েছিল। আর মনিকার নীল রঙের একটি পোশাক ঘিরে এমন এক প্রমাণ সামনে এসেছিল, যার ফলে চাইলেও সত্যটা ছুড়ে ফেলতে পারেননি ক্লিনটন।
মনিকার সঙ্গে ক্লিনটনের প্রণয় হয়েছিল প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদে। দ্বিতীয় মেয়াদে ১৯৯৮ সালে তা চাউর হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ঘরে-বাইরে, অফিস-আদালতে তখন আলোচনার যেন একটিই বিষয় ছিল—ক্লিনটন-মনিকা প্রেম। নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট ও টাইমের মতো নামীদামি পত্রিকায় দিনের পর দিন শিরোনাম হয়েছিল দুজনের এই সম্পর্কের খবর।
দুজনের প্রেম পরিচিতি পায় ‘ক্লিনটন-মনিকা স্ক্যান্ডাল’ বা ‘ক্লিনটন-মনিকা কেলেঙ্কারি’ নামে। এই কেলেঙ্কারি ঘিরে ১৯৯৮ সালের আজকের এই দিনে (৮ অক্টোবর) ক্লিনটনের অভিসংশনের জন্য তদন্ত শুরু করার প্রস্তাব পাস হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে। সে বছরের ১৯ ডিসেম্বর পরিষদে অভিশংসিত হন প্রেসিডেন্ট। যদিও শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়তে হয়নি তাঁকে।
মনিকার সঙ্গে ক্লিনটনের প্রেমের বিষয়টি কে ফাঁস করলেন, কীভাবে এ তথ্য পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা, কী ছিল সেই নীল পোশাকে, যা পুরো তদন্তের মোড় বদলে দিয়েছিল; আর কেনই–বা প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হওয়ার পরও ক্ষমতায় টিকে গিয়েছিলেন ক্লিনটন—চলুন জেনে নেওয়া যাক এসব প্রশ্নের জবাব।
মনিকাকে জড়িয়ে ধরে আছেন ক্লিনটন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ল নটন র ন মন ক হয় ছ ল মন ক র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা অভিমুখী জাহাজে কেমন দিন কাটছে, জানালেন শহিদুল আলম
গাজা উপত্যকায় অবস্থানরত চিকিৎসকদের সঙ্গে আজ সকালে আমরা একটি ভিডিও কনফারেন্স করেছি। আমরা যাঁরা কনশানসে অবস্থান করছি, তাদের সবার জন্য এটি একটি আবেগঘন মুহূর্ত ছিল—একদিকে সেখানে (গাজা) এখনো সেবা দিয়ে যাওয়া মানুষের সাহসিকতা, অন্যদিকে তাঁরা যে নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হচ্ছেন, সে সম্পর্কে জেনেছি।
গাজার হাসপাতালে হামলার বিষয়ে সাবেক সহকর্মীদের বর্ণনা শুনে কনশানসে থাকা চিকিৎসক হ্যান বোসেলায়ের্স কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ দৃশ্য আমাকে মনে করিয়ে দিল যে আমাকে খুব সম্ভবত আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে যে কেন এই অভিযান জরুরি।
এখানকার দৈনন্দিন জীবন কেমন, তা সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। কনশানস জাহাজটি দীর্ঘ ভ্রমণের উপযোগী করে তৈরি হয়নি। এটি ১৯৭২ সালে বানানো একটি পুরোনো জাহাজ। মূলত অল্প দূরত্বে ভ্রমণের জন্য এটি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে।
১. যাত্রীদের ঘুমানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। কেবিনগুলো শুধু ক্রুদের জন্য সংরক্ষিত। কারণ, তাঁদেরই সবচেয়ে বেশি ঘুমানো প্রয়োজন। সে কারণে আমরা বাকিরা সবাই মেঝেতে থাকছি। আমরা স্লিপিং ব্যাগ এবং ছোট ছোট বালিশ এনেছিলাম। এ ছাড়া অন্য কিছু তেমন একটা নেই।
কারণ, প্রত্যেকে সাকল্য ১০ কেজি করে জিনিস আনতে পেরেছি। এখানে বিশুদ্ধ পানির খুব অভাব। সে কারণে প্রত্যেককে খুব হিসাব করে পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। পুরো জাহাজের কারোরই গোসল নেই।
২. যে ক্রুরা জাহাজটি চালাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো সার্ভিস স্টাফ নেই। সে কারণে জাহাজের ভেতর সব কাজ আমাদের নিজেদেরই করতে হচ্ছে। শৌচাগার পরিষ্কার থেকে শুরু করে পুরো জাহাজ পরিষ্কার, আবর্জনা পরিষ্কার, খাবার সরবরাহ, রান্নাঘর পরিষ্কারের মতো কাজগুলো করছি।
৩. অবশ্যই এখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে। তাই আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে। পাশাপাশি খুব কঠোর কিছু বিধিনিষেধও মেনে চলতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনশহিদুল আলমদের জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে গেল ‘ইসরায়েলি সামরিক বিমান’১৯ ঘণ্টা আগে৪. আমরা এখানে যাঁরা আছি, তাঁরা মূলত সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী। সে কারণে কীভাবে একটি জাহাজের কার্যক্রম চলে বা হামলার সময় কী করতে হবে, তা আমরা জানি না। তাই লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা থেকে শুরু করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরার মতো বিষয়গুলো নিয়ে এখানে অনেক নিরাপত্তা মহড়া করা হয়।
যদি আমরা নিয়মগুলো ঠিকভাবে অনুশীলন না করি, তাহলে হামলার সময় ৯৬ জন মানুষ দ্রুত কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। তাই প্রতিদিন একাধিক নিরাপত্তা মহড়া চালানো হয়।
৫. সমুদ্র কখনো কখনো খুবই উত্তাল হয়ে ওঠে। আমরা সাধারণত সমুদ্রযাত্রায় অভ্যস্ত নই, তাই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। কেউ কেউ আবার অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে যান। সৌভাগ্যের বিষয় হলো, এখানকার চিকিৎসাকর্মীদের দলটি খুব ভালো। তবে কেউ অসুস্থ হলে তাঁর দায়িত্ব অন্যদের ভাগ করে নিতে হয়, যা সব সময় সহজ হয় না।
৬. আমরা যাঁরা সাংবাদিক আছি, তাঁরা ছবি তুলছি, ভিডিও ধারণ করছি, নিবন্ধ লিখছি, জাহাজের মানুষের সাক্ষাৎকার নিচ্ছি এবং পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছি। এত অনিশ্চয়তার মধ্যে এগুলো সময়মতো করাটা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ছে।
গাজার হাসপাতালে হামলার বিষয়ে সাবেক সহকর্মীদের বর্ণনা শুনে কনশানসে থাকা চিকিৎসক হ্যান বোসেলায়ের্স কান্নায় ভেঙে পড়েন ছবি: