যমুনা নদীর পাড়ের (ক্রসবার-৩) একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা হয়ে রয়েছে। মাথার ওপরে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। নিচে সাদা কাশফুল বাতাসে দুলছে। একই সঙ্গে নদীর জেগে ওঠা চরের যেদিকেই চোখ যায়, শুধু শুভ্র রঙের খেলা।
সাদা মেঘের মতো ফুলকো হয়ে ফেঁপে থাকা এই ফুলের ছোঁয়ায় আকৃষ্ট হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই ছুটে আসছেন কাশবনে। প্রকৃতির দানে জন্ম নেওয়া কাশবনের এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ভিড় করছেন।
মনোমুগ্ধকর অপরূপ এই দৃশ্য দেখা যাবে, সিরাজগঞ্জ শহরের চর-মালশাপাড়ায় যমুনা নদীর দক্ষিণ পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত পৌনে দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ক্রসবার-৩ বাঁধে। সকলের মুখে চায়না বাঁধ-৩ নামে সুপরিচিত।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার বালুর চরজুড়ে কাশফুল ফুটেছে। লম্বা-চিরল সবুজ পাতার বুক থেকে বেরিয়ে আসা কাশফুল থোকাবদ্ধ গুচ্ছে গুচ্ছে ফুটে রয়েছে। মৃদুমন্দ বাতাসে দুলছে। দূর থেকে মনে হবে সাদা চাদর বিছিয়ে দিয়েছে যেন কেউ।
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, প্রাইভেকার, মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিনচালিত নৌকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা বয়সের মানুষ এই কাশবনে বেড়াতে আসছেন। কেউ মুঠোফোনে ছবি তুলছেন। কেউ আবার দু-চারটি কাশফুল ছিঁড়ে তোড়ার মতো তৈরি করছেন। শিশুরা কাশবনে ছোটাছুটি আর খেলাধুলা করছে।
যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল ছেড়ে মুক্ত আনন্দ পেতে প্রতিনিয়ত মানুষ ছুটে আসছে এ কাশবনে। শেষ বিকেলে কাশবনের সৌন্দর্য আরো অনেকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে বেশিরভাগ দর্শনার্থী বিকেলেই আসেন।
মেয়েকে নিয়ে শাহজাদপুর থেকে কাশবনে বেড়াতে এসেছেন স্বপ্না পারভিন। তিনি বলেন, “যমুনা নদীর পাড়ে যত দূর চোখ যায় শুধু সাদা সাদা কাশফুল। একসঙ্গে এত কাশফুল দেখতে বেশ ভালোই লাগে। এখানে এলে মনে শান্তি পাওয়া যায়। মা-মেয়ে মিলে কাশফুলে বেড়াতে এসেছি। সেই সাথে ছবিও তোলা হলো। দারুণ সময় কাটলো।”
স্থানীয় শামিমা খাতুন, আল্পনা, মজিবর রহমান ও শফিকুল ইসলাম বলেন, “কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মানুষ এখানে আসেন। এদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই বেশি। তবে এ ফুল বেশিদিন থাকে না। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই ফুল বাতাসে উড়ে যায়। কয়েক দিন পর এ ফুল আর দেখা যাবে না।”
ঘুরতে আসা নাজিফা খাতুন বলেন, “চায়না বাঁধ (ক্রসবার-৩) এলাকায় বিকেল হলেই কাশফুলের সৌন্দর্যের টানে বিভিন্ন স্থান থেকে ঘুরতে আসা প্রকৃতিপ্রেমী তরুণ তরুণীদের ভিড় জমে। এসময় তারা কাশফুলের উন্মাদনায় মেতে উঠে ছবি তোলে, ভিডিও করে। এযেন এক অন্য রকম দৃশ্য।
ফুসকা বিক্রেতা শফিক বলেন, “কাশফুল ফুটলে পুরো এলাকা সাদা হয়ে যায়। কার্তিক মাস পর্যন্ত কাশফুল থাকে।”
বাদাম ও পানি বিক্রেতা আলতাব শেখ বলেন, “যমুনা নদীর চরেই খেলাধুলা করে তার বেড়ে ওঠা। কয়েক বছর ধরে এখানে ফুল ফুটছে। বিকেল হলেই প্রচুর মানুষ ঘুরতে আসে। ছবি তোলে, ভিডিও করে। অনেকেই ছবি ও ভিডিও করে ফেবসুকে ছেড়ে দেয়। এতে অনেক মানুষজন এখানে আসে। আমাদের কেনা বেচা ভালোই হয়।”
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, “নদীর পাড়ে জন্ম নেওয়া সাদা কাশবন দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক দর্শনার্থী আসেন। বিকেল হলেই প্রচুর মানুষ বেড়াতে আসে। ছবি তোলে, ভিডিও করে। ছুটির দিনে ভিড় বেড়ে যায়। তাদের নিরাপত্তায় প্রশাসন সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।”
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (উপ-পরিচালক) আ.
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স ন দর য ভ ড ও কর ক ল হল ক শবন
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে হাজং জনগোষ্ঠীর ‘নয়া খাওয়া’ নবান্ন উৎসব উদ্যাপন
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় হাজং জনগোষ্ঠীর বিলুপ্তপ্রায় নবান্ন উৎসব ‘নয়া খাওয়া’ নানা আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার উপজেলার কয়রাকুড়ি গ্রামের হাজংপল্লিতে দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
হাজং জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জনউদ্যোগ সংগঠনের শেরপুর কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের শেরপুর জেলা শাখা ও ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি)।
অনুষ্ঠানে হাজং শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন