জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালুর নির্দেশ
Published: 8th, October 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানের পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোর করে পদত্যাগ করানো অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালুর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক চিঠিতে গতকাল মঙ্গলবার এ নির্দেশনা জারি করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চললেও অনেকের বেতন ও ভাতা বন্ধ রয়েছে। ফলে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে আবেদনপত্রে জানিয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালু রাখা প্রয়োজন। তাই তাঁদের নাম ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করে বেতন-ভাতা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনো কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষ যদি বেতন-ভাতা চালুর ক্ষেত্রে অসহযোগিতা বা বাধা প্রদান করেন, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুনঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রি অনলাইন কোর্স, ঘরে বসেই শিখুন নতুন দক্ষতা০৫ অক্টোবর ২০২৫মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোর করে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এতে অনেক শিক্ষকের বেতন বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনসুইজারল্যান্ডে মাস্টার্স : ইউনিভার্সিটি অব লুসানে স্কলারশিপের আবেদন শুরু১১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আগামী মাসেই গণভোট চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থাৎ নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের পক্ষে তাঁদের অবস্থান।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ চলাকালে সভা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলীয় অবস্থান প্রকাশ করেন জামায়াতের নায়েবে আমির।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর স্ট্যান্ডিং পরিষ্কার—ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে এবং নভেম্বরের ভেতরেই জুলাই চার্টারের ওপরে আমাদের গণভোট হবে। দেশ অত্যন্ত স্থিরতা, দৃঢ়তা, স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে ৫৪ বছরের ভেতরে সবচেয়ে বেশি জন–অংশগ্রহণমূলক আনন্দ-উৎসবের নির্বাচনে যাবে।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হলেও তা কবে হবে, তা নিয়ে মতভেদ কাটেনি। বিএনপি ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটে রাজি হলেও তাতে আপত্তি রয়েছে জামায়াতের।
সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘এখন আমরা সবাই একমত হয়েছি যে গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই চার্টার এক্সেপ্টেড হবে...অনেকে বলেছেন গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। আমরা বলেছি, না, গণভোট একটি আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন একটি আলাদা বিষয়।
গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে হলে তা জটিলতা তৈরি করবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দুটি ইলেকশন একসঙ্গে হওয়ার একটা ভালো দিক আছে, কিন্তু মন্দ দিক আছে অনেক বেশি...আপার হাউসের মতো কিছু ইস্যু আছে, যা আগামী নির্বাচনের অংশ হবে। যদি একই দিন করেন, তাহলে জনগণ গ্রহণ করবে কি করবে না—এটা আনডিসাইডেড রয়ে গেল।’
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদাহরণ টেনে সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত তিনটা–চারটা পর্যন্ত আমাদের টেনশনে ঘুম আসে নাই... জাহাঙ্গীরনগর নির্বাচনে ৪৮ ঘণ্টা পরে রায় দিয়েছে...তাহলে দুটি নির্বাচন আমাদেরকে এ রকম একটি আশঙ্কা দেয়।’
‘ইলেকশন (নির্বাচন) যদি প্রশ্নবোধক হয়, তাহলে আপনার গণভোটের চার্টারও প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে,’ সতর্ক করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের কি আলাদাভাবে দুটি নির্বাচন করার আর্থিক সক্ষমতা আছে কি না—এ প্রশ্নে জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে...এটা আমি মনে করি মোটেই খুব বড় খরচ নয়, বরং জাতিকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।’
বিএনপির ভিন্ন অবস্থান নিয়ে সৈয়দ তাহের বলেন, ‘মূলত একটি দলই কিছুটা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে—বিএনপি। তারা মানুষকে বলছে সংস্কার মানে কিন্তু আবার অফিশিয়ালি নোট অব ডিসেন্ট দিচ্ছে। তাহলে জাতিকে পরিষ্কার করার জন্য তাদের বলতে হবে, মানে কি না।’
নোট অব ডিসেন্টকে অতটা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন না তিনি। তাহের বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট ইজ নট আ পার্ট অব ডিসিশন—ইউ মাস্ট মেক শিউর। কনসাস কমিটির পক্ষ থেকে যদি কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকত, তাহলে সেটা আমরা গণভোটে সাবজেক্ট করে মানুষের কাছে নিয়ে যেতাম...কিন্তু একটা দলের নোট অব ডিসেন্ট তো জাতির ভোটের ম্যান্ডেটের জন্য কোনো সাবজেক্ট হতে পারে না।’
উদাহরণ টেনে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘যেমন হাইকোর্টে তিনজনের বেঞ্চে দুজন যদি রায় দেন, সেটাই রায়। আরেকজন নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারেন, সেটা ইতিহাসে রেকর্ড থাকবে। সুতরাং নোট অব ডিসেন্ট মানে সিদ্ধান্ত নয়।’