যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির একটি সামরিক বিস্ফোরক উৎপাদন প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৬ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের।

শুক্রবারের ওই বিস্ফোরণে ১৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে প্রথমে ধারনা করা হয়েছিল। তবে তদন্তে জানা যায়, যাদের গাড়ি ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ঘটনাস্থলে পাওয়া গিয়েছিল, তাদের মধ্যে দুজন বিস্ফোরণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন হামফ্রিস কাউন্টির শেরিফ ক্রিস ডেভিস।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্প-সিসির সভাপতিত্বে সোমবার মিসরে ‘গাজা শান্তি সম্মেলন’

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন: সরকারি কর্মী ছাঁটাই শুরু ট্রাম্প প্রশাসনের

টেনেসির ন্যাশভিলের দক্ষিণ-পশ্চিমে স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৮টায় সামরিক বিস্ফোরক উৎপাদনে বিশেষজ্ঞ সংস্থা অ্যাকুরেট এনার্জেটিক সিস্টেমস, এলএলসি-তে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তা কয়েক মাইল দূর থেকেও অনুভূত হয়। বিস্ফোরণে এলএলসির একটি ভবন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তাধীন রয়েছে।

শেরিফ ডেভিস জানান, নিহত ১৬ জনের পরিবারকে ইতিমধ্যে খবর দেওয়া হয়েছে। আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, আমরা তাদের ‘ভিকটিম’ বলব, কিন্তু তারা আমাদের প্রিয়জন।

শনিবার সকালে ডেভিস আরো নিশ্চিত করেন যে উদ্ধার অভিযান এখন উদ্ধার নয়, বরং মরদেহ শনাক্তকরণ ও পুনরুদ্ধারের পর্যায়ে পৌঁছেছে।

নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হবে।

তদন্তকারীরা, যার মধ্যে এফবিআই এবং অ্যালকোহল, টোব্যাকো, ফায়ারআর্মস অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস ব্যুরোর (এটিএফ) এজেন্টরাও রয়েছেন, তারা বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করছেন। এলাকাজুড়ে বিস্ফোরক এবং অন্যান্য অস্ত্রসামগ্রী থাকায় তদন্ত ও অনুসন্ধান কার্যক্রম অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। 

শেরিফ ডেভিস বলেন, প্রায় ৩০০ জন বিশেষজ্ঞ ‘ধীর, পদ্ধতিগত পদ্ধতিতে’ কাজ করছেন, কারণ তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও অস্থির বিস্ফোরক পদার্থ মোকাবিলা করছেন। 

তিনি বলেন, “এটি দুর্ঘটনার মতো কাজ করার মতো নয়। এটি টর্নেডোর মতো কাজ করার মতো নয়। আমরা বিস্ফোরণের সঙ্গে মোকাবিলা করছি। আমি এই মুহূর্তে বলব, আমরা ধ্বংসাবশেষ মোকাবেলা করছি।”

এটিএফের বিশেষ এজেন্ট গাই ম্যাককরমিক জানান, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ এবং বোমা প্রযুক্তিবিদরা জাতীয় এটিএফ তদন্তকারীদের জন্য এলাকাটি নিরাপদ করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট তাপ এবং চাপের কারণে দৃশ্যের প্রকৃতি পরিবর্তিত হতে পারে।

শেরিফ ডেভিসের মতে, আরো কোনো বিস্ফোরণের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য কয়েক দিন, সপ্তাহ, এমনকি মাসও লাগতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ব স ফ রক তদন ত করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়েতে মাইক বাজানোয় কনে-মা-বাবাকে বেত্রাঘাত, জরিমানা

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিয়ে বাড়িতে মাইক বাজানোর অপরাধে বেত্রাঘাতের শিকার হলেন বিয়ের কনে ও তার মা-বাবাসহ পরিবারের সকলে। ক্ষমা চেয়েও পরিত্রাণ মেলেনি। মোটা অঙ্কের টাকাও জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানার টাকা দিতে না পারায় মেয়ের জামাইয়ের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশা আটকে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারটি অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

ধামরাইয়ে ৪টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান, জরিমানা

ময়মনসিংহে ক্লিনিকে অভিযানে কারাদণ্ড-জরিমানা 

বুধবার (২৬ নভেম্বর) হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সালিশে এই রায় দেওয়া হয়। 

কনের বাবা মো. শাহজাহান বলেন, ‘‘আমি গরিব মানুষ। আমার মেয়ের বিয়েতে শখ করে মাইক বাজিয়েছি। এর জন্য স্থানীয় আফছার, ছারোয়ার ও মালেক আমাদের পরিবারের সবাইকে মারধর করে। তারা এ জন্য সালিশ বাসায়। আলাউদ্দিন মাঝি, তছলিম, আনোয়ার মাঝি, সেন্টু ও রফিকসহ স্থানীয় কয়েকজন সালিশে আমাদের সবাইকে ১৫টি করে বেত্রাঘাতের রায় দেন। আমি এবং পরিবারের সবাই বার বার ক্ষমা চাওয়ার পরও তারা কর্ণপাত করেনি। সবাইকে বেত্রাঘাত করার পর তারা ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে।’’

তিনি বলেন, ‘‘জরিমানার টাকা জোগাড় করতে না পারায় আফছার আমার মেয়ের জামাইয়ের অটোরিকশা আটকে রেখেছে। সমাজে অনেকের কাছে গিয়েছি, কোনো বিচার পাইনি।’’ 

সালিশে উপস্থিত থাকা আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, ‘‘মাইক বাজানোর বিষয়ে আফছার জিজ্ঞেস করার কারণে হট্টগোল বাধে। ওখানে আফছারের ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে গিয়েছে। যদিও আমরা তার সঠিক প্রমাণ পাইনি। তবুও আমাদের মধ্যে একজন সালিশদার এই টাকার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ হাজার টাকার রায় দিয়েছেন।’’ 

বেত্রাঘাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘সালিশের মধ্যে মহিলাদের বেত্রাঘাত করা হয়নি। পুরুষদের করা হয়েছে। মহিলাদের শাসন করার জন্য ঘরের মুরুব্বি হিসেবে শাহাজান নামে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিই ঘরে নারীদের বেত্রাঘাত করেছেন।’’ 

সাগরিয়া ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘‘বিয়েতে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমি উভয়পক্ষকে বলেছি, আইনি ব্যবস্থা নিতে। তারা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করায় আমি আর সেখানে থাকিনি। এরপর তারা আমাকে আর কিছু জানায়নি।’’

এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

ঢাকা/সুজন/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ