গাজায় হামাস ও দুগমুশ গোত্রের সংঘর্ষে নিহত ২৭
Published: 13th, October 2025 GMT
গাজা সিটিতে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী এবং দুগমুশ গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এটি সম্প্রতি ইসরায়েলের বড় সামরিক অভিযানের পর এই অঞ্চলে সংঘটিত সহিংস অভ্যন্তরীণ সংঘাতগুলোর মধ্যে অন্যতম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা সিটিতে জর্ডান হাসপাতালের কাছে হামাস যোদ্ধারা দুগমুশ গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে গুলি বিনিময় করেছে।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্প-সিসির সভাপতিত্বে সোমবার মিসরে ‘গাজা শান্তি সম্মেলন’
ইসরায়েলি সেনারা মেশিনগান নিয়ে সেলে ঢুকে যেত: শহিদুল আলম
হামাস পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “‘নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা শহরের ভেতরে অবস্থানরত সশস্ত্র গোষ্ঠীর একদল সদস্যকে ঘিরে ফেলে এবং তাদের আটক করার জন্য তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত হয়।”
তিনি জানান, সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্য নিহত হয়েছেন। দুগমুশ গোত্রের ১৯ সদস্যকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা মতে, তেল আল-হাওয়ার একটি আবাসিক ভবনে দুগমুশ যোদ্ধারা অবস্থান করছেন, এমন খবর পেয়ে হামাসের তিন শতাধিক যোদ্ধা সেখানে অভিযানে যান। এ সময় দুগমুশ সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।
দুই পক্ষের তীব্র গোলাগুলির মধ্যে ভয় আর আতঙ্কে অসংখ্য পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে, যাদের অনেকেই ইসরায়েলি যুদ্ধের সময় একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
দুগমুশ গাজার সবচেয়ে প্রভাবশালী গোত্রগুলোর একটি। হামাসের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক। এর আগেও তাদের সশস্ত্র সদস্যরা একাধিকবার হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন।
হামাস-পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। একইসঙ্গে সতর্ক করে বলেছে, প্রতিরোধ আন্দোলনের বাইরে যেকোনো সশস্ত্র কার্যকলাপ কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।
উভয় পক্ষই সংঘর্ষের জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে।
হামাস এর আগে বলেছিল, দুগমুশ বন্দুকধারীরা তাদের দুই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং আরো পাঁচজনকে আহত করেছে, যার ফলে গোষ্ঠীটি তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।
তবে, দুগমুশ গোত্রের একটি সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছে, হামাস বাহিনী একটি ভবনে এসেছিল যা একসময় জর্ডান হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো, যেখানে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় আল-সাব্রা পাড়ায় বাড়িঘর ধ্বংস হওয়ার পর পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।
সূত্রটি দাবি করেছে, হামাস তাদের বাহিনীর জন্য একটি নতুন ঘাঁটি স্থাপনের জন্য পরিবারটিকে ভবন থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সূত্র অনুসারে, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা গাজার অঞ্চলগুলাতে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের জন্য হামাস তার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় সাত হাজার সদস্যকে মোতায়েন করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র হামাস ইউনিট ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে, কিছু বেসামরিক পোশাক পরে এবং অন্যরা গাজা পুলিশের নীল পোশাক পরে।
হামাসের মিডিয়া অফিস গাজার রাস্তায় যোদ্ধা মোতায়েন করার খবর অস্বীকার করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ গম শ গ ত র র সশস ত র র সদস য র জন য স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়েতে মাইক বাজানোয় কনে-মা-বাবাকে বেত্রাঘাত, জরিমানা
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিয়ে বাড়িতে মাইক বাজানোর অপরাধে বেত্রাঘাতের শিকার হলেন বিয়ের কনে ও তার মা-বাবাসহ পরিবারের সকলে। ক্ষমা চেয়েও পরিত্রাণ মেলেনি। মোটা অঙ্কের টাকাও জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানার টাকা দিতে না পারায় মেয়ের জামাইয়ের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশা আটকে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারটি অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে ৪টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান, জরিমানা
ময়মনসিংহে ক্লিনিকে অভিযানে কারাদণ্ড-জরিমানা
বুধবার (২৬ নভেম্বর) হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সালিশে এই রায় দেওয়া হয়।
কনের বাবা মো. শাহজাহান বলেন, ‘‘আমি গরিব মানুষ। আমার মেয়ের বিয়েতে শখ করে মাইক বাজিয়েছি। এর জন্য স্থানীয় আফছার, ছারোয়ার ও মালেক আমাদের পরিবারের সবাইকে মারধর করে। তারা এ জন্য সালিশ বাসায়। আলাউদ্দিন মাঝি, তছলিম, আনোয়ার মাঝি, সেন্টু ও রফিকসহ স্থানীয় কয়েকজন সালিশে আমাদের সবাইকে ১৫টি করে বেত্রাঘাতের রায় দেন। আমি এবং পরিবারের সবাই বার বার ক্ষমা চাওয়ার পরও তারা কর্ণপাত করেনি। সবাইকে বেত্রাঘাত করার পর তারা ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে।’’
তিনি বলেন, ‘‘জরিমানার টাকা জোগাড় করতে না পারায় আফছার আমার মেয়ের জামাইয়ের অটোরিকশা আটকে রেখেছে। সমাজে অনেকের কাছে গিয়েছি, কোনো বিচার পাইনি।’’
সালিশে উপস্থিত থাকা আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, ‘‘মাইক বাজানোর বিষয়ে আফছার জিজ্ঞেস করার কারণে হট্টগোল বাধে। ওখানে আফছারের ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে গিয়েছে। যদিও আমরা তার সঠিক প্রমাণ পাইনি। তবুও আমাদের মধ্যে একজন সালিশদার এই টাকার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ হাজার টাকার রায় দিয়েছেন।’’
বেত্রাঘাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘সালিশের মধ্যে মহিলাদের বেত্রাঘাত করা হয়নি। পুরুষদের করা হয়েছে। মহিলাদের শাসন করার জন্য ঘরের মুরুব্বি হিসেবে শাহাজান নামে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিই ঘরে নারীদের বেত্রাঘাত করেছেন।’’
সাগরিয়া ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘‘বিয়েতে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমি উভয়পক্ষকে বলেছি, আইনি ব্যবস্থা নিতে। তারা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করায় আমি আর সেখানে থাকিনি। এরপর তারা আমাকে আর কিছু জানায়নি।’’
এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/সুজন/বকুল