মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার গত বুধবার (৮ অক্টোবর) মিসরের শারম আল-শেখে হামাসের শীর্ষ নেতা, বিশেষ করে খালিল আল-হায়ার সঙ্গে বিরল এক বৈঠক করেছেন। ফিলিস্তিনি আন্দোলনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, এই বৈঠকই গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

পরদিন বৃহস্পতিবার ইসরায়েল, হামাস ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তিতে সই করেন। ওই চুক্তির মাধ্যমে গাজায় জাতিগত নিধন বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।

হামাস নেতাদের শঙ্কা ছিল, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল আবার গাজায় হামলা শুরু করতে পারে।

সূত্র জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত উইটকফ এবং কুশনার হামাস নেতাদের সঙ্গে এক বিরল বৈঠক করতে মিসরে উড়ে যান। ওই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করা।

মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে হামাসের এই বৈঠকের খবর প্রথম প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। তাঁদের প্রতিবেদনে বলা হয়, উইটকফ কাতার, মিসর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের বলেছেন, ট্রাম্প নিজেই এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গত বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা উইটকফের ভিলা (ফোর সিজনস হোটেলে) গিয়ে জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। তাঁরা প্রস্তাব দেন, মার্কিন দূতরা যেন সরাসরি হামাস নেতাদের সঙ্গে বসেন।

পরে উইটকফ ও কুশনার আরেকটি ভিলায় যান যেখানে তুরস্ক ও মিসরের গোয়েন্দা প্রধান, কাতারের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং হামাসের চারজন শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন হায়া। মাত্র তিন সপ্তাহ আগে দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

প্রায় ৪০ মিনিটের আলোচনায় উইটকফ হামাস নেতাদের বলেন, গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দীরা এখন আর ‘সম্পদ নয়, বরং বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে’। তাই প্রথম ধাপের চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার সময় হয়েছে এবং ‘সীমান্তের দুই পাশের মানুষকে ঘরে ফেরানো দরকার।’

হায়া জানতে চান, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে হামাসের জন্য কোনো বার্তা আছে কি না। জবাবে উইটকফ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বার্তা হলো, আপনাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করা হবে। তিনি তাঁর শান্তি পরিকল্পনার ২০টি শর্তের সব মানার পক্ষে আছেন এবং সেগুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।’

বৈঠক শেষে হামাস নেতারা মিসর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলাদা কক্ষে আলোচনা করেন। কিছুক্ষণ পর মিসরের গোয়েন্দা প্রধান হাসান রাশাদ তুর্কি ও কাতারি কর্মকর্তাদের নিয়ে ফিরে এসে উইটকফ ও কুশনারকে বলেন, ‘আমাদের বৈঠকের ভিত্তিতে চুক্তি হয়ে গেছে।’

ট্রাম্প প্রশাসন ও হামাসের মধ্যে ওই বৈঠক ছিল দ্বিতীয় বড় ধরনের সরাসরি যোগাযোগ। এর আগে গত মার্চে মার্কিন জিম্মি অ্যাডান আলেকসান্ডারকে মুক্ত করতে মার্কিন দূত অ্যাডাম বোয়েলার হামাস নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

হামাস নেতাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করলেন ট্রাম্প জামাতা ও মার্কিন দূত

মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার গত বুধবার (৮ অক্টোবর) মিসরের শারম আল-শেখে হামাসের শীর্ষ নেতা, বিশেষ করে খালিল আল-হায়ার সঙ্গে বিরল এক বৈঠক করেছেন। ফিলিস্তিনি আন্দোলনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, এই বৈঠকই গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

পরদিন বৃহস্পতিবার ইসরায়েল, হামাস ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তিতে সই করেন। ওই চুক্তির মাধ্যমে গাজায় জাতিগত নিধন বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।

হামাস নেতাদের শঙ্কা ছিল, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল আবার গাজায় হামলা শুরু করতে পারে।

সূত্র জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত উইটকফ এবং কুশনার হামাস নেতাদের সঙ্গে এক বিরল বৈঠক করতে মিসরে উড়ে যান। ওই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করা।

মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে হামাসের এই বৈঠকের খবর প্রথম প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। তাঁদের প্রতিবেদনে বলা হয়, উইটকফ কাতার, মিসর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের বলেছেন, ট্রাম্প নিজেই এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গত বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা উইটকফের ভিলা (ফোর সিজনস হোটেলে) গিয়ে জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। তাঁরা প্রস্তাব দেন, মার্কিন দূতরা যেন সরাসরি হামাস নেতাদের সঙ্গে বসেন।

পরে উইটকফ ও কুশনার আরেকটি ভিলায় যান যেখানে তুরস্ক ও মিসরের গোয়েন্দা প্রধান, কাতারের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং হামাসের চারজন শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন হায়া। মাত্র তিন সপ্তাহ আগে দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

প্রায় ৪০ মিনিটের আলোচনায় উইটকফ হামাস নেতাদের বলেন, গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দীরা এখন আর ‘সম্পদ নয়, বরং বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে’। তাই প্রথম ধাপের চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার সময় হয়েছে এবং ‘সীমান্তের দুই পাশের মানুষকে ঘরে ফেরানো দরকার।’

হায়া জানতে চান, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে হামাসের জন্য কোনো বার্তা আছে কি না। জবাবে উইটকফ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বার্তা হলো, আপনাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করা হবে। তিনি তাঁর শান্তি পরিকল্পনার ২০টি শর্তের সব মানার পক্ষে আছেন এবং সেগুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।’

বৈঠক শেষে হামাস নেতারা মিসর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলাদা কক্ষে আলোচনা করেন। কিছুক্ষণ পর মিসরের গোয়েন্দা প্রধান হাসান রাশাদ তুর্কি ও কাতারি কর্মকর্তাদের নিয়ে ফিরে এসে উইটকফ ও কুশনারকে বলেন, ‘আমাদের বৈঠকের ভিত্তিতে চুক্তি হয়ে গেছে।’

ট্রাম্প প্রশাসন ও হামাসের মধ্যে ওই বৈঠক ছিল দ্বিতীয় বড় ধরনের সরাসরি যোগাযোগ। এর আগে গত মার্চে মার্কিন জিম্মি অ্যাডান আলেকসান্ডারকে মুক্ত করতে মার্কিন দূত অ্যাডাম বোয়েলার হামাস নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ