শেরপুরে বালু উত্তোলন: ৯ জনকে কারাদণ্ড
Published: 13th, October 2025 GMT
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অপরাধে নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দিতা রানী ভৌমিক তাদের কারাদণ্ড দেন।
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠিতে ইলিশ ধরায় ৩ জেলের কারাদণ্ড
নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার, ৬ জেলেকে জরিমানা
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল কারাদণ্ডের তথ্য জানিয়েছেন।
ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘‘পরিবেশের বিপর্যয় রক্ষায় ইতোমধ্যে সরকারিভাবে বালুমহাল বন্ধ রাখা হয়েছে। এরপরও কেউ যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সাজাপ্রাপ্তদের শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আকতার হোসেন, মাহবুল আলম, আব্দুল মজিদ, রিপন মিয়া, রবিউল ইসলাম, হারুন আর রশিদ, মোস্তফা মিয়া, মামুন ও আছর উদ্দিন। রবিউল ইসলামকে দুই দিন, আছর উদ্দিনকে ২৫ দিন এবং অন্য ৭ জনকে ২০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে বালুমহাল বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি ঝিনাইগাতী উপজেলার কালাঘোষা ও গজনীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিল একটি অসাধু চক্র। সেই বালু উত্তোলনের পর ট্রলি, মাহিন্দ্রা, ঘোড়ার গাড়ি, ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানে করে বিভিন্ন স্থানে পাচার করছিল তারা। এরপর অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন।
ঢাকা/তারিকুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিকলে বাধা শান্তর চিকিৎসায় ইউএনওর সহায়তা
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে টাকার অভাবে শিকলবন্দী জীবন কাটছে ১৪ বছর বয়সী শান্তর। জন্মের পর থেকেই মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। পরিবার তাকে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করে। তবে অর্থ সংকটে নিয়মিত চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দিন–দিন অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। সে কারণে রাতে ঘরে, আর দিনে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে রাখতে বাধ্য হন অভিভাবকরা।
গত রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে শান্তর বাড়িতে যান নবাগত জেলা প্রশাসক মো. ইকবাল হোসেন। তিনি শিশুটির অবস্থা দেখে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে শান্তর বাড়িতে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করার জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা শান্তর বাবা জসীম উদ্দীনের হাতে তুলে দেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার পীযূষ কুমার, সমাজসেবা কর্মকর্তা জামশেদ আলী, মিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মারফত আফ্রিদি।
এ ব্যাপারে শান্তর পিতা জসিম উদ্দিন জানান, ২০১১ সালে জন্ম নেওয়ার পর শান্ত সাড়ে তিন বছর বয়সে নানা অস্বাভাবিক আচরণ ও অখাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেলে দীর্ঘ পাঁচ বছর চিকিৎসা চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
দারিদ্র্যের কারণে নিয়মিত ওষুধ কিনতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। কিছুটা ভালো হওয়ার পর আবার সমস্যার পুনরাবৃত্তি হলে ২০১৮ সালে ফের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেবারও পাঁচ বছর ধরে ওষুধ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ আসে। কিন্তু দৈনিক ১০০-২০০ টাকার ওষুধ বাবদ খরচ মেটানো তার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
জসিম আরো জানান, করোনাকালে গণমাধ্যমে শান্তর ভিডিও ভাইরাল হলে সেসময়ের পুলিশ সুপার তানভির আরাফাত চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে তিনি বদলি হলে চিকিৎসা থেমে যায়। বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার ২ হাজার ৬০০ টাকা তিন মাস পরপর পেলেও তা খাবার, কাপড় ও পরিচর্যায় শেষ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, “গত ২৪ নভেম্বর ডিসি স্যার শান্তকে দেখতে আসেন এবং চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। গতকাল ইউএনও স্যার ১৫ হাজার টাকা প্রদান করলেন এবং শান্তর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।”
মিরপুরের ইউএনও মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “শান্তকে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতার কারণে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসার পর তিনি নিজে গিয়ে শিশুটির খোঁজ খবর নেন। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা প্রদান করি। সরকারি সকল সহযোগিতা থেকে শান্তর চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস