বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্র উত্তরণের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্রই হচ্ছে একমাত্র ব্যবস্থা যে ব্যবস্থায় সব ধরনের মানুষের বিকাশের সুযোগ করে দেয়।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানা বিএনপির এক বর্ধিত সভায় যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফা দেখেছেন। সেই ৩১ দফায় বলা আছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে যে ধারাগুলো আছে, অ্যামেন্ডমেন্ট (সংশোধন) করব। সংসদ সদস্যদের সব স্বাধীনতা থাকবে। শুধু রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা—এই বিষয়গুলোয় একমত হতে না পারলেও দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব না। বাকি সব বিলেই সদস্যদের স্বাধীনতা থাকবে, তাঁরা কথা বলতে পারবেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যে গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করা, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, সেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছি। আশা করছি, সবাই মিলে গণতন্ত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই সময়টাতে আমাদের রাজনৈতিক কোনো ভুল পদক্ষেপের কারণে আমরা যেন আবার ফ্যাসিস্টদের নির্যাতনের কবলে না পড়ি। অর্থাৎ ফ্যাসিস্টদের আমরা আর ফেরত দেখতে চাই না।’ কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে যারা আমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই অমত পোষণ করেছেন, এটা হতেই পারে। তার জন্য সেটাকে লক্ষ্য করে রাস্তায় আন্দোলন, এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যে দাবিগুলো তারা তুলছেন, সেই দাবিগুলো নির্বাচনের পরে যে পার্লামেন্ট গঠিত হবে, সেই পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’

সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংবাদকর্মী ভাইদের কাছে একটাই অনুরোধ জানাব, আপনারা রাষ্ট্রের একটা অন্যতম স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটা খুঁটি হচ্ছেন আপনারা। আপনাদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এবং বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র টিকে থাকুক। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের নিয়ম, সেখানেই গণতন্ত্রের সাফল্য। আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের সংবাদমাধ্যমের কাছে, শুধু চটকদার বা বেশি বিক্রি হবে—এ ধরনের সংবাদ ছাপিয়ে আমরা যেন মূল জায়গা থেকে সরে না যাই। আরেকটি বড় মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। এ মিডিয়াতে অনেক অপপ্রচার হয়। এখানে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক কিছু প্রচার করা হয়, যাতে সত্য থাকে না। সেগুলোকে বাছাই করে রাজনৈতিক কর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র র র জন ত ক আম দ র স ব এনপ র ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের দেওয়া চিঠি পরীক্ষা করে দেখছে ভারত: রণধীর জয়সওয়াল

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের দেওয়া চিঠি পরীক্ষা করে দেখছে ভারত। আজ বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ‘চলমান বিচারিক ও অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অনুরোধটি (চিঠি) পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আমরা শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা অব্যাহতভাবে সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’

নয়াদিল্লিকে দেওয়া চিঠির বিষয়ে আজ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে পাঠানো চিঠির জবাব এখনো আসেনি। আজ দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ খবর জানান।

কোন প্রক্রিয়ায় ভারতে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নোট ভারবাল (কূটনৈতিক পত্র) আমাদের মিশনের মাধ্যমে ওদের (ভারতের) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কোনো উত্তর আসেনি। এত তাড়াতাড়ি উত্তর আশাও করি না আমরা।’

গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ দুই দফায় চিঠি দিলেও সাড়া দেয়নি ভারত। এর মধ্যে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ওই আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

এরপর শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠিতে বলা হয়, বিস্তারিত বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছেন। আদালত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে আবার অনুরোধ জানাচ্ছে।

এই চিঠির কোনো জবাব নয়াদিল্লি না দিলেও শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণার পর একটি বিবৃতি দিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছিল, ‘নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’

আরও পড়ুনশেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে লেখা চিঠির জবাব এখনো আসেনি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময়: মির্জা ফখরুল
  • ভিন্নমত পোষণ করলেই তাকে শত্রু মনে করা হয়: ফখরুল
  • বাবা হলেন নিলয় আলমগীর
  • মুক্ত দেশ না হয়েও চীন কীভাবে উদ্ভাবনে এগিয়ে
  • ডা. মিলন শহীদ হলো, গণতন্ত্র এল কি?
  • হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের দেওয়া চিঠি পরীক্ষা করে দেখছে ভারত: রণধীর জয়সওয়াল
  • প্রান্তিক মানুষের অন্তর্ভুক্তি গণতন্ত্রের বড় চ্যালেঞ্জ: হোসেন জিল্লুর রহমান