গণতন্ত্র উত্তরণের পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
Published: 14th, October 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্র উত্তরণের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্রই হচ্ছে একমাত্র ব্যবস্থা যে ব্যবস্থায় সব ধরনের মানুষের বিকাশের সুযোগ করে দেয়।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানা বিএনপির এক বর্ধিত সভায় যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফা দেখেছেন। সেই ৩১ দফায় বলা আছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে যে ধারাগুলো আছে, অ্যামেন্ডমেন্ট (সংশোধন) করব। সংসদ সদস্যদের সব স্বাধীনতা থাকবে। শুধু রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা—এই বিষয়গুলোয় একমত হতে না পারলেও দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব না। বাকি সব বিলেই সদস্যদের স্বাধীনতা থাকবে, তাঁরা কথা বলতে পারবেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যে গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করা, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, সেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছি। আশা করছি, সবাই মিলে গণতন্ত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই সময়টাতে আমাদের রাজনৈতিক কোনো ভুল পদক্ষেপের কারণে আমরা যেন আবার ফ্যাসিস্টদের নির্যাতনের কবলে না পড়ি। অর্থাৎ ফ্যাসিস্টদের আমরা আর ফেরত দেখতে চাই না।’ কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে যারা আমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই অমত পোষণ করেছেন, এটা হতেই পারে। তার জন্য সেটাকে লক্ষ্য করে রাস্তায় আন্দোলন, এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যে দাবিগুলো তারা তুলছেন, সেই দাবিগুলো নির্বাচনের পরে যে পার্লামেন্ট গঠিত হবে, সেই পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’
সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংবাদকর্মী ভাইদের কাছে একটাই অনুরোধ জানাব, আপনারা রাষ্ট্রের একটা অন্যতম স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটা খুঁটি হচ্ছেন আপনারা। আপনাদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এবং বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র টিকে থাকুক। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের নিয়ম, সেখানেই গণতন্ত্রের সাফল্য। আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের সংবাদমাধ্যমের কাছে, শুধু চটকদার বা বেশি বিক্রি হবে—এ ধরনের সংবাদ ছাপিয়ে আমরা যেন মূল জায়গা থেকে সরে না যাই। আরেকটি বড় মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। এ মিডিয়াতে অনেক অপপ্রচার হয়। এখানে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক কিছু প্রচার করা হয়, যাতে সত্য থাকে না। সেগুলোকে বাছাই করে রাজনৈতিক কর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণতন ত র র র জন ত ক আম দ র স ব এনপ র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপি গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে না, প্রত্যাশা সিইসির
শাপলা প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে এনসিপি গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এ ছাড়া নির্বাচনের সময় ফ্যাক্টচেক (যাচাই–বাছাই) না করে কোনো সংবাদ পরিবেশন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম বিভাগের সব জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংস্থা এবং নির্বাচনসংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সিইসি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচনের পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। পরিষ্কার ও স্বচ্ছ নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, এবার লুকিয়ে, রাতের আঁধারে কোনো ভোট হবে না।
এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নাসির উদ্দীন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে এনসিপির ধারণা আছে। তাই গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে এনসিপি বাধা সৃষ্টি করবে না বলেই প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, ‘যারা এনসিপির নেতৃত্বে আছেন, তাঁরা ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান চলাকালে সম্মুখ সারিতে থেকে আন্দোলন করেছেন। তাঁরা গণতন্ত্রায়ণের পথে বাধা সৃষ্টি করবেন না—সেটা আমি বিশ্বাস করি।’
সিইসি বলেন, ‘কোনো দল যখন নিবন্ধন পায়, আমাদের যে নির্ধারিত প্রতীকের তালিকা, সেখান থেকে তাকে প্রতীক নিতে হয়। যেহেতু শাপলা আমাদের তালিকায় নেই, তাই দিতে পারিনি। এখন পর্যন্ত তালিকার বাইরে কাউকে প্রতীক দেওয়া হয়নি।’
নতুন করে প্রতীক যোগ করতে অসুবিধা আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ‘কোনো অসুবিধা নেই’ বলেও জানান সিইসি।