জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব
Published: 11th, January 2025 GMT
জ্বালানি তেলের দাম স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নির্ধারণ করার নিয়ম চালু হওয়ার পর জনসাধারণের প্রত্যাশা ছিল আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় হলে জ্বালানির দাম অনেক কমে আসবে। দুর্ভাগ্যবশত সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায় জ্বালানি তেলের দামে যথেষ্ট পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়নি। বরং এ সময়কালে জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুনাফা করতে দেখা গেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এ পর্যন্ত মোট তিনবার জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকার আইনি পরিবর্তনের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব বিইআরসির পরিবর্তে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে প্রদান করে। প্রথম দফায় গত বছরের ৩১ আগস্ট অকটেন ও পেট্রলের দাম লিটারে ছয় টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় গত ৩১ অক্টোবর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম শূন্য দশমিক ৫ টাকা কমিয়ে আনা হয়, যদিও পেট্রল ও অকটেনের দাম অপরিবর্তিত থাকে।
সর্বশেষ ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১ টাকা কমানো হয়েছে। সিপিডির (২০২৪) পরিচালিত গবেষণামতে, এ ধরনের মূল্য সমন্বয় বাজারভিত্তিক মূল্যকাঠামোর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সিপিডির মতে, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব।
গত বছরের মার্চ থেকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জ্বালানি তেল, বিশেষত ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, কেরোসিন ও জেট ফুয়েলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণী ব্যবস্থা চালু করেছে। আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী জ্বালানি খাতে সরকারের আর্থিক দায় কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারের আর্থিক দায়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) এক দশক ধরে জ্বালানি তেলের দাম প্রশাসিত মূল্য (অ্যাডমিনিস্টার্ড প্রাইসিং) ব্যবস্থায় নির্ধারণকে দায়ী করা হয়।
প্রশাসিত নীতির অধীন জ্বালানির দাম নির্ধারণ করার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের দামের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশের বাজারে তা পরিলক্ষিত হতো না। দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অধিক দামে বিপিসি স্থানীয় বাজারে তেল বিক্রি করেছে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে। প্রতি লিটারে সর্বনিম্ন ২৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৪ টাকা পর্যন্ত দামের তারতম্য লক্ষ করা গেছে।
বিপিসি ও বিইআরসির গৃহীত জ্বালানি তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণের সূত্রগুলো সংশোধন প্রয়োজন। ফলে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমানো সম্ভব হবে। প্রচলিত উপায়ে ভোক্তার কাঁধে বাড়তি ব্যয়ের দায় চাপিয়ে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের নামে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য।আইএমএফের শর্তাবলির অধীন জ্বালানি খাতে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য মূল্য নির্ধারণের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ইতিবাচক হলেও তা ত্রুটিমুক্ত নয়। বিপিসি কর্তৃক ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণী পদ্ধতির পাশাপাশি বিইআরসি কর্তৃক জ্বালানির মূল্য নির্ধারণী পদ্ধতি আগে থেকেই বিদ্যমান। যদিও বিইআরসির পদ্ধতিটি এখনো চালু হয়নি। তবে ভবিষ্যতের নিরিখে বিইআরসি মূল্য নির্ধারকের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে বিইআরসি কর্তৃক গৃহীত পদ্ধতির গুরুত্ব বাড়বে।
লক্ষণীয়, ২০১৫ সালের পর বিপিসিকে কোনো সরকারি ভর্তুকি বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন হয়নি। এমনকি কোভিড–পরবর্তী সময়কালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যখন বিপিসি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তখনো প্রতিষ্ঠানটিকে কোনো ভর্তুকি বা ঋণ দেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। বিপিসি কয়েক বছর ধরে ক্রমবর্ধমানভাবে মূল্য সমন্বয় এবং লাভের মাধ্যমে তার ক্ষতি সামঞ্জস্য করে আসছে। এমনকি বিপিসি বেশ কয়েক বছর ধরে আমদানি খরচ ও জ্বালানির উৎপাদন খরচের তুলনায় উচ্চ মার্জিনে মূল্য নির্ধারণ করে লাভজনক অবস্থানে আছে। ভোক্তাদের ওপর বোঝা চাপিয়ে বিপিসির ঊর্ধ্বমুখী মূল্য সংশোধনের মাধ্যমে ভর্তুকি কমানোর যুক্তি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিপিসি বর্তমানে যে পদ্ধতি ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্থানীয় বাজারমূল্য নির্ধারণ করে থাকে, সেই পদ্ধতির কিছু গঠনগত ত্রুটি রয়েছে। যেমন গত বছর মার্চ থেকে জুন মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কিছুটা নিম্নগামী হলেও বাংলাদেশের বাজারে তা বেড়েছে। এর কারণ, দাম নির্ধারণের স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করার পদ্ধতিতে এক্সচেঞ্জ রেটের (ডলার-টাকা বিনিময় মূল্য) সমন্বয় করার কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে গত বছর মার্চ থেকে জুনে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে ডলারের দাম বাড়ায় স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পায়।
বিপিসি ও বিইআরসি কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতিগুলোর একটি বড় পার্থক্য দেখা যায় জ্বালানি খাতের বিভিন্ন সেবায় আরোপিত কর ও ভ্যাটের প্রয়োগ ও মাত্রার ক্ষেত্রে। বিপিসির পদ্ধতিতে যেখানে ৬ ধাপে কর ও ভ্যাট আরোপ করা হয়, সেখানে বিইআরসি প্রণীত পদ্ধতিতে মাত্র ২ ধাপে কর ও ভ্যাট আরোপের কথা বলা আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একই নীতিমালার অধীন দুই ভিন্ন ধরনের কর-ভ্যাট ব্যবস্থা বিপিসির পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এ ছাড়া বিপিসির মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিতে বিপিসির নিজস্ব মার্জিন হিসেবে ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়, যা বিইআরসি প্রণীত পদ্ধতিতে ধরা হয়নি। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিইআরসিকে, তবু মন্ত্রণালয় নিজেই এই দায়িত্ব পালন করে আসছে।
বিপিসি ও বিইআরসি প্রণীত পদ্ধতিতে প্রতি লিটারে ১০ থেকে ২০ টাকার মতো পার্থক্য থাকার কথা, কিন্তু বিইআরসি দায়িত্ব গ্রহণের পরও জ্বালানি তেলের দাম খুব বেশি কমেনি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিপিডি একটি বাজারভিত্তিক মূল্যব্যবস্থা নির্ধারণের পদ্ধতি নির্ণয়ের ওপর গবেষণা করে। সিপিডি প্রস্তাবিত মূল্য নির্ধারণী পদ্ধতিতে আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়েছে। সিপিডির প্রস্তাবে বাজারভিত্তিক মূল্যব্যবস্থার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের চাহিদা, ক্রয়ক্ষমতা এবং সরবরাহকারীদের খরচ, উৎপাদন খরচ, আমদানি খরচ, অর্থাৎ গ্রাহক ও সরবরাহকারী—একটি বাজারের দুই অংশগ্রহণকারীকেই বিবেচনায় নেওয়া হয়। কিন্তু বিপিসি ও বিইআরসি কর্তৃক ব্যবহৃত পদ্ধতিতে শুধু সরবরাহকারীদের দিকটিই বিবেচনায় নেওয়া হয়, যাতে জ্বালানি তেলের দাম শুধু সরবরাহকারীদের স্বার্থই পূরণ করে।
স্পষ্টত, সিপিডির প্রস্তাবিত মূল্য নির্ধারণী পদ্ধতিতে বিইআরসিকে বাজারের রেগুলেটর হিসেবে ধরা হয়েছে। সিপিডির প্রস্তাবিত মূল্যে এক্সচেঞ্জ রেটের ওঠানামার কারণে মূল্যের ওপর হওয়া প্রভাবকে প্রশমিত করার পদ্ধতিও বিবেচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই পদ্ধতিতে এমনভাবে মূল্য নির্ধারণ করা হয়, যেন গ্রাহকের আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর কোনো ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে বা নিতান্তই গুরুতর অবস্থায় স্বল্প পরিসরে ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
২০২৪ সালের জুনের তথ্য অনুযায়ী, সিপিডির প্রস্তাবিত মূল্যে বিপিসির অনুসৃত পদ্ধতিতে কর-ভ্যাট, বিপিসির মার্জিন ও বাড়তি খরচ ইত্যাদি ধরার পরও প্রতি লিটারে অকটেন ও ডিজেলে ৬ টাকা, পেট্রলে ১০ টাকা কমানো সম্ভব ছিল। যদিও বিইআরসি প্রণীত জ্বালানি তেলের দাম বিপিসির তুলনায় কম, বিইআরসির পদ্ধতির তুলনায় সিপিডির প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটার পেট্রলে আরও ১৫ টাকা কমানো সম্ভব। তথ্যের অপ্রতুলতার কারণে অন্য জ্বালানি তেলের দামের হিসাব বিইআরসির সূত্র অনুযায়ী নির্ণয় করা যায়নি।
সুতরাং বিপিসি ও বিইআরসির গৃহীত জ্বালানি তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণের সূত্রগুলো সংশোধন প্রয়োজন। ফলে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমানো সম্ভব হবে। প্রচলিত উপায়ে ভোক্তার কাঁধে বাড়তি ব্যয়ের দায় চাপিয়ে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের নামে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য।
জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণী পদ্ধতি সংশোধিত হলে, মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় গণশুনানির ব্যবস্থা না হলে এবং তা বিইআরসি কর্তৃক বাস্তবায়ন হলে ন্যায্যমূল্যে জ্বালানি তেল ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। জ্বালানি তেলের নিম্নমুখী মূল্যের সমন্বয় সামগ্রিক পণ্য উৎপাদন ব্যয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এমনকি বিদ্যুতের দাম কমাতেও ভূমিকা রাখবে।
● খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, হেলেন মাশিয়াত ও ফয়সাল কাইয়ূম: লেখকেরা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি স্টাডিজে কর্মরত
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।