চট্টগ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকেল ৪টার দিকে নগরীর ষোলশহর স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নগর ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সহসাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ওরফে বার্মাইয়্যা সাইফুল ও পাঁচলাইশ থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাইফুলের লোকজন অতর্কিত দলবল নিয়ে ষোলশহর এলাকায় যান। খবর পেয়ে সেখানে যান শহীদুল ও তাঁর সমর্থকরা। আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে আসা সাইফুলের লোকজন লাঠি, রামদা নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজন নারী ও এলাকার সাধারণ মানুষও রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

তারা হলেন– মিজানুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, লুৎফুর রহমান, ফয়জুন নেছা ও লুৎফুর নেছা। এর মধ্যে শহীদুলের পিঠে এমনভাবে দায়ের কোপ মারা হয়, তাতে তার পিঠ ভাগ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

জানা গেছে, ষোলশহর এলাকায় জুয়ার আসর বসানোসহ চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করছিলেন সাইফুল। তবে এ নিয়ে তাঁকে বাধা দিয়ে আসছিলেন শহীদুল ও এলাকার লোকজন। সবশেষ আজ মুখোমুখি হয়ে পড়েন তারা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করলেও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। 

নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওসি মো.

সোলায়মান সমকালকে বলেন, ষোলশহর এলাকায় জুয়ার আসর বসে। এলাকার লোকজনের সহায়তায় আমরা এগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে দু’পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, হামলার ঘটনায় পাঁচজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপ ও হামলার চিহ্ন রয়েছে। 

এ ঘটনায় সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

তবে তাঁর ভাই পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সবুজ সমকালকে বলেন, আমার ভাইয়ের স্বভাব ভালো না। তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।

এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ