ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ এসআইরা
Published: 13th, January 2025 GMT
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আবারও সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শকরা (এসআই)। বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে তারা দাঁড়িয়ে আছেন। দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস না পেলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা বলেন, ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। আমাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পাওয়ায় আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মিনহাজ নামে এক সদস্য বলেন, খুবই তুচ্ছ অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ একাডেমি সারদার ইতিহাসে একসঙ্গে এত মানুষের অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। অন্যায় করা হয়েছে। চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা বলে জানান তিনি।
আরেক সদস্য বলেন, ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করি। এক বছর ট্রেনিং শেষে ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর অব্যাহতি দেওয়া হয়। বলা হয়, আমি ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হবো তখনই বাদ দেওয়া হলো। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।
ডিএমপির সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, সকাল থেকে অব্যাহতি পাওয়া পুলিশ সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এতে সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।