পাকিস্তানি মা, ভারতীয় সন্তান: মায়ের সঙ্গে থাকা হচ্ছে না ৯ মাসের শিশু আজলানের
Published: 1st, May 2025 GMT
বিদায়বেলা। ভারত-পাকিস্তান চেকিং পয়েন্ট। ভারতীয় স্বামী, স্ত্রী পাকিস্তানি। সায়রা ও ফারহানের নয় মাসের সন্তান আজলান। শিশুটি জন্মসূত্রে ভারতীয়। কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পাকিস্তানি পাসপোর্টধারীদের ছাড়তে হচ্ছে ভারতীয় ভূখণ্ড। ফলে স্বামী ও নয় মাসের সন্তানকে ছেড়ে নিজ দেশে ফিরতে হচ্ছে সায়রাকে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভারত-পাকিস্তানের আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্তের চেকিং পয়েন্টের ওই ঘটনা যেন সিনেমার দৃশ্যকে হার মানায়। সায়রা তখনো একহাতে স্বামী ফারহানের বাহু আঁকড়ে আছেন। আরেক হাতে শিশু আজলান। সবুজ পাসপোর্টধারী সায়রা চেকিং পয়েন্ট পার হতেই নিরাপত্তাকর্মীরা নীল পাসপোর্টের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন- ‘বাচ্চা যাবে না, ম্যাডাম।’ ছোট্ট এই বাক্যটিই নির্ধারণ করে দিল- মা ও সন্তানের আলাদা গন্তব্য।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর তলানিতে ঠেকেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। হামলার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করা হচ্ছে।যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে আসছে। তারপরও পরস্পরকে লক্ষ্য করে নানা বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি নিয়মিত চলছে হুমকি-ধমকি। এমন পরিস্থিতিতে দেশ দুটির নাগরিকদের জাত, ধর্ম, বর্ণ কিংবা বয়স ছাপিয়ে পরিচয় হয়ে উঠেছে নীল আর সবুজ পাসপোর্ট। দুগ্ধপোষ্য আজলানকে ওই নীল পাসপোর্টের কারণেই যেন আটকে দেওয়া হলো সীমান্তে।
তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমের পাকিস্তানের করাচির মেয়ে সায়রার সঙ্গে নয়াদিল্লির ফারহানের প্রেম হয়। এরপর বিয়ে। সায়রা চলে আসেন নয়াদিল্লিতে। ভালোই চলছিল সায়রা-ফারহানের সংসার। ঘর আলো করে আসে ফুটফুটে ছেলেশিশু। কিন্তু কাশ্মীর হামলার জেরে যেন মেঘ করেছে তাদের ভালোবাসার আকাশে। ইচ্ছে ও অধিকার দুইই আছে কিন্তু একসাথে থাকা হচ্ছে না দম্পতির। যার নির্মম শিকার অবুঝ শিশুটিও। সীমান্তের নিয়মের কাছে হার মেনে অশ্রুসিক্ত সায়রা গেলেন করাচির পথে। বাবার সাথে আজলানকে ধরতে হলো নয়াদিল্লির গাড়ি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস