রংপুরে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) মতবিনিময় সভার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মুজিববর্ষের লোগো প্রদর্শন করায় হট্টগোল হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা ওই সভা বর্জন করায় জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে সভা স্থগিত ঘোষণা করেন। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, প্রিপেইড মিটার স্থাপন ইস্যুতে নেসকোর সঙ্গে গ্রাহক ও সংশ্লিষ্টদের মতবিনিময় সভা আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সভা শুরু হলে নেসকো কর্মকর্তারা কিছু পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করেন। তবে এতে মুজিববর্ষের লোগো থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ ইমতি জানান, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রংপুরে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করতে দেওয়া হবে না। নেসকো আজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী লোগো ব্যবহার করেছে, অর্থাৎ তারা আওয়ামী লীগকে প্রমোট করছে। রংপুর নেসকোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এরা দুর্নীতিগ্রস্ত, এদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে বৈষম্যবিরোধীরা প্রস্তুত আছে। 

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল মান্নান, মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব পলাশ কান্তি নাগ, সদস্য খাইরুল ইসলাম বাপ্পি, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, সিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী, এবি পার্টির মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রিজওয়ান রিজুসহ নেসকোর কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

অন্যদিকে মতবিনিময় সভায় যখন হট্টগোল চলছিল, তখন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রিপেইড মিটার স্থাপন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থরক্ষা কমিটি। সমাবেশে ডা.

সৈয়দ মামুন রহমান মামুনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নিম্নমানের প্রিপেইড মিটার কেনার নামে ২৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সেই নিম্নমানের মিটার এখন জনগণকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে নেসকো নিম্নমানের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি মাসে অবৈধভাবে ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করছে। এই মিটার স্থাপন করা হলে গ্রাহকদের অতিরিক্ত চার্জ পরিশোধসহ নানা হয়রানির শিকার হতে হবে। জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে হয়রানিমূলক প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তারা। 

এ ব্যাপারে নেসকো রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মুজিববর্ষের লোগো প্রদর্শনের বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে। তবে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে গ্রাহকদের আপত্তির বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, মতবিনিময় সভায় মুজিববর্ষের লোগো প্রদর্শন ধৃষ্টতার শামিল। নেসকো জেলা প্রশাসনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। সভায় এ ধরনের লোগো প্রদর্শনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন

কনকনে শীত নিয়ে এসেছে হিমেল হাওয়া। ঘরের বাইরে বেরোলেই সেই হাওয়া শরীরে কাঁপন ধরায়। এমন আবহাওয়ার মধ্যে আজ শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতু এলাকায় জড়ো হন বিভিন্ন জেলার ৩৫০ দৌড়বিদ। সেখানে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুরাও। তবে উচ্ছ্বাস প্রকাশে যেন কেউ কারও থেকে কম নয়। হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতেই তাঁদের এই জমায়েত।

আজ সকালে এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটি (বিআরসি)। আয়োজকেরা জানান, চার পর্যায়ের দূরত্বে এই হাফ ম্যারাথন দৌড় হয়। এর মধ্যে ছিল ২ কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার।

আয়োজক, অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সূর্য ওঠার আগেই ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে দৌড়বিদেরা জেলা শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতুর ওপর জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ৬টায় প্রথমে ২১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীরা সেখান থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ৫ ও ১০ কিলোমিটারের দৌড়বিদেরা রওনা দেন। সর্বশেষ সকাল ৭টায় শিশুদের দুই কিলোমিটারের দৌড় শুরু হয়।

২১ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেন ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী একজন। ১০ কিলোমিটারে অংশগ্রহণ করেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬৬ জন ও নারী দুজন। ৫ কিলোমিটারে অংশ নেন ৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী ১০ জন। ২ কিলোমিটার দৌড়ে ৪৩ জন শিশু অংশ নেয়।

দৌড় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী দৌড়বিদের পাশাপাশি ভারত, জাপান, নেপাল ও ডেনমার্কের চারজন অংশ নেন। জেলা শহরের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সংযোগ সড়ক কালীবাড়ি মোড় থেকে বিজয়নগরের নূরপুর জিসি সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া) পথে দৌড়বিদেরা ছড়িয়ে পড়েন। নির্দেশিত পথ ধরে প্রত্যেকে নিজের নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী দৌড় সম্পন্ন করেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মুহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘১০ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছি। ভালো লাগছে। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত হাঁটা ও দৌড়ের বিকল্প নেই।’

দৌড় শেষের ফিনিশিং লাইনে পৌঁছান এক দৌড়বিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন
  • সিকৃবিতে শিবিরের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা