মুজিববর্ষের লোগো থাকা নিয়ে হট্টগোলে নেসকোর সভা পণ্ড
Published: 13th, January 2025 GMT
রংপুরে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) মতবিনিময় সভার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মুজিববর্ষের লোগো প্রদর্শন করায় হট্টগোল হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা ওই সভা বর্জন করায় জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে সভা স্থগিত ঘোষণা করেন। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, প্রিপেইড মিটার স্থাপন ইস্যুতে নেসকোর সঙ্গে গ্রাহক ও সংশ্লিষ্টদের মতবিনিময় সভা আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সভা শুরু হলে নেসকো কর্মকর্তারা কিছু পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করেন। তবে এতে মুজিববর্ষের লোগো থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ ইমতি জানান, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রংপুরে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করতে দেওয়া হবে না। নেসকো আজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী লোগো ব্যবহার করেছে, অর্থাৎ তারা আওয়ামী লীগকে প্রমোট করছে। রংপুর নেসকোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এরা দুর্নীতিগ্রস্ত, এদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে বৈষম্যবিরোধীরা প্রস্তুত আছে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল মান্নান, মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব পলাশ কান্তি নাগ, সদস্য খাইরুল ইসলাম বাপ্পি, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, সিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী, এবি পার্টির মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রিজওয়ান রিজুসহ নেসকোর কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে মতবিনিময় সভায় যখন হট্টগোল চলছিল, তখন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রিপেইড মিটার স্থাপন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থরক্ষা কমিটি। সমাবেশে ডা.
এ ব্যাপারে নেসকো রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মুজিববর্ষের লোগো প্রদর্শনের বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে। তবে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে গ্রাহকদের আপত্তির বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, মতবিনিময় সভায় মুজিববর্ষের লোগো প্রদর্শন ধৃষ্টতার শামিল। নেসকো জেলা প্রশাসনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। সভায় এ ধরনের লোগো প্রদর্শনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কস অলরাউন্ডার: ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরসহ ৯ জেলায় কবে কোথায় প্রতিযোগিতা
বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে এখন চলছে প্রতিভার উচ্ছ্বাস ‘মার্কস অলরাউন্ডার’। ‘দেখাও যত প্রতিভা তোমার’ স্লোগানে আয়োজিত দেশের অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্মটি শিশু-কিশোরদের নিজেদের সম্ভাবনা প্রকাশের মঞ্চ হয়ে উঠেছে। বরাবরের মতো এবারের আয়োজনটিও পাচ্ছে দর্শক ও অংশগ্রহণকারীদের দারুণ সাড়া। প্রতিযোগিতাটি তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে—আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে। এরই মধ্যে অনেক স্থানে প্রতিযোগিতার আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্র ও শনিবার (৭ ও ৮ নভেম্বর) ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঠাকুরগাঁও, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী ও পঞ্চগড় অঞ্চলের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। নিম্নলিখিত প্রতিটি ভেন্যুতে সকাল আটটা থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা।
তারিখ: ৭ নভেম্বর, শুক্রবার
ভেন্যু: কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া সদর, কুষ্টিয়া।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা।
ভেন্যু: কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, হাসপাতাল রোড, দিনাজপুর সদর, দিনাজপুর।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলা।
ভেন্যু: ময়মনসিংহ সরকারি কলেজ, আকুয়া, ময়মনসিংহ।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: ময়মনসিংহ সদরের একাংশ (আকুয়া, সানকিপাড়া, কলেজ রোড, কাচিঝুলি, পুলিশ লাইনস, নয়াপাড়া, মাসকান্দা, দিগারকান্দা ও সুতিয়াখালী), মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, ত্রিশাল, ভালুকা ও গফরগাঁও থানা।
তারিখ: ৮ নভেম্বর, শনিবার
ভেন্যু: ঝিনাইদহ নিউ একাডেমি স্কুল, ঝিনাইদহ সদর, ঝিনাইদহ।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা।
ভেন্যু: ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, ময়মনসিংহ।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: ময়মনসিংহ সদরের একাংশ (টাউন হল, কাচারি, চরপাড়া, ব্রিজ মোড়, গাঙ্গিনাপাড়, পণ্ডিতপাড়া, মেছোয়া বাজার, ছোট বাজার ও বড় বাজার), গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, তারাকান্দা, ফুলপুর, হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া থানা।
ভেন্যু: নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, পিটিআই রোড, নীলফামারী সদর, নীলফামারী।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলা।
প্রতিযোগিতার গ্রুপ ও বিষয়—প্লে থেকে চতুর্থ শ্রেণি—জুনিয়র স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, গল্প বলা); পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি—মিডল স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা) এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি—হাইস্কুল ও কলেজ (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা।)
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, যশোর, মাগুরা, নোয়াখালী, ফেনী, সিলেট, নাটোর, পাবনা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, খুলনা, বাগেরহাট, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, টাঙ্গাইল, লালমনিরহাট, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, জামালপুর, শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ১০০টি স্থানে আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ (প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
পুরস্কারমার্কস অলরাউন্ডারে তিনটি গ্রুপ থেকে সেরা তিন অলরাউন্ডারের প্রত্যেকে পাবে ১৫ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। আর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবে মোট এক কোটি টাকার বেশি উপহার ও শিক্ষাবৃত্তি।
গ্র্যান্ড ফিনালেতে তিনটি গ্রুপের ফার্স্ট রানার্সআপ এবং সেকেন্ড রানার্সআপের প্রত্যেকে পাবে পাঁচ লাখ এবং তিন লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। তিনটি গ্রুপের ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে সেরা ৩ জন করে মোট ৫৪ জন সেরা পারফরমারের প্রত্যেকে পাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবে একটি করে কম্পিউটার।
আয়োজকদের মতে, মার্কস অলরাউন্ডার শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের প্রতিভা, মেধা, সংস্কৃতি ও আত্মবিশ্বাস বিকাশের একটি অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্ম। আঞ্চলিক থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত এই আয়োজন অংশগ্রহণকারীদের জন্য হয়ে উঠেছে শেখার, নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার এবং ভবিষ্যতের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
বিস্তারিত জানতে এবং রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করতে হবে। ফোন করা যাবে (সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা) ০৯৬১৪৫১৬১৭১ নম্বরে।