মানুষকে যথাযথভাবে না জানিয়েই সঞ্চয়পত্র বিক্রির কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সরকার। মুনাফাও বিতরণ হচ্ছে না কোনো কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে। সঞ্চয়পত্রের ওয়েবভিত্তিক পদ্ধতির সার্ভার বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। সার্ভার বন্ধ থাকার কারণ হিসেবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, অনলাইন পদ্ধতির উন্নয়নের (আপগ্রেডেশন) কাজ শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এ কারণে সার্ভার বন্ধ রয়েছে।

সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়াতে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ চিঠি পাঠিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। যদিও আইআরডি এখনো কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি।

তবে বিক্রি বন্ধ নিয়ে ওই দিনই জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর তাদের নোটিশ বোর্ডে দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। অধিদপ্তর বলেছে, জাতীয় সঞ্চয় অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উন্নয়নের কাজ চলছে বলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে অর্থ পরিশোধ, অর্থাৎ পেমেন্ট–বিষয়ক অন্যান্য কার্যক্রম চলমান।

সঞ্চয়পত্রের অনলাইন কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৯ সালের ১ জুলাই। বর্তমানে অর্থ বিভাগের স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট, প্রোগ্রাম টু এনাবল সার্ভিস ডেলিভারির (এসপিএফএমএস) মাধ্যমে এটির কার্যক্রম চলছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার নাগাদ সার্ভার ঠিক হয়ে যাবে এবং সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকেরা স্বাভাবিক সেবা পাবেন। গতকাল সোমবার সার্ভার বন্ধ থাকার একটি নোটিশও ঝোলানো রয়েছে এসপিএফএমএসের কার্যালয়ে।

জানতে চাইলে অর্থসচিব মো.

খায়েরুজ্জামান মজুমদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দু–এক দিনের মধ্যে সেবাটি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে গিয়ে সোমবার কয়েকজন গ্রাহক বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক থেকে ফেরত এসেছেন বলে প্রথম আলোকে জানান। মহিবুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরিবর্তে সরকার যদি সার্ভার বন্ধের বিষয়টি পত্রিকায় ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচার করত, তাহলে বিষয়টা সহজে আমরা জানতে পারতাম। কাজটা অর্থ বিভাগও করতে পারত, আবার সঞ্চয় অধিদপ্তরও করতে পারত। অধিদপ্তর দায়সারা একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্রেতাদের ভোগান্তিতে ফেলেছে।’

এ বিষয়ে সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জাকিয়া খানমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সংস্থাটির পরিচালক মোহাম্মদ শরীফুল ইসলামও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দুই উপদেষ্টার গড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।

বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে গতিরোধ করা, সরকারি কাজে বাধা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে রোববার রাতে গোয়ানঘাট থানায় ১৫০ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন থানার এসআই ওবায়েদ উল্লাহ। মামলার পর সোমবার ভোরে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- মামলার ৬নং আসামি কালিনগরের দেলোয়ার হোসেন দুলু, মোহাম্মদপুরের শাহজাহান মিয়া ও ছৈলাখেল অষ্টম খন্ডের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ।

শনিবার সকালে জাফলং এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তারা ফেরার পথে জাফলং পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিএনপির সংগঠনের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার আটকে নানান স্লোগানে বিক্ষোভ করা হয়। ঘটনার পর গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে বহিষ্কার ও জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি আজির উদ্দিনকে শোকজ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সমকালকে জানান, গতকাল রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদ্য বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে। দ্বিতীয় আসামি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সোহেল আহমদ, ওমর ফারুক, সুমন শিকদার, দেলোয়ার হোসেন দুলু, আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ