মাদকরাজ্যের গডফাদার ফারুকের ভাঙা হাট
Published: 14th, January 2025 GMT
মাদকের গডফাদার হিসেবে ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তালিকায় সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ফারুক চৌধুরীর নাম আসে। ওই তালিকায় তিনি ছাড়াও স্থান পান গোদাগাড়ী উপজেলার শীর্ষ ১০ মাদক কারবারি। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাবেক এই এমপির সখ্য ছিল। তাদের ছায়া হয়ে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় কারও কাছ থেকে নিয়েছেন গাড়ি উপহার, কারও কাছে বিক্রি করেছেন নিজের মালিকানাধীন বহুতল ভবনের দোকান ও ফ্ল্যাট। এখানেই শেষ নয়। স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়োগ বাণিজ্য, দখলসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা তিনি করেননি। যেখানেই টাকার সন্ধান পেয়েছেন, সেখানেই দুই হাতে লুটেপুটে নিয়েছেন মাদকের এই গডফাদার।
নির্বাচনী হলফনামায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ছিল শূন্য। গত বছর তিনি হলফনামায় শূন্য থেকে নিজ নামে জমা দেখিয়েছেন ৯ কোটি টাকা। আগে নির্ভরশীলদের নামে কিছু না থাকলেও হঠাৎ বেড়ে হয়েছে ৬০ বিঘা জমি। এর সঙ্গে নতুন করে নিজের আরও ৬০ বিঘা জমি যুক্ত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফারুক চৌধুরী মাদক কারবারিদের গডফাদার হিসেবে কাজ করে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে রয়েছে কয়েকশ কোটি টাকা। একইভাবে তাঁর সাহচর্যে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন সাঙ্গোপাঙ্গ ও সিন্ডিকেটের লোকজন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাদক সাম্রাজ্য ও সম্পদ ফেলে এখন সবাই পলাতক।
মাদক কারবারে বাড়ি-গাড়ি, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা
গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য। গোদাগাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি শান্ত কুমার মজুমদার বলেন, মাদক মানেই গোদাগাড়ী। হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল এখানে খুব চলছে। ৫ আগস্টের পর থেকে কারবারিদের স্বর্গরাজ্য হয়েছে। ওমর ফারুক চৌধুরী ১৬ বছর এমপি ছিলেন। তিনি ভদ্র লোকের বাড়িতে না গিয়ে দাওয়াত খেতেন হেরোইন ব্যবসায়ীর বাড়িতে, আবার তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম বরজাহান আলী পিন্টু বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা বড় বড় গাড়ি নিয়ে এমপি ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে থাকত। তারা কখনও মাইক্রোবাস উপহার দিত, কখনও মোটরসাইকেল। ফারুক চৌধুরীর থিম ওমর প্লাজায় গিয়ে খোঁজ নেবেন– সেখানে যত ফ্ল্যাট ও দোকান বিক্রি হয়েছে, তার সিংহভাগ কিনেছে গোদাগাড়ীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরাই।
স্থানীয়রা জানান, দেশের হেরোইন কারবারিদের সবচেয়ে বড় রুট গোদাগাড়ী উপজেলা। শুধু এই উপজেলায় রয়েছে কয়েক শত হেরোইন ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে ভূমিহীন, দিনমজুর, বাসের হেলপার থেকে মাদক কারবারি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন শতাধিক। ২০১৮ সালে বিশেষ অভিযানে তারা পালিয়ে যান। নির্বাচনে আবারও ফারুক চৌধুরী এমপি হলে বীরদর্পে বেরিয়ে আসেন আগের ব্যবসায়। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তাদের অনেকেই ফের আত্মগোপনে চলে গেছেন।
এখনও পলাতক থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ কারবারি আবদুর রহিম টিপু, তাঁর ভাই পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ও সোহেল রানা। মাদক কারবারি পৌর যুবলীগ সভাপতি আবদুল জব্বার, নাসির উদ্দীন ওরফে নয়ন ডাক্তার, শীর্ষ মাদক কারবারি ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আসাদুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ওরফে দারোগা পলাতক রয়েছেন। আরেক শীর্ষ মাদক কারবারি ইয়াবা ডিলার রুমেল বিশ্বাস ও ইউপি সদস্য শীর্ষ মাদক কারবারি সেতাবুর রহমান বাবু কিছুদিন আগে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। মাটিকাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহেল রানা শীর্ষ মাদক কারবারি হলেও তিনি অনেকটা আত্মগোপনের মতো করে এলাকায় থেকেই মাদক কারবার করছেন।
গত ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে যাওয়া গোদাগাড়ীর যুবলীগ নেতা আবদুর রহিম টিপু। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় শীর্ষ হেরোইন ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে ১০ নম্বরে। ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে এমপি ওমর ফারুককে তিনি একটি হাইয়েস গাড়ি উপহার দিয়ে আলোচনায় আসেন। এমপিকে তিনি ‘মামা’ বলে ডাকেন। বিপুল সম্পদের মালিক এই শীর্ষ মাদক কারবারিকে আশ্রয় ও অনৈতিক সুবিধা দিতেন। বিনিময়ে নিউমার্কেটে এমপির থিম ওমর প্লাজায় প্রায় ২ কোটি টাকায় তিনটি দোকান কেনেন টিপু। তাঁর চার ভাই গোদাগাড়ী পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, মাসুদ রানা ও সোহেল রানাও মাদক ব্যবসায়ী।
এ ছাড়া মাদারপুরের মো.
রেলগেট বাইপাসের মজিবুর ড্রাইভারের ছেলে বাসের হেলপার সোহেল রানা এখন শতকোটি টাকার মালিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় তাঁর নাম ৮ নম্বরে। শহরে গড়েছেন দুটি বাড়ি ও রয়েছে একাধিক দোকান। ওমর প্লাজায়ও কিনেছেন দোকান-অ্যাপার্টমেন্ট। ২০২১ সালে মাদকের টাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে তিনি হয়েছেন মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তাঁর সঙ্গে ফারুক চৌধুরী ও রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের রয়েছে লেনদেনের সম্পর্ক।
এই তালিকার ২ নম্বরে আছেন নওশাদ আলী জামায়াতি। তিনি আগে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগ দেন। তাঁর দুই ছেলে জাহাঙ্গীর, আলমগীর মাদকসহ একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। নওশাদ আলী মূলত মাদক নিরাময় কেন্দ্র খুলে আড়ালে ব্যবসা করতেন। ভিন্ন দলের হলেও ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ তিনি। শুধু তারাই নন, এ রকম শতাধিক সম্পাদশালী মাদক কারবারি সাবেক এমপির ঘনিষ্ঠ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ৫ নম্বরে ছিলেন নজিবুর রহমান। এই তালিকার ৯ নম্বরে থাকা মাটিকাটা ইউপির সাবেক সদস্য সেতাবুর রহমান বাবুর বাড়িতেও অনুসারীদের নিয়ে একাধিকবার দাওয়াত খেয়েছেন ফারুক চৌধুরী। কয়েক মাস আগে সেতাবুর হেরোইনসহ আটক হয়ে এখন কারাগারে। তাদের মতোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ হেরোইন ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবি, সেলিম, হযরত আলী, তোফাজ্জল, শীষ মোহাম্মদ এবং হায়দার আলী প্রশ্রয় পেতে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর থিম ওমর প্লাজায় কেউ দোকান, কেউ আবাসিক ফ্ল্যাট কিনেছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এসব শীর্ষ মাদক কারবারি ফারুক চৌধুরীকে মাসে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মাসোহারা দিতেন। শুধু মাদক কারবারিদের কাছ থেকেই মাসে কয়েক কোটি টাকা পেতেন। ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে মাদক কারবারিদের মধ্যস্থতা করে দিতেন গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কাউসার মাসুম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হামিদ রানা এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাদক কারবারি মনিরুল ইসলাম। মনিরুল ও তাঁর ভাই টিপু নিজেদের ফারুক চৌধুরীর ভাগনে পরিচয় দিতেন।
রাজশাহী শহরের থিম ওমর প্লাজার পাশেই ছিল ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়। এখানে রাত ১১টার পর নেতাকর্মীকে বের করে মাদক কারবারিদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা যুবদল সভাপতি মাহবুবুর রহমান বিপ্লব বলেন, ১৬ বছর ধরে ফারুক চৌধুরীর গাড়িবহরে এই শীর্ষ মাদক কারবারিরাই ছিলেন। তালিকাভুক্ত সব কারবারি তাঁর সঙ্গেই থাকতেন। ফলে এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে ভয় পেত।
শতকোটি টাকার নিয়োগ ও ঘুষ বাণিজ্য
২০০৯ সালে প্রথমবার এমপি হয়ে স্কুল ও কলেজে একজন করে অপারেটর নিয়োগ দিয়ে বাণিজ্য শুরু করেন ফারুক চৌধুরী। তানোরে যুবলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না, গোদাগাড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদের মাধ্যমে এ নিয়োগ বাণিজ্য করতেন। তবে ২০২০ সালে এসে তানোরে সব নিয়োগ বাণিজ্যে যুক্ত হন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সুজন।
প্রতিটি স্কুল-কলেজে শিক্ষক, আয়া, মালী, পিয়ন নিয়োগ দেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতি। প্রতি পদে ১০ থেকে ১৫ লাখ করে টাকা নিতেন। প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগে নিতেন ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এই নিয়োগ বাণিজ্য করেই ফারুক চৌধুরী ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছেন।
একই সময়ে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপে তানোর উপজেলায় ৫০০ জন এবং গোদাগাড়ীতে ৫০০ গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ দেন। প্রতিবছর জনপ্রতি ১ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগের তালিকা সরবরাহ করতেন কর্তৃপক্ষের কাছে। গত ১৫ বছর ধরে শুধু অপারেটর নিয়োগ দিয়েই প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টাকা করে হাতিয়ে নিতেন।
এমনকি সংসদীয় আসনের হাট-ঘাট সব জায়গা থেকেই টাকা খেয়েছেন তিনি। নামমাত্র মূল্যে তাঁর হয়ে এসব হাট নিয়ে কোটি টাকা আয় করতেন সুজন। এসব কাজে তাঁর আরেক সহযোগী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন।
গোদাগাড়ী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আবদুর রহমান বলেন, গোদাগাড়ী কলেজ সরকারি করার নামে ফারুক চৌধুরী আমার কাছে ১ কোটি টাকা ঘুষ চান। শিক্ষকদের কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা তুলে দিই। বাকি ৩৫ লাখ টাকার জন্য কলেজে এসে ইউএনও, ওসি, শিক্ষকসহ কয়েকশ মানুষের সামনে আমাকে পিটিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখেন। আমাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও যেতে দেননি।
টিআর-কাবিখা প্রকল্পে আত্মসাৎ
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১৬ সালের পর থেকে টিআর, কাবিখা পুরোটাই ঢাকায় বিক্রি করে দিতেন ফারুক চৌধুরী। এ কারণে এলাকায় কোনো কাজ হতো না। আপত্তি করায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ইউএনও অফিসে ডেকে লাথি মারেন তিনি। ২০২১ সালে এডিপির দেড় কোটি টাকা কাজ ছাড়াই তুলে নেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। তবে ভাউচারে সই করবেন না বলায় তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে জুতা দিয়ে পেটান।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন থেকেই সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরী আত্মগোপনে। এসব বিষয়ে তাঁর নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টও নিষ্ক্রিয় দেখা যায়। তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আবুল হায়াতের নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। সাবেক প্রতিমন্ত্রীর থিম ওমর প্লাজায় গিয়ে প্রধান নিরাপত্তারক্ষী জোবায়ের হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফারুক চৌধুরী পরিবার নিয়ে এখানেই বসবাস করতেন। গত ৫ আগস্টের পর পরিবারসহ তিনি চলে গেছেন। আর আসেননি।’
গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, ফারুক চৌধুরীর নামে ৫ আগস্টের পর থানায় মামলা হয়েছে। তিনি পলাতক। তাঁর মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম সমকালকে বলেন, তাঁর নামে মাদক কারবারের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর এত অর্থের উৎস কী, সে বিষয়েও তদন্ত করে দেখা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, শনাক্ত ২৫
গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে এক জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৫০৪ জনে দাঁড়াল।
অন্যদিকে গত একদিনে সারা দেশে ২৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের দেহে প্রাণঘাতী করোনা শনাক্ত হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে এখনো করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়নি
এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে থাকবে মেডিকেল টিম
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে করোনায় এক জন মারা গেছেন। এই সময়ে ঢাকায় ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জনের দেহে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। পাশাপাশি গত এক দিনে চট্টগ্রাম বিভাগে ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এছাড়া কক্সবাজারে ১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় একজন, রাজশাহীতে ৩১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯ জন ও সিলেটে ৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় এক জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৫৭ লাখ ২৭ হাজার ৪৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ লাখ ৫১ হাজার ৮৫৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৮২ শতাংশ। এছাড়া শনাক্ত বিবেচনায় ভাইরাসটিতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৫০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা/সাইফ