ঠাকুরগাঁওয়ে মাত্র ২ টাকা কেজিতে শীতকালীন সবজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে যাওয়ায় চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতা কম থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জেলার পাইকারি বাজার গোবিন্দনগর কাঁচামালের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৮০ টাকায় আর বাঁধাকপি ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। দাম কমে যাওয়ায় অনেক জমিতে ফুলকপি পঁচে নষ্ট হচ্ছে।

ঠাঁকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলাজুড়ে এ বছর ৯ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে।

আরো পড়ুন:

কচু লতিতে ভাগ্য ফিরলো বরুড়াবাসীর

শীতকালীন সবজিতে ধামরাইয়ের কৃষকদের মুখে হাসি

সরেজমিন দেখা যায়, অনেক চাষি ক্ষেত থেকে ফুলকপি তুললেও অনেকের ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। বাজারে প্রচুর ফুলকপি থাকলেও কেনার মতো তেমন ক্রেতা নেই। দাম কম হওয়ায় অনেকে গবাদি পশুর খাওয়ানোর জন্য ফুলকপি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলায রবিশস্যের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তেমন লাভবান হচ্ছে না। নামমাত্র মূল্যে তারা উৎপাদিত ফসল বিক্রি করলেও ভোক্তারা সেই পণ্য কয়েকগুণ দামে কিনছে। এতে চাষি এবং ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাঝখান থেকে লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কৃষক প্রতি কেজি ফুলকপি দুই টাকায় বিক্রি করলেও স্থানীয় খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকায়।

ঠাকুরগাঁও কাঁচামালের আড়তে আসা কৃষক সাকিব রাজা বলেন, ‘‘আজকে ফুলকপি বেচলাম ২ টাকা কেজি। যে দামে বিক্রি হলো, এতে কি খরচ উঠবে? অনেক আশা নিয়ে ফসল ফলায় কিন্তু শেষে এসে হতাশ হতে হয়।’’

ফুলকপি কৃষক মেহেদী জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছেন। এক বিঘায় পাতা কপি। তবে বাজারে যে দাম, তাতে ফুলকপি তোলার খরচ উঠাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

খুচরা বাজারের ক্রেতা আবু সালেহ বলেন, ‘‘শুনেছি ফুলকপি অনেক সস্তা যাচ্ছে। তবে খাবার জন্যে ফুলকপি কিনতে এসে দেখছি ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি। তাহলে দাম কম কোথায়?’’ 

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আলমগীর কবির জানান, জেলায় ফুলকপি লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি আবাদ হয়েছে। বাজারে চাহিদার চাইতে জোগান বেশি, তাই দাম কম।

তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে সবজির আবাদ অনেক বেশি। এ অঞ্চলে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে সবজি সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা হলে এ সমস্যা থেকে উতরানো সম্ভব।
 

ঢাকা/হিমেল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ