দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন, লাইব্রেরি থেকে বঙ্গবন্ধু কর্নার বাতিল, হলের নাম পরিবর্তনসহ ৩২ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রশিবির। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে বাকৃবি প্রশাসনের কাছে তারা এসব দাবি তুলে ধরেন। শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

বিজ্ঞাপ্তিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম সংক্রান্ত, হল সংক্রান্ত, ফ্যাসিবাদের মূলোচ্ছেদ সংক্রান্ত, পরিবহন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত, লাইব্রেরি সংক্রান্ত এবং বিবিধ বিষয়ে দাবি উত্থাপন করা হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অসংখ্য শহীদের রক্তে অর্জিত এ স্বাধীন দেশে শিক্ষার্থীদের অধিকার, বাকস্বাধীনতা, দুর্নীতি ও শিক্ষকদের রোষানলমুক্ত একটি ক্যাম্পাস উপহার দেবে বাকৃবি নতুন প্রশাসন, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। শিক্ষার মানোন্নয়ন, মেধাবীদের মূল্যায়নসহ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা সম্ভব। ফ্যাসিবাদের আমলে নিয়মে পরিণত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অন্যায় এবং অনিয়মের ইতি টানার সময় এসেছে। এজন্য বাকৃবি শাখার পক্ষ থেকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে ধারণ করে ৩২ দফা দাবি উত্থাপন করা হলো।

দাবিগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম আধুনিকায়ন করে সকল কার্যক্রম অনলাইনে নিয়ে এসে প্রশাসনিক জটিলতা ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ দূর করতে হবে; যেসব বিভাগে একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য ল্যাপটপ প্রয়োজন, তা ক্রয়ের জন্য শিক্ষা ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে; শিক্ষার্থীদের জন্য যৌক্তিক স্টাইপেন্ড নিশ্চিত করতে হবে; ক্লাসরুম ও ল্যাবের সংকট নিরসন করতে হবে; সেশনজট নিরসনের জন্য কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে; মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে; ফ্যাসিবাদের আমলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বৈষম্যের শিকার প্রার্থীদের মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে; হেলথকেয়ার থেকে সার্বক্ষণিক, দ্রুত ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং ভালো মানের ঔষধ সরবরাহ করতে হবে।

অন্য দাবিগুলো হলো- অবৈধ উপায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ ডাক্তারদের অপসারণ করে মেধাবী ও বিভাগভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে; গত ১৫ বছরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে নিয়োগ বাণিজ্যের খবর সাপেক্ষে উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করে অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী নিয়োগগুলো দ্রুত বাতিল করতে হবে; হল পরিচালনা, সিট বন্টনসহ সব ধরনের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যাতে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে; নারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রথম বর্ষ থেকেই আবাসিকতা দিতে হবে; আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং, ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের যথাযথ মান নিশ্চিত করতে হবে এবং উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভর্তুকি দিতে হবে; হলে সার্বিক কার্যক্রমে প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের সক্রিয় ভূমিকা থাকতে হবে।

এছাড়া তারা ফ্যাসিবাদের দোসরদের ব্যবস্থা গ্রহণ; রাজনৈতিক ও ধর্মীয়সহ নানাভাবে নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ; শেখ মুজিব, শেখ ফজিলাতুন্নেছা ও রোজী জামাল এর নামে করা হলের পুনরায় নামকরণ করতে হবে। 

ক্যাম্পাসে জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি রক্ষার্থে স্থাপনা তৈরি ও নামকরণ ছাড়াও দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকা মাদক ও অস্ত্রমুক্ত, পরিবহনের রুট বৃদ্ধি ও প্রয়োজনে নতুন বাসের ব্যবস্থা, রাস্তাগুলো সংস্কার, নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সিসি ক্যামেরা ও পুলিশবক্স স্থাপন, লাইব্রেরির আধুনিকায়নসহ বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি দাবি জানানো হয়।

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করবেন মির্জা আব্বাস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তালিকা প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন:

যে আসন থেকে লড়বেন তারেক রহমান

২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, ৩টি আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া

এর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে দলীয় প্রার্থীদের প্রাথমিক নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।

এ সময় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভ্যাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচন পেতে যাচ্ছি। সেই নির্বাচন প্রায় ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা দেওয়া হচ্ছে। আর যেসব আসনে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে, সেটি বিএনপি সমন্বয় করে নেবে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দিনাজপুর-৩ থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসন থেকেও লড়বেন তিনি।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ