জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার অন্যতম আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গতকাল বৃহস্পতিবার ‘অ্যাপ্রুভার’ হয়েছেন। বাংলায় যাকে বলে ‘রাজসাক্ষী’। এই প্রেক্ষাপটে রাজসাক্ষী কে, আসামি কীভাবে রাজসাক্ষী হন, এই প্রক্রিয়ার শর্ত কী—এসব বিষয় আলোচনায় এসেছে।

একজন অপরাধী, যিনি অপরাধের দায় স্বীকার করেন, অপরাধ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ সত্য তথ্য আদালতের কাছে প্রকাশ করেন, অন্য যাঁরা অপরাধী, তাঁদের অপরাধেরও বিবরণ দেন, তখন আদালত এই অপরাধীকে ক্ষমা করতে পারেন। এই ব্যক্তিকেই রাজসাক্ষী বলে।

রাজসাক্ষীর বিষয়ে প্রখ্যাত আইনবিদ গাজী শামসুর রহমান ফৌজদারি কার্যবিধির ভাষ্য গ্রন্থে লিখেছেন, গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কোনো ব্যক্তিকে ক্ষমা করতে পারেন ম্যাজিস্ট্রেট। যে ব্যক্তি ক্ষমা পান, তাঁকে রাজসাক্ষী বলে। যাঁকে রাজসাক্ষী করা হয়, তাঁকে কঠিন শর্ত দেওয়া হয়। এই ব্যক্তি প্রতিশ্রুতি দেন যে, অপরাধের ব্যাপারে তাঁর যতটুকু জ্ঞান আছে, ততটুকু তিনি পুরোপুরি সততার সঙ্গে প্রকাশ করবেন। তাঁর সঙ্গে যাঁরা অপরাধে জড়িত ছিলেন, তাঁদের কথাও তিনি অকুণ্ঠভাবে বলবেন।

রাজসাক্ষীর ব্যাপারে ফৌজদারি আইনজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজসাক্ষী তিনিই, যিনি একজন অপরাধী। তাঁকে আদালতের কাছে অপরাধের দায় স্বীকার করতে হয়। একই সঙ্গে তাঁর সঙ্গে যাঁরা অপরাধে জড়িত ছিলেন, তাঁদের অপরাধের পূর্ণাঙ্গ বিবরণও দেবেন। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেই রাজসাক্ষীকে আটক রাখতে হয়।’

কে রাজসাক্ষী হবেন

ফৌজদারির অপরাধের বিচার হয় ফৌজদারি কার্যবিধি, দণ্ডবিধিসহ অন্যান্য ফৌজদারি বিধান অনুযায়ী। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭,৩৩৮ ও ৩৩৯ ধারায় রাজসাক্ষী কে হবেন, রাজসাক্ষীকে ক্ষমা করা ও বিচার পদ্ধতির বিষয় বর্ণনা আছে। অন্যদিকে ‘অ্যাপ্রুভার’–এর ক্ষমা-সংক্রান্ত বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৫ ধারায় আছে।

রাজসাক্ষীর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রসিকিউটোরিয়াল উপদেষ্টা এহসানুল হক সমাজী প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭ ধারার বর্ণনা অনুসারে রাজসাক্ষী বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝায়, যিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, কিন্তু ক্ষমা পাওয়ার শর্তে অপরাধের সমগ্র ঘটনা, মূল অপরাধী ও সহায়তাকারী হিসেবে জড়িত সব অপরাধীর সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও সত্য ঘটনা প্রকাশ করে আদালতে সাক্ষ্য দেন।

রাজসাক্ষী ঘোষণার প্রক্রিয়া নিয়ে ফৌজদারি আইনজ্ঞ এহসানুল হক সমাজী বলেন, প্রথমে আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাজসাক্ষী হিসেবে ঘোষণা করেন। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে রাখা হয়, যাতে অন্য কেউ তাঁকে প্রভাবিত করতে না পারেন। আদালত তাঁকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করার প্রস্তাব দেন, তখন রাজসাক্ষী হিসেবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭ ধারার ভাষ্য হলো, কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট অপরাধ তদন্ত, অনুসন্ধান বা বিচারের যেকোনো পর্যায়ে অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বা সে সম্পর্কে সাক্ষ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তিকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করার প্রস্তাব দিতে পারেন। শর্ত হলো, তাঁর জানামতে অপরাধ সম্পর্কিত সামগ্রিক অবস্থা ও অপরাধ সংঘটনের ব্যাপারে মূল অপরাধী বা সহায়তাকারী হিসেবে জড়িত প্রত্যেকের সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও সত্য ঘটনা প্রকাশ করলেই তাঁকে ক্ষমা করা হবে।

আর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৮ ধারা অনুযায়ী, রায় দেওয়ার আগে যেকোনো সময় যে দায়রা আদালত মামলার বিচার করেছেন, তিনি বিচারকালে সংশ্লিষ্ট অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তির সাক্ষ্য নেওয়ার শর্তে তাঁকে ক্ষমা করার আদেশ দিতে পারেন।

শর্তভঙ্গ করলে যা হবে

রাজসাক্ষী ক্ষমা পাওয়ার শর্তেই নিজের অপরাধ এবং অন্য অপরাধীদের অপরাধের বিবরণ দেবেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় চারজন ফৌজদারি আইনজীবী প্রথম আলোকে বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, কোনো রাজসাক্ষী যদি নিজের অপরাধ ও অন্য অপরাধীদের ব্যাপারে সত্য গোপন করেন কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দেন, তখন তিনি রাজসাক্ষী থেকে আবার আসামি হয়ে যান।

প্রখ্যাত আইনবিদ গাজী শামসুর রহমান তাঁর ফৌজদারি কার্যবিধির ভাষ্য গ্রন্থে লিখেছেন, রাজসাক্ষীর জবানবন্দি যদি বিশেষ পর্যায়ে অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হয়, তখন এই রাজসাক্ষ্যের ভিত্তিতে অন্য আসামিদের দণ্ড দেওয়া যায়। সরকারি কৌঁসুলি যদি দেখতে পান, ক্ষমাপ্রাপ্ত রাজসাক্ষী সত্য গোপন করেছেন কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাহলে সেই পরিস্থিতিতে রাজসাক্ষীকে আসামি হিসেবে গণ্য করার জন্য তিনি প্রত্যয়ন করতে পারেন। অর্থাৎ, রাজসাক্ষী যদি তাঁর সত্য প্রকাশের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন, তখন তিনি আর রাজসাক্ষী থাকেন না। তিনি হয়ে যান আসামি। অবশ্য অন্য আসামিদের সঙ্গে তাঁর একত্রে বিচার চলে না।

আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘একজন সহঅপরাধী অন্য সহযোগী অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পারেন। তাঁর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করা বৈধ, এমনকি সেই সাক্ষ্য যদি অসমর্থিত সাক্ষ্যও হয়। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের অনেকগুলো সিদ্ধান্ত রয়েছে।’

সাক্ষ্য আইনের ১৩৩ ধারায় দুষ্কর্মের সহযোগীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে সাজা দেওয়ার বিষয়ে বর্ণনা আছে। এই ধারা অনুযায়ী, দুষ্কর্মের সহযোগী আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার উপযুক্ত ব্যক্তি বলে গণ্য হবেন। দুষ্কর্মের সহযোগীর অসমর্থিত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামিকে সাজা দেওয়া হলে কেবলমাত্র সে কারণে সাজা বেআইনি বলে গণ্য হবে না।

রাজসাক্ষী কখন আসামি হিসেবে গণ্য হবেন, সে ব্যাপারে এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘রাজসাক্ষী আদালতে সাক্ষী হিসেবে গণ্য হন যদি তিনি শর্ত পালন করেন। সে ক্ষেত্রে আদালত তাঁকে খালাস দিতে পারেন। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করলে রাজসাক্ষী আর সাক্ষী থাকেন না। বরং আসামিতে পরিণত হন। রাজসাক্ষী যদি মিথ্যা সাক্ষ্য দেন বা তথ্য গোপন করেন, তাহলে তাঁর শাস্তি হতে পারে।’

ট্রাইব্যুনাল আইনে কী আছে

আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর ১৫ ধারায় ‘অ্যাপ্রুভার’ বিষয়ে বলা আছে।

১৫ ধারা অনুযায়ী, বিচারের যেকোনো পর্যায়ে একটি ট্রাইব্যুনাল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যেকোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত বা গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো ব্যক্তির প্রমাণ পাওয়ার লক্ষ্যে এ ধরনের ব্যক্তিকে অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত তাঁর জ্ঞানের মধ্যে সমস্ত পরিস্থিতির সম্পূর্ণ ও সত্য প্রকাশ করার শর্তে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তির কাছে ক্ষমা করার শর্তে, ওই ব্যক্তিকে বিচারে সাক্ষী হিসেবে পরীক্ষা করা হবে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে হেফাজতে আটক রাখা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, একজন অপরাধী, যিনি নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করেন, পাশাপাশি অন্য সব অপরাধীদের সম্পর্কে বিস্তারিত সত্য তথ্য প্রকাশ করেন, তখন তিনি ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচিত হন। অর্থাৎ, ট্রাইব্যুনালের কাছে নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করতে হবে। অন্য অপরাধীদেরও অপরাধের তথ্য প্রকাশ করতে হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন আইনজীবী শিশির মনির বলেন, তিনি (মামুন) ট্রাইব্যুনালে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন। এখন প্রকাশ্য আদালতে তাঁর সাক্ষ্য নেবেন ট্রাইব্যুনাল। তিনিই প্রথম আসামি, যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, রাজসাক্ষী কে হবেন, সেটি ‘মাদার ল’ বা মূল আইন ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখ রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফৌজদারি কার্যবিধি কিংবা সাক্ষ্য আইন গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ‘অ্যাপ্রুভার’ হওয়া, তাঁর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচার ও দণ্ড দেওয়ার মৌলিক দর্শনটি ফৌজদারি কার্যবিধি থেকেই এসেছে।
রাজসাক্ষী হওয়ায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন কি এই মামলা থেকে অব্যাহতির ব্যাপারে কোনো সুবিধা পাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এটা ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করবেন। আইনে বলা হয়েছে, রাজসাক্ষী হিসেবে তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে যদি ঘটনার সত্য ও সম্পূর্ণ বিষয় উঠে আসে, তখন ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ক্ষমা করতে পারেন বা অন্য কোনো সাজা দিতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার।

রাজসাক্ষীর সংখ্যা হাতেগোনা

উপমহাদেশে নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার সংখ্যা হাতেগোনা বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী শিশির মনির। এ প্রসঙ্গে তিনি দুই দশকের বেশি সময় আগের একটি নজির টানেন। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ সিকদারের দেহরক্ষী নূরে আলম রাজসাক্ষী হয়েছিলেন। এরশাদ সিকদারের সমস্ত কুকর্ম আদালতে প্রকাশ করেছিলেন নূরে আলম। তিনি ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ হত্যা মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ায় মামলা থেকে খালাস পান।

আজিজ হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আমিনুল গনি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুখ্যাত এরশাদ সিকদারের দেহরক্ষী নূরে আলম নিজের অপরাধের দায় আদালতে স্বীকার করেছিলেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়ে অন্য অপরাধীদের অপরাধের সব তথ্য আদালতে প্রকাশ করেছিলেন।’

আরও পড়ুনমানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে ‘রাজসাক্ষী’ হলেন সাবেক আইজিপি মামুন২১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর ধ র দ য় স ব ক র কর ন জ র অপর ধ র দ য় দ র অপর ধ র প রথম আল ক শ শ র মন র য প রক শ অপর ধ স আইনজ ব পর ক ষ অন য য় সহয গ আবদ ল ল আইন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যায় ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলে জসিম মিয়াকে (৪৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। 

আরো পড়ুন:

ভারতীয় ভ্যাকসিন-বীজ বিক্রি করায় ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

শেরপুরে বালু উত্তোলন: ৯ জনকে কারাদণ্ড

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে পাট কাটা নিয়ে লিল মিয়ার (৭৫) সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তার ছেলে জসিম উদ্দিনের। একপর্যায়ে ঘর থেকে কাঠ নিয়ে এসে বাবার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন জসিম উদ্দিন। এতে রক্তাক্ত হয়ে বৃদ্ধ লিল মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জসিম উদ্দিনকে দায়ী করে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। একই বছরের ২৭ আগস্ট একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩২৩ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও যুক্তি-তর্ক শেষে আজ আদালত জসিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন খান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এ রায়ের মাধ্যমে বাদী ন্যায়বিচার পেয়েছেন। 

তবে, আসামিপক্ষের আইনজীবী নাজমুল হক রিটন বলেছেন, এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

ঢাকা/পলাশ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাইকোর্টে রিট করে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন দুই প্রার্থী
  • আসিফ নজরুলের কাছে দুই কোর্ট একত্রে রাখার দাবি জানালেন আনোয়ার প্রধান
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যায় ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড 
  • জুলাই ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘জুলাই যোদ্ধা’কে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা
  • বিএনপি নেতার জামিন নামঞ্জুর, আইনজীবীর উপর হামলার চেষ্টা
  • কালের কণ্ঠের ‘ডিক্লারেশন’ বাতিল চেয়ে সাবেক ১১ কর্মীর রিট
  • কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক চিকিৎসক সাফিয়াকে কেন মুক্তি দেবে না ইসরায়েল