এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
Published: 16th, January 2025 GMT
এনসিটিবির সামনে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে সংক্ষুদ্ধ আদিবাসী ছাত্র ওপর স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামক একটি প্লাটফর্মের সদস্যদের বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, ১৫তম ব্যাচের রাহী নায়েব ও ববি বিশ্বাস আহত হন। এ ঘটনায় তারা শ্রেষ্ঠা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হামলায় আহত শিক্ষার্থী ববি বিশ্বাস বলেন, দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটার মধ্যে পতাকা বেঁধে নিয়ে এসেছিল তারা। সেই পতাকায় বাঁধা লাঠি দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। অধিকারের কথা বলতে গেলে মানুষের হাতে মানুষকে রক্তাক্ত করার সংস্কৃতির অবসান হোক।
আহত রাহী নায়েব বলেন, তারা আগে থেকেই স্টাম্প নিয়ে সেখানে অবস্থান করেছিল। কিন্তু পুলিশ মাঝখান থেকে সরে গিয়ে হামলার সুযোগ করে দিবে, তা আমরা আশা করিনি। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে ফুটেজ থেকে সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব। সরকার যদি তাদের গ্রেপ্তার না করে, তাহলে আমরা বুঝে নেব, এই সরকার কারা পরিচালনা করছে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, একটা নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী যাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি আছে। তাদের আদিবাসী বলে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না এই বলে যে, তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী। এমনকি পাঠ্যবইয়ে তাদের স্বীকৃতি ছিড়ে ফেলা হয়েছে, তাদের সহ্য করাও হচ্ছে না। পাহাড়ে তাদের জমি উৎখাত করা হচ্ছে। আবার এখন সমতলেও তাদের ওপর হামলে পড়া হচ্ছে।
সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম আদিবাসী বিতর্কের অবসানে বাহাসে বসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অনেকে ভাবে আদিবাসী মানে আগে এসেছে। বিষয়টি এমন নয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশের পর যেসব জাতীগোষ্ঠী বৃহত্তর। এর পাশাপাশি নিজস্ব ভাষা, পোশাক, সংস্কৃতি নিয়ে টিকে আছে। তাদের আদিবাসী বলা হয়। এই বিষয়টি বুঝতে না পারার কারণেই এত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি বলেন, যাদের এটি বুঝতে সমস্যা হয়, তাদের মুক্ত বাহাসে আমন্ত্রণ জানাতে চাই যে, আদিবাসী বলতে জাতিসংঘ কী বুঝায়, আমরা কী বুঝাতে চাই; আর তারা কী ধারণা রাখছে। এই বিষয়ের সমাধান হবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে, রাজপথে সহিংসতায় নয়।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক খান, সাইফুল আলম চৌধুরী, কাজলী শেহরীন ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সেলের সদস্য সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র মীর আরশাদুল হক, বিভাগের শিক্ষার্থী নূমান আহমাদ চৌধুরী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমজনতার দল’ শীর্ষ দশে না থাকলে রাজনীতি ছাড়ব: তারেক রহমান
বাংলাদেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জনসমর্থনের দিক থেকে ‘আমজনতার দল’ যদি শীর্ষ ১০ দলের মধ্যে জায়গা না পায়, তবে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সদস্য সচিব তারেক রহমান।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রধান ফটকের সামনে আমরণ অনশনের দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “ইসির কর্মকর্তারা আমাদের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বসার জন্য টুল চেয়েছিলেন। আমরা দিয়েছিলাম, কিন্তু তা তাদের পছন্দ হয়নি। টিনের বেড়ার ঘরও তাদের পছন্দ হয়নি। অথচ আমরা নতুন দল হিসেবে সীমিত সামর্থ্যে কাজ করছি। ইসি যেন আমাদের প্রতিটি বিষয়ে খুঁত ধরছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের নির্দেশেই তাদের দলের নিবন্ধন আটকে দেওয়া হয়েছে। “ইসি বলছে তারা আমাদের চেনে না, কিন্তু দেশের মানুষ চেনে। আমরা শুধু সত্য কথা বলি বলেই আমাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি,” দাবি করেন তিনি।
সরকারের উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তারেক বলেন, “যাদের নির্বাচন না করার কথা ছিল, তারাই এখন নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এমনকি নতুন দল গঠনের চেষ্টাও চলছে, যাতে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়।”
এ সময় তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে বই ছাপানোর নামে কয়েকশ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন।
তিনি আরো বলেন, “আমরা হয়তো বেশি ভোট পাব না, হয়তো জিতবও না; তবুও সীমিত সমর্থন নিয়ে কাজ চালিয়ে যাব।”
অন্য কোনো দলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে তিনি বলেন, “আমরা নিজের দলে থাকব। আমরা ‘ঢেঁকি মার্কা’ প্রতীক চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটিও পাইনি।”
ঢাকা/এএএম/ইভা